সমাজমাধ্যমে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। যাঁরা এই ধরনের বিপাকে পড়েন, তাঁদের প্রায় কেউই ইচ্ছা করে সেগুলি ভাইরাল করেছেন এমনটা নয়। বহু সাবধানি ফোন ব্যবহারকারীকেও এই তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সামান্য কয়েকটা অভ্যাস বদলালেই কিন্তু এই বিপদের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন মুঠোফোনের গ্রাহক। সেগুলির কথাই বলা হল আনন্দবাজার ডট কমের এই প্রতিবেদনে।
হ্যাকার হানায় সর্বস্ব খোয়ানোর ঘটনা দিন দিন বাড়তে থাকায় বর্তমানে অনেকটাই সতর্ক হয়েছেন স্মার্টফোনের ব্যবহারকারীরা। তাঁদের একটা বড় অংশই বিনামূল্যের পাবলিক ওয়াইফাইয়ের দিকে ফিরেও তাকান না। ধীরে ধীরে কমছে ক্লাউডে ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিয়ো রাখার পরিমাণ। এ ছাড়া ফোনে কোনও ম্যালঅয়্যার বা স্পাইঅয়্যার ঢুকেছে কি না, সে দিকেও কড়া নজর রাখছেন বহু গ্রাহক।
কিন্তু, এত সতর্কতা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। পুলিশি তদন্তে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর জন্য দায়ী সম্পর্কের টানাপড়েন। সঙ্গী বা সঙ্গিনী বিশ্বাসভঙ্গ করায় বিপাকে পড়ছেন অপর জন। অনেক সময়ে আবার শুধুমাত্র ব্ল্যাকমেল করার জন্য এই ধরনের ভাইরাল ভিডিয়োর আশ্রয় নিয়ে থাকে হ্যাকারেরা।
এ ছাড়া হোটেলের ঘরে স্পাই ক্যামেরা বসিয়ে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ভূরি ভূরি। গ্যাজেট বিশ্লেষকদের দাবি, অনেক সময়ে ভুল করে বা অজ্ঞতার কারণে কোনও ভুয়ো অ্যাপ্লিকেশনকে গ্যালারির অ্যাক্সেস দিয়ে ফেলেন স্মার্টফোনের গ্রাহক। সেখান থেকেও ভাইরাল হতে পারে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি-ভিডিয়ো।
আরও পড়ুন:
এগুলির পাশাপাশি বিশেষ একটি অভ্যাস বদলানোর কথা বলেছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের কথায়, অনেক সময়ে অন্যের ভাইরাল ভিডিয়ো দেখার জন্য কোনও লিঙ্কে ক্লিক করে ফেলেন গ্রাহক। সঙ্গে সঙ্গে টেলিগ্রাম চ্যানেলে ঢোকার সুযোগ পান তিনি। এর পর সেখানকার লিঙ্কে ক্লিক করে ক্লাউড স্টোরেজে প্রবেশ করেন ওই ব্যক্তি। এই প্রক্রিয়ায় এক বা একাধিক অ্যাপ্লিকেশনকে গ্যালারির অ্যাক্সেস দিতে হয় তাঁকে। সাধারণত দেখা যায় কোনও কিছু না পড়ে সেই অনুমতি দিয়ে ফেলেছেন গ্রাহক।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ঠিক এখানেই ঘটছে বিপদ। ওই অ্যাপ্লিকেশনগুলির মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইল ফোনের গ্যালারিতে অনায়াসে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন সাইবার অপরাধীরা। ফলে তাদের পক্ষে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিয়ো ফাঁস করা অনেক সহজ হচ্ছে। সেই কারণে যে কোনও অ্যাপ্লিকেশনকে গ্যালারির অনুমতি দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গ্যাজেট বিশ্লেষকেরা। পাশাপাশি, অন্যের ব্যক্তিগত পরিসরে উঁকিঝুঁকি মারা থেকে সরে আসতেও বলেছেন তাঁরা।