স্মার্টফোন নির্মাণকারী পোকোর শিরে সংক্রান্তি! তাদের তৈরি মুঠোবন্দি ডিভাইসের জনপ্রিয়তা তলানিতে। এর জেরে হু-হু করে ব্যবসা কমে যাওয়ায় ধীরে ধীরে বাজার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পোকো। কিন্তু কেন? প্রবল প্রত্যাশা তৈরি করেও কী কারণে স্মার্টফোনের দুনিয়ায় নিজের জায়গা ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা? আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
২০১৮ সালে ‘এফ-১’ নামের একটি স্মার্টফোন বাজারে এনে হইচই ফেলে দেয় পোকো। গেমিংয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মুঠোবন্দি ডিভাইসটি ছিল আদর্শ। ফলে হুড়মুড়িয়ে অনেকেই পোকোর ‘এফ-১’ কিনতে শুরু করেন। এর জেরে রাতারাতি আকাশ ছুঁয়ে ফেলে সংস্থার বৃদ্ধির সূচক। তবে চলচ্চিত্রের নায়ক থেকে অতিরিক্ত বা এক্সট্রার চরিত্রে চলে যেতে পোকোর বেশি দিন সময় লাগেনি।
প্রাথমিক ভাবে ‘এফ ১’-এ নজরকাড়া সাফল্য মেলায় নিজেদের ব্র্যান্ডের আরও কিছু ফোন বাজারে আনে এই সংস্থা। কিন্তু সেগুলি একেবারেই গ্রাহকদের মন জয় করতে পারেনি। চিনা স্মার্টফোন নির্মাণকারী সংস্থা শাওমির ছত্রছায়ায় পথ চলা শুরু করেছিল পোকো। বিশ্লেষকদের দাবি, সেখান থেকে কখনও বেরোতে পারেনি তারা। ফলে কিছু দিনের মধ্যেই ‘রেড মি’র ফোন রিব্র্যান্ডিং করে বিক্রির অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে।
দ্বিতীয়ত, এক্স, এম, এফ এবং সি-সহ একাধিক সিরিজ়ের ফোন বাজারে আনে পোকো। বিশ্লেষকদের দাবি, এতে ক্রেতাদের মনে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। কোনটা ফ্ল্যাগশিপ ফোন আর কোনটা শুধুমাত্র গেম খেলার জন্য— সেটা প্রায় কেউই বুঝে উঠতে পারেননি। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্থাটির প্রতি আস্থা কমতে থাকে ক্রেতাদের। এর জেরেই পোকোর মুঠোবন্দি ডিভাইসের থেকে ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নেন তাঁরা।
নতুন স্মার্টফোন বাজারে আনার সময়ে গ্রাহকদের একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পোকো। সংস্থার তরফে বলা হয়, শাওমির চেয়ে অনেকটাই আলাদা হবে তাদের ডিভাইস। সফ্টঅয়্যারে বাগ থাকা বা আগাম ইনস্টল করা কোনও অ্যাপের ঝামেলা পোহাতে হবে না ব্যবহারকারীকে। যদিও বাস্তব চিত্র ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে এই সুবিধার কিছুই পাননি তাঁরা।
স্মার্টফোনের বাজারে পা জমাতে সস্তায় মুঠোবন্দি ডিভাইস বিক্রি শুরু করেছিল পোকো। কিন্তু, এটা করতে গিয়ে নিম্নমানের হার্ডঅয়্যার ব্যবহার করে ফেলে তারা। ফলে ব্যাটারি ফুলে যাওয়া, বার বার মাদারবোর্ড খারাপ হওয়া বা ডিসপ্লেতে সবুজ রেখা দেখতে পাওয়ার মতো সমস্যার মুখে পড়তে হয় গ্রাহকদের। এগুলি মেটাতে কোনও সার্ভিস সেন্টারের সুবিধা দেয়নি পোকো। এটা ছিল তাদের কফিনের শেষ পেরেক, বলছেন বিশ্লেষকেরা।