বিমানযাত্রার সবচেয়ে বড় সুবিধাই হল দূরযাত্রাও করা যায় কম সময়ে। কলকাতা থেকে দিল্লি যেতে যেখানে ট্রেনে রাত কাবার হয়ে যায়, সেখানে বিমানে সকালে দিল্লি গিয়ে বিকালে কাজ সেরে ফিরে আসা যায়।
তবে বিমানযাত্রার ঝক্কি বাড়তে পারে সাধারণ ভুলভ্রান্তিতে। বিমানযাত্রায় সময় কম লাগলেও বিমানবন্দরে পৌঁছোনো থেকে বিমান ওঠার মধ্যে ‘সিকিউরিটি চেকিং’-এর কয়েকটি ধাপ পার হতে হয়। তার উপর খুব সাধারণ অভ্যাশবশেই ঝক্কি বেড়ে যায় বিমানে ওঠার সময় ব্যাগ নিয়ে।
বিমানে যে মালপত্র কার্গো হোল্ডে চলে যায়, সেটি হল চেক ইন লাগেজ। সঙ্গে যে ব্যাগটি বা ট্রলি নিয়ে ওঠার অনুমতি থাকে, সেটি পড়ে ক্যারি-অন লাগেজের তালিকায়। সেই ব্যাগে নানা প্রকার জিনিসপত্র রাখাই মূলত ঝক্কির কারণ।
হাতের কাছে থাক সবটাই: অনেকেই হাতের কাছে যাবতীয় জিনিস রাখতে পছন্দ করেন। কেউ আবার চেক-ইন লাগেজ নেওয়ার জন্য যে বাড়তি সময় নষ্ট হয়, তা এড়াতেই সমস্ত জিনিস ঠেসেঠুসে হাতে থাকা ব্যাগ বা ট্রলিতে ভরে ফেলেন। প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকাটা কারও কাছে এত বেশি হয়ে যায় যে, হাতের ব্যাগটি নির্ধারিত ওজন ছাপিয়ে যেতে পারে। এমনটা হয়ও প্রায়শই। বাড়তি ওজন মানেই অতিরিক্ত টাকার ঝক্কি, নয়তো জিনিস বার করে ওজন না কমালে বিমানে ওঠার ছাড়পত্র মিলবে না। তাই হাতের ব্যাগকে হালকা করাই ভাল।
আরও পড়ুন:
জরুরি নথি: হাতের ঢাউস ব্যাগটিতে নানা রকম জিনিসের মধ্যে পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস, পরিচয়পত্র, সবই ভরে ফেলেন অনেকে। সমস্যা হয় যখন সেটি দেখানোর প্রয়োজন পড়ে। রকমারি জিনিসের ভিতর থেকে প্রয়োজনের জিনিস হাতড়াতে হাতড়াতে সময় পেরিয়ে যায়। নিজের এবং অন্যের, দু’পক্ষেরই সময় নষ্ট হয়। তাই হাতের ব্যাগে ছোট একটি চেন টানা খোপে জরুরি জিনিস গুছিয়ে ভরে রাখুন, যাতে বিমানবন্দরের কর্মীরা চাইলেই ঝট করে বার করে দেওয়া যায়।
বাড়ির খাবার: বাইরে গেলেও অনেকে বাড়ির খাবার খেতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সমস্যা এতে নেই। কিন্তু টিফিন কোটোর ফাঁক দিয়ে তেল গড়িয়ে পড়ছে কিংবা কৌটো খুলতেই চার দিক রসে মাখামাখি— এমন হলে বিমানে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে। বিমানের নিয়মে আটকাবে না, এমন খাবার সঙ্গে রাখার পাশাপাশি সেটি কোনও শক্ত কৌটোয় বা ফয়েল পেপারে মুড়ে নিয়ে যাওয়া ভাল। শুকনো খাবার বা তেল, রস গড়িয়ে পড়বে না এমন ধরনের খাবার বেছে নিলেও এমন ঝঞ্ঝাট এড়ানো যাবে।
জিনিসের তালিকা: কোন জিনিস চেক ইন লাগেজে রাখা যায়, কোনটি সঙ্গের ব্যাগে নেওয়া যায় তার স্পষ্ট তালিকা এবং বিভাজন থাকে। সব জিনিস হাতের ব্যাগে নেওয়ার অনুমতি থাকে না। এক এক বিমান সংস্থার নিয়মও এক এক রকম হয়। বিমানযাত্রার আগে এই বিষয়ে জানা থাকলে ঝক্কি এড়ানো সম্ভব।
প্রসাধনী: শ্যাম্পু, সুগন্ধি, ময়েশ্চারাইজ়ার অনেকেই হাতব্যাগে রাখেন। এগুলি হাতব্যাগে রাখার অনুমতি থাকলেও, বড় বোতল নিয়ে যাওয়া যায় না। ১০০ মিলিলিটারের বেশি সুগন্ধি নিয়ে যাওয়া যায় না এ ভাবে। এক এক বিমান সংস্থার এক একরকম নিয়ম থাকে। বিশেষত, আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সংস্থায় এগুলি ভীষণ কড়া ভাবে পরীক্ষা করা হয়। ধরা পড়লে প্রসাধনীগুলি বার করে দেওয়া হয়।