কখনও হড়পা বান, কখনও আবার অতিবৃষ্টি! প্রকৃতির তাণ্ডবে পর্যটনকেন্দ্রগুলির বিধ্বস্ত চেহারা বড়ই যন্ত্রণাদায়ক। প্রকৃতির রুদ্র রূপের কারণ বিশ্লেষণ করতে গেলেই কিন্তু মাথায় আসে বেদনাদায়ক ছবি। পরিবেশ রক্ষায় মানুষই অসমর্থ। আর তারই ফল একের পর এক প্রকৃতিক বিপর্যয়।
ভ্রমণপিপাসু হিসাবে যে কোনও পর্যটকেরও কিন্তু দায়িত্ব থেকে যায় পরিবেশ রক্ষার। সেই কারণে, ‘সাসটেনবল ট্যুরিজম’-এর অংশ হতে পারেন আপনিও। ট্যুরিজ়মের এটি একটি নতুন সংযোজন, যেখানে বলা হয়েছে, ভ্রমণ করতে হবে যথাসম্ভব প্রকৃতি বাঁচিয়ে। যাতে পরিবেশের কোনও ক্ষতি না হয়। একই সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতি, পর্যটনের বিকাশও এমন ভ্রমণের লক্ষ্য।
কী ভাবে সাসটেনবল ভ্রমণের অংশ হতে পারেন?
ব্যাগ থেকে জিনিস: প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা নিজেকেই করতে হবে। ব্যাগ থেকে বোতল, আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা দরকার। সঙ্গে কাপড় বা জুটের ব্যাগ রাখতে পারেন। কিংবা শক্তপোক্ত মোটা প্লাস্টিকের একটি ব্যাগ। কোনও কিছু কিনলে পাতলা প্লাস্টিক নেওয়া বন্ধ করে নিজের ব্যাগেই জিনিস ভরে নিন।
জলের বোতল: বেড়াতে গেলে জলের বোতল সঙ্গে রাখুন। বেশির ভাগ জায়গায় প্লাস্টিকের বোতলবন্দি পানীয় জল বিক্রি হয়। খাওয়ার পরে এই বোতেল যেখানে-সেখানে ফেলায় পরিবেশে আবর্জনা বাড়ে। চেষ্টা করা যেতে পারে নিজের জলের বোতলে জল ভরে নেওয়ার।
জল এবং বিদ্যুতের ব্যবহার: মোটা টাকা হোটেল বিল দেওয়া হচ্ছে বলেই অনাবশ্যক আলো জ্বালিয়ে রাখা, দিনভর গিজ়ার চালিয়ে রাখাও কিন্তু যুক্তিযুক্ত নয়। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ মানেই পরিবেশে তার প্রভাব পড়ে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় জ্বালানি খরচ হয়, দূষণ ছড়ায়। তাই এ ভাবেও পরিবেশ বাঁচানোর উদ্যোগে শামিল হওয়া যায়।
অরণ্যের নিয়ম মানা: জঙ্গলের রিসর্টে রাত্রিবাস এবং সাফারির সময় বনের নিয়ম মানা খুব জরুরি। চিৎকার চেঁচামেচি, মদ্যপান, ধূমপান— এ সবই জঙ্গলের নিয়মবিরুদ্ধ। এতে বন্যপ্রাণকে অসুবিধায় পড়তে হয়। পরিবেশের ক্ষতি হয়। নিয়মলঙ্ঘন নয় নিয়ম পালনেই মর্যাদা পাওয়া যায়।
স্থানীয় অর্থনীতির বিকাশে সাহায্য করা: বেড়াতে গিয়ে স্থানীয় কারিগরদের হস্তশিল্প কেনা, সেখানকার জিনিস খাওয়া মানে স্থানীয় অর্থনীতিকে সমর্থন করা। পর্যটনকেন্দ্রে জিনিসপত্র বিক্রির মাধ্যমেও বহু লোকের উপার্জন হয়। স্থানীয় অর্থনীতির বিকাশ হয়।