Advertisement
E-Paper

চা-বাগিচা ঘেরা ছোট্ট গ্রাম, উঁকি দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা, ঘুরে নিন দার্জিলিঙের কাছেই রঙ্গারুন

ছুটি পেলেই উত্তরবঙ্গে ছুটে যান? এবার ঘুরে নিন রঙ্গারুন। চা-বাগান, কাঞ্চনজঙ্ঘা, পাহাড়ি ঝোরা মন ভাল করে দেবে নিমেষেই।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০৩
রঙ্গারুন  থেকে  সূর্যোদয়ের সময় কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ।

রঙ্গারুন থেকে সূর্যোদয়ের সময় কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ। — নিজস্ব চিত্র।

অভয়ারণ্যের ভিতর দিয়ে রাস্তা। এই ঝকঝকে রোদ, আবার পরক্ষণেই মেঘ এসে ঢেকে দেয় সূর্য। স্থানে স্থানে পাহাড়ি খাদ ঠেলে উঠে আসে কুয়াশা। ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটা, আলো-আঁধারি তৈরি করে এক অদ্ভুত মায়া। শহরের জীবন, ব্যস্ততা, ডেডলাইন— সব ছাপিয়ে এক অপরিসীম শান্তি বিরাজ করে এ পথে।

এ পথের শেষে আছে এক অদ্ভুত প্রাপ্তি, যার খোঁজে সব কিছু তুচ্ছ করে চলে আসা যায় হিমালয়ের কাছে। ভ্রমণপিপাসুদের কাছে উত্তরবঙ্গের সব সময়েই আলাদা আকর্ষণ থাকে। তার টানেই ইদানীং খোঁজ নাম না জানা ঠিকানার। এত দিন যা ছিল নেহাতই সাদামাঠা গ্রাম, সেই সব জায়গাই এখন ভ্রমণপিপাসুদের অবসর যাপনের ঠিকানা।

দার্জিলিং শহর থেকে দূরত্ব বড়জোর ১৬ কিলোমিটার। তবে ছোট্ট গ্রাম রঙ্গারুনের সঙ্গে চরিত্রগত ভাবে দার্জিলিঙের তেমন কোনও মিল নেই। দার্জিলিং যাঁরা গিয়েছেন তাঁরা জানেন, পাহাড়ি জায়গাটি গত কয়েক বছরে কী ভীষণ ঘিঞ্জি হয়ে উঠেছে। প্রতি কদমে নতুন নতুন হোটেল, রিসর্ট, অসংখ্য দোকান, ঝাঁ চকচকে ক্যাফে— সব মিলিয়ে যেন বড় বেশি হট্টগোল।

পাহাড়ে যাঁরা খুঁজে নিতে চান ক্ষণিকের নির্জনতা, চান পাহাড়ি খাবারের স্বাদ, গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার শরিক হতে, তাঁদের জন্যই রঙ্গারুন। এই গ্রামের বিস্তীর্ণ উপত্যকা জুড়ে রয়েছে চা-বাগিচা। ছোট ছোট কাঠের বাড়ি, ফুলের গাছ, পাহাড়, চাষের ক্ষেত— সব মিলিয়ে আর পাঁচটা পাহাড়ি গ্রামের থেকে বিশেষ কিছু তফাৎ নেই বটে, তবু রঙ্গারুন সুন্দর। দুটো দিন নিশ্চিন্তে অবসর যাপনের জন্যই যেন গ্রামটি।

মেঘমুক্ত থেকে রঙ্গারুন থেকে এমন ভাবেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা।

মেঘমুক্ত থেকে রঙ্গারুন থেকে এমন ভাবেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। — নিজস্ব চিত্র।

কখনও মেঘ, কখনও কুয়াশা চাদর বিছিয়ে দেয় এখানে। রোদঝলমলে দিনে রঙ্গারুন থেকে দৃশ্যমান হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। পাহাড়ে মেঘলা দিনের সৌন্দর্য এক রকম, আবার রোদ উঠলে বড় ভাল লাগে। ঠান্ডার দাপট কমে যায়। কোনও এক পাহাড়ি পথের পাশে গা এলিয়ে দিব্যি বসে থাকা যায়।

রঙ্গারুনের চা-বাগান যেন গালিচার মতো। হাঁটা পথে ধাপে ধাপে যাওয়া যায় অনেক দূরে। সকাল হলেই কর্মীরা চলে আসেন বাগানে। প্রত্যন্ত গ্রাম হলে কী হবে, স্থানীয় মহিলাদের সাজের বাহার কম নয়! আর সব সময়েই তাঁদের মুখে লেগে থাকে অকৃত্রিম হাসি।

রঙ্গারুনের চা-বাগান। হেঁটে ঘুরে নিতে পারেন বিস্তীর্ণ বাগিচা।

রঙ্গারুনের চা-বাগান। হেঁটে ঘুরে নিতে পারেন বিস্তীর্ণ বাগিচা। ছবি: সংগৃহীত।

রঙ্গারুনে পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানাতে ঘরদোর সাজিয়ে রেখেছেন গ্রামের লোকজন। একাধিক হোম স্টে রয়েছে এখানে। বিলাসিতা না থাকলে, প্রয়োজনটুকু মিটে যায়ে অনায়াসে। হোম স্টে মালিকদের উষ্ণ আতিথেয়তা ইন্ধন জোগায় আবার পাহাড়ে আসার।

ঘুরে নিতে পারেন সোনাদা এবং আশপাশের জায়গা। রয়েছে একাধিক মনাস্ট্রি।

ঘুরে নিতে পারেন সোনাদা এবং আশপাশের জায়গা। রয়েছে একাধিক মনাস্ট্রি। ছবি:সংগৃহীত।

রঙ্গারুন থেকে ট্রেক করা যায় বেশ কয়েকটি পথে। পৌঁছনো যায় রুংদাং খোলায়। সকাল সকাল প্রাতরাশ সেরে পা বাড়াতে পারেন এই পথে। পাহাড়ের সৌন্দর্য সঙ্গ দেবে প্রতি পদে। শেষে মোলাকাত হবে এক পাহাড়ি ঝোরার সঙ্গে। সাড়ে তিন কিলোমিটারের হাঁটা পথ মন ভরিয়ে দেবে।

তবে যদি এত হাঁটাহাটির ইচ্ছা না থাকে, রঙ্গারুনের চা-বাগিচা পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারেন। না হলে গাড়ি ভাড়া করে চলে যেতে পারেন সোনাদার দিকেও। লামাহাট্টা, দার্জিলিং-সহ অনেক জায়গাই রঙ্গারুন থেকে ঘুরে নেওয়া যায়।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে ট্রেন, বাসে পৌঁছন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। সেখান থেকে জোড় বাংলো হয়ে রঙ্গারুন। দূরত্ব মোটামুটি ৭৫ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে জোড়বাংলার শেয়ার গাড়ি মিলবে। সেখান থেকে রঙ্গারুন পৌঁছতে হলে হোম স্টের গাড়ি বুক করে নেওয়া ভাল। পুরো রাস্তাটাই গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

রঙ্গারুনে একাধিক হোম স্টে রয়েছে। তবে হোটেল মিলবে না এখানে। ঝাঁ চকচকে দোকান, ক্যাফে— কোনওটাই নেই। এখানে এসেও হোম স্টে বুক করে নিতে পারেন। অল্পচেনা ঠিকানায় পর্যটকদের তেমন ভিড় থাকে না।

Offbeat Darjeeling rangaroon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy