Advertisement
E-Paper

নিভৃতির হদিস নিয়ে পর্যটন তালিকায় আসছে ঝর্নাকোচা

সেখানে রয়েছে নিভৃত নিসর্গ। পাখির কাকলি আছে। মোটরগাড়ির কাশি নেই। শীতের ঝরা পাতা বিছিয়ে রয়েছে। আলুভাজার ফাঁকা প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট নেই। প্রকৃতিকে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁদের রুটম্যাপে এই ঝর্নাকোচার নাম তুলতে এ বারে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।

সমীর দত্ত

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪২
সবুজ: প্রাকৃতিক জলাধার। পাখির কলকাকলিতে মেতে থাকে দিনভর। নিজস্ব চিত্র

সবুজ: প্রাকৃতিক জলাধার। পাখির কলকাকলিতে মেতে থাকে দিনভর। নিজস্ব চিত্র

মরসুমে কাছেপিঠে পিকনিক বা ছুটি মিললে টুক করে বেরিয়ে পড়া। কিন্তু যাবেন কোথায়? ভরসা সেই ইন্টারনেট বা সরকারি তালিকা। কিন্তু ঘরের কাছে একটা ধানের শীষে শিশির বিন্দুর হদিস সেই তালিকায় মেলার নয়। মেলার নয় বরাবাজারের ঝর্নাকোচার নামও। সেখানে রয়েছে নিভৃত নিসর্গ। পাখির কাকলি আছে। মোটরগাড়ির কাশি নেই। শীতের ঝরা পাতা বিছিয়ে রয়েছে। আলুভাজার ফাঁকা প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট নেই। প্রকৃতিকে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁদের রুটম্যাপে এই ঝর্নাকোচার নাম তুলতে এ বারে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।

বরাবাজার-মানবাজার রাস্তায় সিন্দরি পঞ্চায়েতের ঝর্নাকোচা গ্রাম। পাকা রাস্তায় বিশকুদরা গ্রাম থেকে দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। বিডিও (বরাবাজার) শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক ঝর্না রয়েছে বলেই হয়তো এমন নাম হয়েছে। পাহাড়ের কোল থেকে ওই ঝর্না বেরিয়ে একটা বড় জলাশয় তৈরি করেছে। মানবাজারের দোলাডাঙার মতো এখানেও পিকনিকের যাবতীয় রসদ রয়েছে। প্রচারটাই নেই। অনেকে খবর পেয়ে মাঝে মধ্যে চলে আসেন।’’

বি়ডিও জানান, পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্যে সড়ক থেকে ঝর্নাকোচা পর্যন্ত ঢালাই রাস্তার পরিকল্পনা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের কাজের মধ্যে এটা রয়েছে। প্রথম দফায় আপাতত ১ কিলোমিটার রাস্তা হবে। এ ছাড়া পর্যটকদের সাময়িক বিশ্রামের জায়গা তৈরি হবে। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চান, ঝর্নাকোচা তাঁদের জন্য আদর্শ। এখানে কোলাহল নেই। নানা ধরনের পাখি রয়েছে। কপাল ভাল থাকলে বুনো খরগোশও উঁকিঝুঁকি মেরে চলে যাবে।’’ জঙ্গলে ঘেরা জলাশয়ে অনেক জন্তু প্রায়ই জল খেতে আসে।

পাহাড় জুড়ে সোনাঝুরি, পলাশ, কুসুম, নিম গাছ। উপরে রয়েছে একটি প্রাচীন গুহা। সিন্দরি পঞ্চায়তের প্রধান বিশ্বজিৎ মাহাতো জানান, সেটি অপ্রশস্ত। ভিতরে কিছু দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। তবে জোরালো আলোতেও বেশি দূর পর্যন্ত দেখা যায় না। স্থানীয় অনেক জনশ্রুতি রয়েছে ওই গুহা নিয়ে। কেউ বলেন, এক সময়ে বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল। আবার কেউ বলেন, ডাকাতদের ঘাঁটি। এখন অবশ্য বাদুড় আর চামচিকের বাসা গুহার ভিতরে। সাপের ভয়ে কেউ ঢুকতে সাহস পান না।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝর্নাকোচা ঘিরে থাকা খেরিয়াডি, কুদলুং, বাবুইজোড়, বুলানডির মতো গ্রামগুলিতে মূলত আদিবাসীদের বাস। গ্রামগুলিতে কয়েকটি স্বনির্ভর দল রয়েছে। তারা হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়লে সেই সমস্ত জিনিস বিক্রির ভাল উপায় হবে বলে মনে করছেন বিডিও।

তিনি জানান, পিকনিক স্পটের তালিকায় এই জায়গার নাম তোলার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। রাস্তা ভাল হলে পর্যটকরা ভিড় করবেন বলেই প্রশাসনের আশা।

Travel and Tourism Jharnakocha Tourist Spot ঝর্নাকোচা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy