কাউকে নাড়া দিয়েছে ‘দিল চাহতা হ্যায়’-এর মতো ছবি। কাউকে স্বপ্ন দেখিয়েছে, ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’। কারও অনুপ্রেরণা ‘থ্রি ইডিয়ট্স’। তিন হিন্দি ছবি দেখিয়েছে বন্ধু কী ভাবে বন্ধুর স্বপ্নপূরণের শরিক হতে পারে। একঘেয়ে বিরক্তিকর জীবনে বন্ধু কী ভাবে এক ঝলক টাটকা বাতাস হয়ে ওঠে। আর তা দেখেই মনে মনে স্বপ্ন বুনেছেন, কোনও না কোনও দিন বন্ধুরা মিলে এমন সফর করবেন। তা হলে বরং ঘুরে আসুন এই তিন জনপ্রিয় ছবির শুটিং স্পট থেকে।
গোয়া
আরও পড়ুন:
উত্তর গোয়ার বার্দেজ়ে আরব সাগরের তীরে চাপোরা দুর্গে শুটিং হয়েছিল ছবিটির। ছবি: সংগৃহীত।
মহিলা হোন পুরুষ— গোয়ায় গিয়ে কয়েকটি দিন নিজের শর্তে উপভোগ করার স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। আরব সাগরের তীরে পশ্চিমঘাট পর্বতের সৌন্দর্য, নারকেল গাছের সারি, ছবির মতো সৈকত জনপ্রিয় করেছে গোয়াকে। এখানেই শুটিং হয়েছিল ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবির। গোয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই সূর্যাস্তের দৃশ্য মনোরম। সেই তালিকায় যেমন ডোনা পাওলা ভিউ পয়েন্ট আছে, তেমনই রয়েছে চাপোরা ফোর্ট। সাগরের পাশে ভাঙা কেল্লা। সেখানেই শুটিং হয়েছিল এই ছবির কয়েকটি দৃশ্যের। উত্তর গোয়ার বার্দেজ়ে আরব সাগরের তীরে আদিল শাহি রাজত্বের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে চাপোরা দুর্গ। পাহাড়ের মাথায় তার অবস্থান। পড়ন্ত বিকেলে অস্তগামী সূর্যে রক্তিম আভায় রঙিন হয়ে ওঠা আকাশ, সাগরের রূপ দর্শনে যাওয়া যায় সেখানে। উত্তর এবং দক্ষিণ গোয়ায় রয়েছে অসংখ্য সৈকত, পুরনো গির্জা। গোয়ার খাবার, নৈশজীবন, জলক্রীড়া— সব কিছুই নিজের মতো করে উপভোগ করা যায়।
হিমাচল প্রদেশ
শীতের মরসুমে বরফে ঢেকে যায় জালোরি পাসের রাস্তা। ছবি: সংগৃহীত।
‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবিতে ভারতের বিভিন্ন স্থান এত সুন্দর ভাবে ক্যামেরায় ধরা হয়েছে যে, দেখলেই যেতে ইচ্ছা করে। ছবিতে বাণী, নয়না, অভি, অদিতির রসায়ন দেখে অনেকেই আপ্লুত। মনে রাখার মতো এমন একটা সফর করতে চান? তা হলে বেছে নিতে পারেন হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন স্থান। সিনেমার শুটিং হয়েছে মুম্বই, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, প্যারিস-সহ বিভিন্ন জায়গায়।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত জালোরি পাস রয়েছে কুলু জেলায়। ছবিতেও ট্রেকিংয়ের দৃশ্য ছিল। সেটও শীতে। গ্রীষ্ম এবং শীতে রূপ বদলে যায় প্রকৃতির। ট্রেকিং খুব সহজ নয়। তবে আগে থেকে প্রস্তুতি নিলে এই সফর আজীবনের স্মৃতি হয়ে থাকতে পারে। জিবি থেকে জালোরি পাসের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। জালোরি থেকে একাধিক জায়গায় ট্রেক করা যায়। তালিকায় রাখতে পারেন সেরোলসার হ্রদ, রঘুনাথগড় ফোর্ট। এখানে প্রবল ঠান্ডা থাকে শীতে। মানালি থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে গুলাবা গ্রামেও এই ছবির কোনও কোনও দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল। ঘুরে নিতে পারেন হামতা পাস। মানালি থেকে রোটাং পাস, অটল টানেল, সিসু গ্রাম, কাংড়া ভ্যালি-সহ অনেক জায়গাই ঘুরে নেওয়া যায়।
‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবিতে চার বন্ধু। ছবি: সংগৃহীত।
লাদাখ
‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে নায়িকা করিনা কপূর। প্যাংগং লেকের ধারে। ছবি: সংগৃহীত।
ঊষর, রুক্ষ প্রকৃতির মধ্যে নীল জলের প্যাংগং লেক। নায়ক ‘র্যাঞ্চো’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হলুদ স্কুটারে বিয়ের পোশাক পরে আসছেন নায়িকা ‘পিয়া’। ‘থ্রি ইডিয়ট্স’ ছবিতে আমির খান এবং করিনা কপূরের মিলনান্তক দৃশ্যের কথা মনে পড়ে নিশ্চয়ই। সেই জায়গাতেও ঘুরে আসতে পারেন। লাদাখের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনে রাখার মতোই। প্রাচীনত্ব, সংস্কৃতি অনন্য করেছে এই স্থানকে। এখনও প্যাংগঙের ধারে গেলে হলুদ স্কুটারটি চোখে পড়বে।