Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Picnic Spots near Kolkata

নিরিবিলিতে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে চান? গন্তব্য হতেই পারে বর্ধমানের ভাল্কিমাচান

শালপিয়ালের বনের মাঝে একাকিত্বের স্বাদ নেওয়ার জন্য কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে অরণ্যের মাঝে দু-এক দিন কাটানোর আদর্শ ঠিকানা ভাল্কিমাচান।

ঘুরে আসুন শালপিয়ালের বন ঘেরা ভাল্কিমাচান গ্রাম থেকে।

ঘুরে আসুন শালপিয়ালের বন ঘেরা ভাল্কিমাচান গ্রাম থেকে। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:২০
Share: Save:

কোলাহল, ব্যস্ততায় তিতিবিরক্ত হয়ে কিছুটা সময় দূরে, নিভৃতে প্রকৃতির কাছাকাছি কাটাতে ইচ্ছে করছে? এমন জায়গার খোঁজ পেতে চান যেখানে শরীরের ক্লান্তি জুড়ানোর সঙ্গে মনও চাঙ্গা হবে? যে কোনও ভ্রমণ পরিকল্পনা করার আগে খরচ আর সময়, দু’টির কথাই মাথায় রাখতে হয়। নাগালের মধ্যেই এমন বেশ কিছু জায়গা রয়েছে, যেখানে গেলে আর ফিরে আসতে মন চাইবে না।

ঘুরে আসুন ভাল্কিমাচান। শালপিয়ালের বনের মাঝে একাকিত্বের স্বাদ নেওয়ার জন্য কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে অরণ্যের মাঝে দু-এক দিন কাটানোর আদর্শ ঠিকানা এটি। হাতে দিন দুয়েক সময় থাকলে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করার পাশাপাশি কাছেপিঠের বেশ কিছু ঐতিহাসিক জায়গাও ঘুরে দেখতে পারেন।

‘মাচা’ থেকে ‘মাচান’ কথাটি এসেছে। আউশগ্রামের জঙ্গলে বর্ধমানের মহারাজারা একটি উঁচু মাচার মতো স্থাপত্য তৈরি করিয়েছিলেন। দেখতে খানিকটা ‘ওয়াচ টাওয়ার’-এর মতো। অনেকে বলেন, সেখানে গিয়ে ভালুক শিকার করতেন রাজা। তার থেকেই এলাকার নাম হয়েছে ‘ভাল্কিমাচান’। এখন জঙ্গলটিই ভাল্কি নামে পরিচিত। জঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে সরকারি অতিথি নিবাস। যার পাশেই মাটি কেটে তৈরি করা হয়েছে যমুনাদিঘি। যেখানে চাইলেই নৌকাবিহার করতে পারেন পর্যটকরা। বিরাট জলাশয়কে ঘিরে রয়েছে গোলাকৃতি বাগান। মরসুমি ফুলের সাজ ও গন্ধে যেন মন জুড়িয়ে যায়।

এই গ্রামের চার-পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেই আছে ডোকরাপাড়া। গায়ে গায়ে লাগানো মাটির বাড়ির উঠোন জুড়ে পরিবারের সকলে মিলে ডোকরার কাজে ব্যস্ত। পর্যটক দেখলেই পায়ে পায়ে এগিয়ে এসে নিজের কাজ দেখাতে অস্থির হয়ে ওঠেন শিল্পীরা। কী ভাবে ডোকরার কাজ হয়, জানতে চাইলে সাগ্রহে দেখিয়ে দেন এই শিল্পকর্মের প্রতিটি ধাপ। ডোকরাপাড়া থেকে বেরিয়ে পাকা রাস্তা ধরে আরও কিছু দূর পশ্চিমে এগিয়ে যেতেই রাস্তার বাঁ দিকে কেয়া গাছের জঙ্গল। হয়তো এ জন্যই ওই জায়গাটি ‘কেওতলা’ নামে প্রসিদ্ধ। জঙ্গলের মাঝেই শিবমন্দির। এখানেই সাধক জগদানন্দ ব্রহ্মচারীর আশ্রম রয়েছে।

কলকাতা থেকে সড়কপথে নিজস্ব গাড়িতে সরাসারি পৌঁছে যাওয়াই যায় ভাল্কিমাচানে।

কলকাতা থেকে সড়কপথে নিজস্ব গাড়িতে সরাসারি পৌঁছে যাওয়াই যায় ভাল্কিমাচানে। ছবি: সংগৃহীত।

মাচানে গেলেই মিলবে নানা প্রজাতির গাছগাছালি। আশপাশেই রয়েছে আদিবাসী গ্রাম। সেখানে মাদলের তালের সঙ্গে মহিলাদের নাচ আপনার মন ভরিয়ে দেবে। আর আউশগ্রামের বিস্তীর্ণ ঘন জঙ্গলে ঘেরা এলাকার সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যাবে।

অতিথি নিবাসে ফিরে জঙ্গলের ভিতরে ক্যাম্প ফায়ারের ব্যবস্থাও করা হয়। শীতের রাতে আগুনের তাপ পোহাতে পোহাতে পরিজনদের সঙ্গে আড্ডা জমতে পারে। এখানে পর্যটকদের জন্য আলাদা থাকার ঘর যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে ডরমেটরি। আছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষও।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে সড়কপথে নিজস্ব গাড়িতে সরাসারি পৌঁছে যাওয়াই যায় ভাল্কিমাচানে। সময় লাগবে ঘণ্টা তিনেক। তা ছাড়া, হাওড়া থেকে গুসকরাগামী ট্রেনে চড়েও পৌঁছে যেতে পারেন এই গ্রামে। সময় লাগবে ঘণ্টা দুয়েক মতো। সেখান থেকে অটো, বাস কিংবা ভাড়ার গাড়িতে গন্তব্যে পৌঁছতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE