বাসি হয়ে যাওয়া রুটি স্বাদ হারালেও বৃদ্ধি পায় পুষ্টিগুণ। তা বলে অতৃপ্তি করে খাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং সেই স্বাস্থ্যকর অথচ স্বাদহীন বাসি রুটিকে পুষ্টিকর খাবারে পরিণত করা যায়। শীতের সময়ে শরীর গরম রাখার মতো এমন খাবার বানান, যাতে প্রোটিনের চাহিদা মিটবে। যাঁরা নিরামিষাশী, তাঁদের জন্য এই পদ উপকারী হতে পারে।
বাসি রুটি দিয়ে বানিয়ে নিন লাড্ডু। টাটকা রুটির চেয়ে বাসি রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক কম। তা ছাড়া, বাসি রুটি গরম করলে কার্বোহাইড্রেটের গঠনে পরিবর্তন আসে। ফলে রক্তে গ্লুকোজ় মেশার গতি শ্লথ হয়ে যায়। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে বাসি রুটি বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ দীপশিখা জৈন ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো করে বলছেন, ‘‘টাটকা রুটির চেয়ে বাসি রুটি বেশি স্বাস্থ্যকর। ঠান্ডা জায়গায় অন্তত ১২ ঘণ্টা রেখে দিলে তার মধ্যে যৌগগুলির পরিবর্তন হতে থাকে। রুটির স্টার্চ বদলে গিয়ে রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চে পরিণত হবে। যা পেটের ভাল ব্যাক্টেরিয়ার জন্য উপকারী। ফলে পেটের স্বাস্থ্য এবং হজমের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে। এতে ক্যালোরিরও পরিমাণ কম থাকে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার কাজ সহজ হয়ে যায়।’’
স্বাস্থ্যকর এই মিষ্টি বানাতে উপকরণ হিসেবে কী কী প্রয়োজন, কী ভাবে বানাবেন?
উপকরণ
৩-৪ বাসি রুটি
আধ কাপ রোস্টেড ছোলার ডাল গুঁড়ো
১ কাপের এক চতুর্থাংশ চিনেবাদামের গুঁড়ো
আধ কাপ গুড় পাউডার
৩-৪ টেবিল চামচ ঘি
আধ চা চামচ এলাচের গুঁড়ো
এক চিমটে শুকনো আদার গুঁড়ো
আরও পড়ুন:
প্রণালী
বাসি রুটিগুলিকে ছিঁড়ে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। তার পর শুকনো খোলায় হালকা ভেজে নিন, যাতে রুটির অতিরিক্ত আর্দ্রতা দূর হয়ে যায়। তার পর সেগুলিকে গুঁড়ো করে নিন। মিহি করার প্রয়োজন নেই। একটি কড়াই গরম করে রোস্ট করা ছোলার ডাল গুঁড়ো এবং চিনেবাদামের গুঁড়ো ঢেলে দিন। হালকা গরম হয়ে গেলেই তার উপর ঘি মিশিয়ে দিন। এ বার রুটির গুঁড়ো মিশিয়ে খানিক ক্ষণ নাড়াচাড়া করে নিন। আগুন নিভিয়ে তাতে গুড় ও এলাচ মিশিয়ে নিন। একটানা নাড়াচাড়া করতে হবে, যত ক্ষণ গরম থাকে মিশ্রণটি। ওই তাপেই গুড় গলতে শুরু করবে। তার উপর হালকা গরম জল বা অল্প দুধ মিশিয়ে দিন। তার পর হাতের আলতো চাপে চাপে গোল করে লাড্ডু বানিয়ে নিন।
ছোলা এবং বাদামের কারণে লাড্ডুতে প্রোটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং ঘি পেট ভর্তি রাখে দীর্ঘ ক্ষণ। তা ছাড়া ঘি চর্বিতে দ্রবণীয় পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে সাহায্য করে। গুড় আয়রনের মতো খনিজ সরবরাহ করে শরীরে। ঠান্ডার সময়ে শরীরে এই খাবার চট করে শক্তি সরবরাহ করতে পারে। স্ন্যাক্স হিসেবে এই লাড্ডু খুব স্বাস্থ্যকর।