Advertisement
E-Paper

পালঙ্কে ঘুম, রাজকীয় ভোজ, রাজারানির মতো আয়েস করা যায় এমন ঠিকানা আছে কাছেই

রাজা না হয়েও রাজকীয় মেজাজে একটি দিন কাটাতে চান? চাইলেই কিন্তু এমন শখ পূরণ হতে পারে। কলকাতার অনতিদূরে রয়েছে এমনই তিন প্রাসাদোপম ভবন, যেখানে থেকে ছুঁয়ে দেখতে পারেন ইতিহাস।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:০৮
বেড়ানোর সঙ্গে রাজকীয় দিন যাপনের সুযোগও মিলবে, সপ্তাহশেষে ভ্রমণের জন্য জেনে নিন তিন ঠিকানা। ছবিটি পঁচেটগড় রাজবাড়ির।

বেড়ানোর সঙ্গে রাজকীয় দিন যাপনের সুযোগও মিলবে, সপ্তাহশেষে ভ্রমণের জন্য জেনে নিন তিন ঠিকানা। ছবিটি পঁচেটগড় রাজবাড়ির। ছবি: সংগৃহীত।

আচ্ছা একটি দিন যদি অন্য ভাবে কাটে, ঠিক রাজরাজড়ার মতো, তবে কেমন হয়? কাঁসার থালায় থরে থরে সাজানো থাকবে রাজকীয় ভোজ, খাওয়া শেষে এক খিলি পান চিবোতে চিবোতে নরম গদির পালঙ্কে শুয়ে দিবা নিদ্রা যাবেন। কী ভাবছেন, হলে মন্দ হয় না?

রাজা নেই। রাজ্যপাটও নেই। তবে রয়েছে এমন কিছু বাড়ি, যেখানে গিয়ে রাজকীয় মেজাজে কাটানো যায় দিন কয়েক। ছুঁয়ে দেখা যায় ইতিহাস। ঘুরে দেখা যায় সুবিশাল প্রাসাদোপম ভবন। কলকাতা থেকে বিশেষ দূরেও নয় সেই সব স্থান। এমনই তিন জায়গার সন্ধান জেনে নিন।

বালাখানার হেরিটেজ হোম স্টে

ঠিক রাজবাড়ি না হলেও, রাজকীয় মেজাজে সময় কাটানোর এবং খাওয়াদাওয়ার সুযোগ রয়েছে এখানে।

ঠিক রাজবাড়ি না হলেও, রাজকীয় মেজাজে সময় কাটানোর এবং খাওয়াদাওয়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। ছবি: সংগৃহীত।

যত্নে সাজানো বাগান। আম, জামের পাশে রয়েছে রকমারি ফুলের গাছ। তারই মধ্যে দিয়ে গাড়ি চলা পথ পৌঁছেছে প্রাসাদোপম ভবন পর্যন্ত। নদিয়ার মহেশগঞ্জের বালাখানার পালচৌধুরীদের এই বাড়ি এখন ‘হেরিটেজ হোম স্টে’। বিদেশি স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত সুবিশাল ভবন। সাদা থামওয়ালা বিশাল বারান্দা শুরুতেই। ভিতরে একের পর এক ঘরে পুুরনো জিনিস, পুরনো আমলের আসবাব। জানা যায়, এই বাড়ি এক সময়ে ছিল নীলকুঠি। ১৮৮২ সালে ব্যবসায়ী পালচৌধুরীদের হাতে আসে সেটি। ঠিক রাজবাড়ি না হলেও, রাজকীয় মেজাজে সময় কাটানোর এবং খাওয়াদাওয়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। উপভোগ করতে পারেন আশপাশের গ্রামীণ পরিবেশ। ১৬ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে বাগান, চাষজমি, পুকুর। কাছেই জলঙ্গী নদীতে নৌবিহারও করতে পারেন। নিরালায় নিজের মতো করে সময় কাটানোর জন্য এই জায়গা আদর্শ।

কী ভাবে যাবেন: শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে কৃষ্ণনগর গিয়ে সেখান থেকে নবদ্বীপ রোড ধরে গাড়িতে যেতে পারেন জায়গাটিতে। কলকাতা থেকে সরাসরি গাড়িতেও যাওয়া যায়।

পঁচেটগড় রাজবাড়ি

ছাদ থেকে এমনই দেখায় পঁচেটগড় রাজবাড়ি।

ছাদ থেকে এমনই দেখায় পঁচেটগড় রাজবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।

পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকে রয়েছে পঁচেটগড় রাজবাড়ি। এই বাড়ির দ্বারও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাসোদপম সাদা ভবনটি আসলে দাস মহাপাত্র পরিবারের। শোনা যায়, এই পরিবারের পূর্বপুরুষ ছিলেন বিখ্যাত সেতার বাদক। প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ যদুনাথ ভট্টাচার্যেরও এই বাড়িতে যাতায়াত ছিল। বাড়ির ভিতরে প্রশস্ত চত্বর, সারি দেওয়া ঘর। বৈভব না থাকলেও, আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। রাজবাড়ির অলিন্দে কিংবা জলসাঘরে পা রেখে পর্যটকেরা উপলব্ধি করতে পারবেন এই বাড়ির নানা কথা ও কাহিনি। এই বাড়ির ঠাকুর দালানে প্রতি বছর দুর্গাপুজো হয়। জলসাঘরে সেতার ও যদুভট্টের এসরাজ এবং গানের খাতা এখনও ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে। পঁচেটগড় রাজবাড়ির ভিতরেই রয়েছে কিশোরাই জিউয়ের মন্দির। ঝুলনের সময় ঘটা করে সেখানে উৎসবও হয়।

কী ভাবে যাবেন? কলকাতা থেকে ঘণ্টা চারেকের মধ্যেই পৌঁছে যেতে পারেন সেখানে। কলকাতা থেকে ১১৬বি জাতীয় সড়ক ধরে দিঘা যাওয়ার পথে, বাজকুল ও এগরা সড়কে ৫৫ কিলোমিটার এলে পঁচেট বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে গ্রামীণ পাকা সড়ক ধরে গাড়িতে ১০ মিনিট এগোলেই পঁচেটগড় জমিদার বাড়ি। বাসে কাঁথি এসে সেখান থেকে গাড়িতেও পৌঁছতে পারেন সেখানে।

ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি

 রাজা নরসিংহ মল্লদেব ১৯৩১ সালে পুরানো রাজবাড়িকে ঘিরে এই নতুন রাজবাড়ি বানান।

রাজা নরসিংহ মল্লদেব ১৯৩১ সালে পুরানো রাজবাড়িকে ঘিরে এই নতুন রাজবাড়ি বানান। ছবি: সংগৃহীত।

আপনি কি দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন ছবিটি দেখেছেন? তা হলে এই বাড়ির আনাচ-কানাচ হয়তো খানিক চোখে পড়েছে। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে এক সময়ে সন্ন্যাসী রাজার মতো ছবিরও শুটিং হয়েছে। উত্তম কুমার থেকে শুরু করে এসেছেন, থেকেছেন অনেক নামী ব্যক্তিত্বও। দু’টি দিন রাজকীয় পরিবেশে থাকতে চাইলে গন্তব্য হিসাবে বেছে নিতে পারেন এই স্থান। তবে রাজবাড়িতে চাইলেও কেউ প্রবেশের অনুমতি পান না। শুধুমাত্র যাঁরা রাজবাড়ির সদস্য দ্বারা পরিচালিত ‘হেরিটেজ় হোটেলে’ থাকেন তাঁদেরই ভিতরে যাওয়ার ছাড়পত্র থাকে। জানা যায়, মাল রাজাদের হারিয়ে রাজা মান সিংহের বিশ্বস্ত কর্মকর্তা সর্বেশ্বর সিংহ চৌহান বর্তমান রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। সেই বংশেরই রাজা নরসিংহ মল্লদেব ১৯৩১ সালে পুরানো রাজবাড়িকে ঘিরে এই নতুন রাজবাড়ি বানান। ৭০ বিঘা জমির উপর তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই রাজবাড়িতে ইউরোপীয় ও মোগল স্থাপত্যের ছাপ স্পষ্ট।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া থেকে ট্রেনে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে নেমে অটো ধরে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি যেতে পারেন। কলকাতা থেকে সড়ক পথে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ১৭৫ কিলোমিটাক। ঘণ্টা চারেকের মধ্যে কোলাঘাট, ডেবরা, খড়গপুর হয়ে সেখানে পৌঁছনো যায়।

Travel Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy