একাই যান বা দল বেঁধে, মহিলারা বেড়াতে যাবেন, পথে কি বিপদ-আপদের অভাব? সঙ্গে এক জন ‘পুরুষমানুষ’ না থাকলে কি চলে? সে দিনেদুপুরে গৃহবধূর বাপের বাড়ি যাওয়াই হোক বা পুজোর সময়ে ঠাকুর দেখা— সঙ্গে কিশোর ছেলে থাকলেও চলবে। তবু থাকতেই হবে। কারণ সে যে পুরুষ!
এই ভাবনাতেই দীর্ঘ দিন বেঁচেছে সমাজ। কাজের সূত্রে এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়া হোক বা দেশভ্রমণ কিংবা তীর্থযাত্রা— মহিলাদের পুরুষেরাই পথ দেখাবেন, বেড়ানোর দায়িত্ব নেবেন এমনটাই তো হয়ে এসেছে। কিন্তু সেই ভাবনায় বদলের ছবি গত এক দশক ধরে। স্বামী-সংসার রেখে মহিলারা নিজেদের মতো বেরিয়ে পড়ছেন, হিল্লি-দিল্লি করে বেড়াচ্ছেন। যাঁরা পারছেন একলা যাচ্ছেন। আর যাঁরা একা বেরোতে ভরসা পাচ্ছেন না, তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন অন্য মহিলারা।
এত দিন যে মেয়েরা মেয়েদের শত্রু বলে সমাজ চিহ্নিত করেছে, সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলে দেখা যাবে, বেড়াতে যেতে, ছুটির দিনে হইহই করে কাটাতে মহিলারা ভরসা করছেন অন্য মহিলাদের উপরেই। ভ্রমণ সংক্রান্ত ট্যুরের খোঁজখবর করার সময়ে তাঁরা স্পষ্টত উল্লেখ করছেন, যেতে চান শুধু মহিলা দলেই। এক সময়ে যে পুরুষদের মনে করা হত মহিলাদের ‘সুরক্ষা-কবচ’ বলে, এখন কিন্তু তাঁরাও দিব্যি ভরসা করছেন মহিলা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। তাঁরাও দায়িত্ব নিয়ে ঘুরিয়ে আনছেন নারী-পুরুষ ভেদে বিভিন্ন বয়সি, বিভিন্ন পেশার মানুষজনকে।

বেড়াতে যাওয়ার জন্য কেন মহিলা দলই খুঁজছেন মহিলারা? ছবি: সংগৃহীত।
এক দিকে যেমন মহিলা পর্যটন ব্যবসায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমন তৈরি হচ্ছে শুধু মহিলাদের নিয়ে বেড়ানোর দল। কিন্তু প্রশ্ন হল, মহিলা পর্যটন দল নিয়ে বাড়তি উৎসাহ কেন? যাঁরা নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে ঘুরতে পারেন না, তাঁদের জন্য ট্রাভেল এজেন্সি তো রয়েছে। পুরনো, বিশ্বস্ত, নামী অনেক প্রতিষ্ঠানই শহর থেকে শহরতলিতে ছড়িয়ে রয়েছে। একা মহিলারাও এমন ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে নিশ্চিন্তে বেড়াতে পারেন। তা হলে কী এমন হল, যেখানে একলা, সংসারী, বিধবা কিংবা অবসরপ্রাপ্ত মহিলারা বেছে নিচ্ছেন কোনও মহিলা দলকেই? এমন কয়েকটি দলের উদ্যোক্তা এবং ভ্রমণকারী বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে তারই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করল আনন্দবাজার ডট কম।
দিনবদলের দিনলিপি
মহিলামহলের একত্রে ভ্রমণের চল কি একেবারেই নতুন? তা কিন্তু নয়। অতীতেও অনেক মহিলাই একসঙ্গে রাজ্য, দেশ ভ্রমণ করেছেন। একলাও যে তাঁরা বেরিয়ে পড়েননি, তা নয়। তবে সেই সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী মহিলাদের মধ্যেই এ ভাবে ঘুরে বেড়ানোর প্রবণতা ছিল বেশি।
ঘোরা-বেড়ানোর জন্য মহিলারা বিয়ের আগে বাবা, মা, পরিবার এবং বিয়ের পরে স্বামীকে ভরসা করে এসেছেন। আর বয়স হলে তাকিয়ে থেকেছেন সন্তানের দিকে। অবিবাহিত মহিলারাও বেড়ানোর শখপূরণে সঙ্গী হয়েছেন ভাই-ভাজ, জা কিংবা অন্য আত্মীয়দের।
আরও পড়ুন:
কিন্তু এখন সেই চেনা ছবি পাল্টেছে অনেকটাই। পরিবার নয়, স্বামী নয়, এমনকি সন্তানও নয়, মহিলাদের অনেকেই বিদেশ-বিভুঁইয়ে বেড়ানোর জন্য বেছে নিচ্ছেন মহিলা দল। সেই তালিকায় গৃহবধূ যেমন আছেন, তেমনই আছেন অবিবাহিত মহিলারাও। কিন্তু আগেও তো বেড়ানো ছিল। বিধবা হোক অবসারপ্রাপ্ত মহিলারা বেড়াতে যেতেন ঠিকই, কিন্তু তা নিয়ে এমন হইহই ব্যাপার ছিল কি!
তা হলে বদল কি মনন, চিন্তনে? না কি মহিলাদের স্বনির্ভর হয়ে ওঠার প্রবণতাও এর নেপথ্যকারণ! আর কেনই বা তাঁদের অনেকে মহিলা দলকেই বেছে নিতে চাইছেন?
নারীদের মনের কথা
গত দু’-তিন বছরে মহিলা পর্যটন দলের সংখ্যা বেশ বেড়ে উঠেছে অনেকটাই। সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলেই দেখা যায় তার প্রমাণ। প্রায় প্রতিটি দলেই কমবেশি বেড়েছে সদস্যসংখ্যা। বছরভরই তাদের বেড়ানোর কর্মসূচি থাকছে।
এমনই একটি দল শুরু করেছিলেন হুগলির রিষড়ার চুয়া ভট্টাচার্য এবং পিয়ালি সিংহ। দু’জনেই ঘোরতর সংসারী। বছর দুই হল বাণিজ্যিক ভাবে মহিলাদের নিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমন দলের ভাবনা নিয়ে চুয়া বলছেন, ‘‘বিয়ের আগে বাবা, বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ঘুরেছি। কিন্তু ওঁদের সঙ্গে যাওয়া মানে কোথাও যেন তাঁদের কথাই মেনে চলতে হয়। নিজের মতো করে ঘোরা পুরোপুরি হয়ে ওঠে না। সেই আক্ষেপ একটু ছিল।’’ প্রথম বার চার মহিলা বন্ধু মিলে তাজপুর গিয়েছিলেন। সেই শুরু। নিজের শর্তে, নিজের স্বাধীনতায় ঘোরার আনন্দ উপভোগের পর আর থামেননি। প্রথমে গল্প, আড্ডার জন্যই মহিলা দল তৈরি করেছিলেন। চুয়ার কথায়, ‘‘বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের সঙ্গে দেখা, আড্ডা, খেতে যাওয়া, ঘোরার পর কোথাও যেন মনে হল অনেকেই ভীষণ একা। তাঁরাও আনন্দ করতে চান, কিন্তু সঙ্গী-সাথীর অভাবে সুযোগ পান না। সকলে মিলে ঘুরলে, বেড়ালে কেমন হয়?’’

মহিলা দলে কেন বাড়ছে সদস্যসংখ্যা? ছবি: সংগৃহীত।
সেই শুরু। সাধারণ গৃহবধূ থেকে বছর দুয়েকে চুয়া, পিয়ালি এখন হয়ে উঠেছেন পর্যটন ব্যবসায়ী। প্রতি মাসে একাধিক ছোট-বড় ট্যুর থাকে তাঁদের।
তা হলে কি এত দিন মনের মধ্যে থাকা অপূর্ণতা নিয়েই মহিলাদের দিন কাটছিল? নিজের মতো করে, নিজের শর্তে বেড়ানোর টানেই কি একজন মহিলা, এমন দলের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছেন? শ্রীরামপুরের মহুয়া ভট্টাচার্য বেড়াতে গিয়েছেন ‘ট্রিপ উইথ উওমেন’ দলের সঙ্গে। স্বামী, সন্তান নিয়ে সংসার। নিজেও ব্যবসা করেন। বললেন, ‘‘কুন্ডু স্পেশ্যালের মতো নামী ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে বেড়িয়েছি আগে। স্বামী, সন্তানের সঙ্গেও ঘুরি। কিন্তু মহিলাদের দলে বেড়াতে গিয়ে যে ভাবে মন খুলে কথা বলতে পারি, আনন্দ করতে পারি, বলে বোঝাতে পারব না। আড্ডা, হইহই, ঘোরা— কখনও যেন মনে হয় কলেজের সেই দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছি। স্বামী-পরিবারের সঙ্গে ঘোরা উপভোগ করি, তবে ক্রমশ পরিবার হয়ে ওঠা মহিলা দলের সদস্যদের সঙ্গে ঘুরতে খুব ভাল লাগে।’’
তবে কি পরিবার, স্বামীর সঙ্গে বেড়ানোর পরেও কারও কারও মনে কোনও অপূর্ণতা থাকে, যা এমন দলে গেলে পূর্ণ হয়? বছর দুই-তিন হল পর্যটন ব্যবসা সামলাচ্ছেন মৌটুসি পাল। তাঁর ‘মেঘবালিকা’ পথচলা শুরু করেছিল কয়েক জন মাত্র মহিলা নিয়ে। এখন তা আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছে। মৌটুসির কথায়, ব্যস্ততার জন্য স্বামী সব সময়ে বেড়াতে যেতে পারতেন না। ফলে মেয়েকে নিয়ে নিজেই বেরিয়ে পড়তেন তিনি। এ জন্য লোকজনের ব্যাঁকা কথাও শুনতে হয়েছে। এক সময়ে তাঁর মনে হয়, যাঁদের স্বামী ব্যস্ত বলে স্ত্রীদের ঘোরা হয় না, যাঁরা একলা বেরিয়ে পড়ার সাহস করে উঠতে পারেন না, তাঁদের যদি বেড়ানোর সুযোগ দেওয়া যায়? তা ছাড়া মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে গিয়ে বুঝেছিলেন কম জনে বেড়ানোর খরচও বেশি হয়। সেই ভাবনা থেকেই তাঁর সংস্থার পথ চলা। এখন আর শুধু মহিলারা নন, বরং পরিবার নিয়েও তাঁর সঙ্গে বেড়াতে যান অনেকে।
আরও পড়ুন:
কারও জীবনে সঙ্গীর অভাব, কারও আবার একলা ভ্রমণের জন্য সাহস বা আত্মবিশ্বাস নেই, কেউ আবার একলা ঘোরায় আনন্দই পান না। দিনের শেষে কথা বলার লোকও তো চাই, বলছিলেন কেষ্টপুরের সোমা রায়। ব্যবসা করেন তিনি। অবিবাহিত। একাধিক মহিলা দলের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন। মহিলা ছাড়া কি অন্য ভ্রমণ সংস্থা বেছে নেওয়া যায় না? সোমার বক্তব্য, “মহিলাদের সঙ্গে মন এবং মানসিকতার মিলমিশ হয়ে গেলে, গল্প করা যায় আশ মিটিয়ে। গান, বাজনা, হুল্লোড় মহিলামহলে যতটা হয়, অন্য দলে হয়তো তেমন হবে না। কোনও সমস্যা হলেও মহিলাদের যতটা সহজে তা বলা যায় বা তাঁরা যেটা বুঝবেন, অন্য দলে কি সেটা হবে?”
এমনও অনেকে আছেন বেড়ানোর জন্য স্থান নির্বাচন, ঘর, গাড়ি বুকিং-এর ঝক্কি নিতে চান না। কেউ আবার বেড়ানোর সঙ্গী চান। এই সব অভাব পূরণের জন্যই কি ভ্রমণ সংক্রান্ত দলগুলির জনপ্রিয়তা বাড়ছে?
বিবাহবিচ্ছিন্না, বিধবা মহিলারা, পুরুষেরাও রয়েছেন এমন দলে বেড়াতে গেলে কেউ যে ব্যাঁকা চোখে দেখবেন না বা তির্যক মন্তব্য করবেন না, তা-ও তো নয়! লোকজনের কথায় কী যায়-আসে যতই বলা হোক না কেন, থাকতে হয় তো সেই সমাজেই। লাবণী আশও একাধিক বার ঘুরে এসেছেন একটি মহিলা দলের সঙ্গেই। তিনি বললেন, ‘‘বাড়ি থেকে একা এমনিতেই কোথাও ছাড়তে চায় না। নিজে একা কখনও বেড়াতে যাইনি। তার উপর বিবাহবিচ্ছেদের ধাক্কা। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছিল কোথাও ঘুরে এলে একটু শান্তি পাব। মহিলা দলের সঙ্গে বেড়ানোর সুযোগ বলেই বাড়ির লোককে রাজি করাতে পেরেছি। চেনা মহিলারা থাকায় বাবা-মাও ভরসা করে ছাড়তে পেরেছেন।’’
বিপদও সামলাতে পারেন নারী?
মন খুলে গল্প করা এক জিনিস। হইহই করা, ঘোরা-বেড়ানো আনন্দের ঠিকই, কিন্তু বিপদ-আপদ হলে সামলাবে কে? বিশেষত সকলেই যেখানে মেয়ে। কথা হচ্ছিল ‘নাড়ির টানে নারীর ভ্রমণ’-এর অন্বেষা ঘোষের সঙ্গে। তিনি এবং তাঁর বান্ধবী মহিলাদের ঘোরাতে নিয়ে যান। জানালেন, কার্যক্ষেত্রে একাধিক বার প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। সামলেছেনও। হিমাচল প্রদেশের কাজায় গিয়ে দলে বেড়াতে আসা এক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে অক্সিজেন দিয়েও লাভ হয়নি। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর দরকার ছিল। কিন্তু লাহুল, স্পিতির মতো জায়গায় রাতবিরেতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সহজ কথা নয়। তা ছাড়া, সেটাও তো আর কাছেপিঠে নয়। কিন্তু দ্রুত সমস্ত ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন তাঁরা। যথাসময়েই চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা গিয়েছিল। তাঁর কথায়, মহিলারাও যে প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন, সেই ভরসাটা থাকছে বলেই হয়তো মহিলা দলের সদস্যসংখ্যা বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
এমনই একটি দলের সাহচর্যে কার্যত নতুন জীবন খুঁজে পেয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব কৃষ্ণা ভাওয়াল। আন্দামানে জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে তাঁর। তিনি বললেন, ‘‘স্বামী মায়াবন্দরে চাকরি করতেন। পড়াশোনার জন্য ছেলেদের নিয়ে আমাকে থাকতে হত পোর্টব্লেয়ারে। মাসে এক দিন স্বামী বাড়ি আসতেন। যখন উনি অবসর নিলেন, ভেবেছিলাম এ বার তাঁর সঙ্গে থাকা হবে। ছেলে তত দিনে ডাক্তার হয়েছে। এ বার সুখের সময়। আর ঠিক তখনই তিনি মারা গেলেন। ধাক্কাটা সামলাতে পারিনি।’’ একলা মহিলার কাছে থাকার কেউ ছিল না। ছেলেরা মাকে কলকাতা নিয়ে আসেন। মা যাতে আর পাঁচজনের সঙ্গে গল্প, ঘোরাঘুরি করে কাটাতে পারে, সে জন্য সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন ভ্রমণ দলের সদস্য করে দেন মাকে। কৃষ্ণার কথায়, প্রথম দিকে এমন একাধিক দলে কথাবার্তা হচ্ছিল যেখানে নারী-পুরুষ সকলেই আছেন। কিন্তু তিনি বিধবা জানার পর এক জন পুরুষের কাছ থেকে এমন একটি বার্তা পান, যা বেশ অস্বস্তিকর। সে কথা ছেলেকে জানাতেও বাধ্য হন তিনি। তার পরেই ছেলের পরামর্শে মহিলা দলের সঙ্গে যোগাযোগ। কৃষ্ণার কথায়, ‘‘ছোট থেকে বড়— বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের কাছে কী করে প্রিয় হয়ে উঠলাম, জানি না। ওদের সঙ্গে হাসি-আনন্দ, ঘোরায় বেশ কেটে যায়। এখন আমি সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি।’’ এমন ভাবে মহিলা দলের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব তাপসী নিয়োগীও। সংসারের সকলেই ব্যস্ত নিজেদের মতো করে। এমন দলে সমবয়সি সঙ্গী পেয়ে খুশি তিনিও।
তবে কি মহিলা দল বেড়ানোর চেয়েও বেশি কিছু? একাকিত্বের যন্ত্রণা মোছানোর উপায়? প্রাণ খুলে বাঁচার রসদ?