একা একা বাঁচার চেয়ে জেলের ঘানি টানা অনেক ভাল। তাই স্বেচ্ছায় অপরাধ করে জেলে যান এক বৃদ্ধা। দারিদ্র এবং একা থাকার ভয়— এই দুই কারণে ৮১ বছর বয়সি এক জাপানি বৃদ্ধা ইচ্ছাকৃত ভাবে আইন ভঙ্গ করেছেন একাধিক বার। একা বাঁচতে ভয় পান, তাই হাজতবাসেও আপত্তি নেই তাঁর। জেলের গরাদের পিছনে বসে নিশ্চিন্তে বাকি জীবন কাটাতেই চেয়েছিলেন আকিয়ো নামের সেই বৃদ্ধা। দু’বেলার খাবার ও মাথার উপর নিশ্চিন্ত আশ্রয় পাওয়ার জন্যই তিনি দ্বিতীয় বারের জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে চুরি করে গ্রেফতার হন কয়েক বছর আগে। ৬০ বছর বয়সে প্রথম বার খাবার চুরির অভিযোগে সাজা পান আকিয়ো।
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর দু’মাসে এক বার পাওয়া পেনশনের উপর নির্ভর করে চলতে হত তাঁকে। পারিবারিক সহায়তার অভাবে আবার চুরির পথই বেছে নেন বৃদ্ধা। চুরির অপরাধে জেলে যাওয়ার আগে নিজের ৪৩ বছর বয়সি পুত্রের সঙ্গে থাকতেন তিনি। নিজের সন্তানও মাঝেমধ্যেই তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ার ভয় দেখাতেন। সে কারণে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যাওয়ার ভয় ঢুকে যায় ওই বৃদ্ধার মনে। সেই হতাশা থেকেই তিনি বার বার চুরির সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের সহায়তার অভাব ও দারিদ্র থেকে তাঁর এক সময় মনে হয়েছিল, বেঁচে থেকে আর কোনও লাভ নেই। শুধু মৃত্যুচিন্তাই ঘুরেফিরে আসত আকিয়োর। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছিলেন, আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল থাকলে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করলে তিনি কখনওই চুরির মতো কাজ বেছে নিতেন না।
৮১ বছর বয়সে দ্বিতীয় বারের সাজা ভোগ করার পর জাপানের তোচিগি মহিলা কারাগার থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবরে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। তাঁর ছেলে কী মনে করবেন, সেই নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন বৃদ্ধা। মহিলা কারাগারে প্রায় ৫০০ বন্দি থাকেন। এঁদের প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে এক জন বৃদ্ধা। তাঁদের দেখাশোনার জন্য রয়েছেন কর্মীরা। এখানকার ব্যবস্থাপনা প্রায় হাসপাতালের মতোই। তাই একা আকিয়ো নন, তাঁর মতো আরও অনেকেই নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে না পেরে কারাগারের ভিতরে জীবন কাটানোকেই নিরাপদ বলে মনে করছেন।