মৃত্যুর পর কী হয়? মৃত্যুর পরের সেই জগতের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। বহু মানুষই মৃত্যুকে ছুঁয়ে ফিরে আসার মতো অবস্থার সম্মুখীন হন যা তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলে দেয়। মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনার পর ‘পরকালের দর্শন’ করেছিলেন, সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন এক তরুণ। সেই ঘটনার পর নাটকীয় ভাবে পরিবর্তিত হয় তাঁর জীবন। নিজের লেখা একটি বইয়ে সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন জেফ্রি ওয়েলসন নামের ওই তরুণ।
বইয়ে তিনি লিখেছেন, ১৯৯৭ সালে এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রী তামারা, ১৪ মাস বয়সি ছেলে গ্রিফিনকে হারান জেফ্রি। বেঁচে যান তিনি ও সাত বছরের ছেলে স্পেনসার। গাড়ি চালানোর সময় মুহূর্তের জন্য তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় ঘটে যায় ভয়াবহ বিপর্যয়। গাড়িটি উল্টে যায়, তামারা এবং গ্রিফিন সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। গুরুতর আহত হন জেফ্রিও। তাঁর মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। একটি পা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে তা কেটে ফেলতে হয়। একটি হাতও খোয়া যায় তাঁর। দুর্ঘটনার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
জেফ্রি দাবি করেছিলেন যে, এই সময়ে অচেতন অবস্থায় তিনি একটি অনন্য অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, একটি উষ্ণ, উজ্জ্বল আলো যেন ঘিরে রেখেছিল তাঁকে। তার পর তিনি আলোর মধ্যে তাঁর স্ত্রী তামারাকে দেখতে পান। তামারা নাকি সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ছিলেন সেই সময়। তিনি জেফ্রিকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি এখানে থাকতে পারবে না। তোমায় ফিরে যেতে হবে। স্পেনসারের তোমায় প্রয়োজন।’’ ট্রমা সেন্টারে জেফ্রি এর পরের মুহূর্তটি মনে করলে এখনও শিউরে ওঠেন। ক্ষতিগ্রস্ত শরীরের দিকে তাকিয়ে তিনি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছিলেন। অপরাধবোধে ভুগতে শুরু করেন।
ছ’মাস হাসপাতালে থাকার সময় জেফ্রির ১৮টি অস্ত্রোপচার হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় এক দিন রাতে, আরও একটি অতিপ্রাকৃতিক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। আলোর ছটায় ঘিরে গিয়েছিল তাঁর আশপাশ। সেখানে তিনি তাঁর মৃত ছেলে গ্রিফিনকে দেখতে পান। গ্রিফিন দোলনায় দুলছিল। জেফ্রি কোলে নিয়ে গ্রিফিনের উপস্থিতি অনুভব করেন। ছেলের মাথায় চুমু খেয়ে তাকে শুইয়ে দিতেই সেই আলো মিলিয়ে যায় বলে বইয়ে উল্লেখ করেছেন লেখক। এই অভিজ্ঞতাগুলিই নাকি জেফ্রিকে বেঁচে থাকার শক্তি জুগিয়েছিল। দুর্ঘটনার ২৮ বছর কেটে যাওয়ার পর জেফ্রির ছেলে স্পেনসার তাঁর সঙ্গেই থাকেন। স্পেনসার এখন বিবাহিত এবং তাঁর একটি সন্তানও হয়েছে বলে লিখেছেন তিনি।
তবে জেফ্রির এই দাবি মানতে অনেকেই নারাজ। অনেকে একে মনের বিভ্রম বলেছেন। কেউ আবার একে বই বিক্রির পন্থা বলেও কটাক্ষ করেছেন।