সপরিবার বেড়ানোর সাধপূরণ হয়েছে অশোক আলিসেরিল থমরক্ষণের। ছবি: জন ম্যাকলেলান।
লকডাউনে কার্যত ঘরবন্দিকালে অনেকেই তো নতুন নতুন শখ মিটিয়েছেন। কেউ আঁকা শিখেছেন। কেউ বা আবার গানবাজনায় নতুন করে নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন। তবে জমানো টাকা খরচ করে আস্ত একখানা বিমান তৈরি করেছেন কি? তেমনটাই করে দেখিয়েছেন লন্ডননিবাসী এক ব্যক্তি। আজকাল ওই বিমানে চেপেই সপরিবার ইউরোপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেরলের প্রাক্তন বিধায়ক-পুত্র।
অশোক আলিসেরিল থমরক্ষণ আদতে কেরলের আলাপুঝার বাসিন্দা। বি টেক ডিগ্রি লাভের পর উচ্চশিক্ষার জন্য ২০০৬ সালে লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি। পড়াশোনা শেষে সেখানেই বসবাস করতে শুরু করেন। লকডাউনে আরও অনেকের মতো তাঁর জীবনও কার্যত থমকে গিয়েছিল। তবে সে সময় চুপচাপ বসে না থেকে দিনরাত খেটে গিয়েছেন তিনি। বিমানে চেপে বেড়ানোর শখ মেটাতে গড়ে ফেলেছেন চার আসনের একটি বিমান। সবই জমানো টাকায়!
চার আসনের ওই বিমানটি তৈরি করতে অশোকের খরচ হয়েছে ১ কোটি ৪ লক্ষ টাকা। সময় লেগেছে প্রায় ১৮ মাস। এর পরই আন্তর্জাতিক চোখে পড়ে গিয়েছেন কেরলের প্রাক্তন বিধায়ক এ ভি থমরক্ষণের ছেলে অশোক। নিজে হাতে বিমান তৈরির অনুভূতি কেমন? ব্রিটেনের ‘দ্য সান’-এর কাছে সাক্ষাৎকারে অশোক বলেন, ‘‘নতুন কোনও গ্যাজেট কেনার থেকেও বেশি উত্তেজনার অনুভূতি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বরাবর শখ ছিল, নিজের একটা প্লেন থাকবে। সেই প্লেন তৈরি করার জন্য লকডাউনে টাকাও জমাতে শুরু করেছিলাম। ভাবলাম, চেষ্টা করেই দেখা যাক না!’’ অশোক জানিয়েছেন, ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিবেগে উড়তে পারে এই বিমানটি। ফি-ঘণ্টায় তাতে জ্বালানি লাগে ২০ লিটার। এক ইঞ্জিনের বিমানটির নামও রেখেছেন ছোট মেয়ে দিয়ার নামে— জি দিয়া।
লকডাউনের আগেই অবশ্য বিমানচালকের লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছিলেন অশোক। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে ওই লাইসেন্স পাওয়ার পর দুই আসনের বিমানে চেপে পরিবারের সঙ্গে টুকটাক ঘুরতে যেতেন। তবে দুই মেয়ে হওয়ার পর দু’আসনের বিমানে কুলিয়ে উঠত না। তা হলে স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বেড়ানোর ইচ্ছেপূরণ হবে কী ভাবে? সেই থেকেই চার আসনের বিমান তৈরির চিন্তা-ভাবনা শুরু। ১৮ মাসে প্রায় দেড় হাজার ঘণ্টা ধরে খেটে অবশেষে নিজের সাধপূরণ করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক-পুত্র!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy