টানা বৃষ্টির ফলে রাস্তায় জল জমে যায়। তার ফলে যাতায়াতের জন্য অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। পাশাপাশি এমন পরিস্থিতিতে গাড়ির চালকেরাও অস্বাভাবিক ভাড়া দাবি করেন। সে কারণে যাতায়াতের জন্য খরচও হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত। তাই চাকরির সন্ধান করতে এসে অফিসের ঊর্ধ্বতনের কাছে ‘বর্ষাকালীন ভাতা’র শর্ত রাখেন তরুণ। তরুণের দাবি শুনে অবাক হয়ে যান সেই সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মী। সে কথাই সমাজমাধ্যমের পাতায় লিখে জানান তিনি (যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
আরও পড়ুন:
‘আর/ইন্ডিয়ানওয়ার্কপ্লেস’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে রেডিটের পাতায় একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেই পোস্টে দিল্লির এক বেসরকারি সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগের এক জন ঊর্ধ্বতন কর্মী তাঁর অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। পোস্টে লিখে তিনি জানান যে, সম্প্রতি তিনি এক তরুণের ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন। চাকরির সন্ধানে এসে অদ্ভুত শর্ত রেখে বসেন সেই তরুণ।
ঊর্ধ্বতনের দাবি, ইন্টারভিউ চলাকালীন তরুণের কোনও জিজ্ঞাস্য রয়েছে কি না তা প্রশ্ন করেছিলেন তিনি। ঊর্ধ্বতনকে অবাক করে দিয়ে সেই তরুণ বলেন, “আমার বর্ষাকালীন ভাতা চাই। যাতায়াতের জন্য খরচ বেশি পড়ছে।” মানবসম্পদ বিভাগের সেই ঊর্ধ্বতন ভাবছিলেন যে, তাঁর সঙ্গে তরুণ মজা করছেন। তাঁর হয়তো চাকরির বিশেষ কোনও প্রয়োজন নেই। সে কারণেই এমন উদ্ভট দাবি করে বসেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
কিন্তু তরুণ জানান যে, তিনি ভাতার বিষয়টি একেবারেই ঠাট্টা-তামাশার নজরে দেখছেন না। দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সেই তরুণ বলেন, “বর্ষাকালে রাস্তাঘাটে জল জমে যায়। অনলাইনে ক্যাব বুক করতে গেলে সেই সময় অতিরিক্ত ভাড়া দেখায়। অন্য সময় সেই একই জায়গায় যাতায়াতের জন্য অনেক কম ভাড়া নেয়। কিন্তু বর্ষার সময় গাড়িভাড়ার কোনও ঠিকঠিকানা থাকে না।”
তরুণ আরও শর্ত রাখেন যে, যদি সংস্থার তরফে বর্ষাকালের জন্য আলাদা ভাবে ভাতা দেওয়ার কোনও নিয়ম না থাকে তা হলে তাঁকে যেন বৃষ্টির দিনগুলিতে বাড়ি থেকে কাজে বসার অনুমতি দেওয়া হয়। যদি বাড়ি থেকেও কাজে বসার নিয়মকানুন না থাকে, তা হলে যেন তরুণকে অন্তত সেই বিশেষ দিনগুলিতে দেরি করে অফিসে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। পরে সেই তরুণ নিজেই সংস্থার ঊর্ধ্বতনকে তাঁর কথার সত্যতা যাচাই করতে বলেন।
ইন্টারভিউ শেষ হওয়ার পর তরুণের কথা শুনে তিনি খরচের হিসেবনিকেশ করতে শুরু করেন। ঊর্ধ্বতনের দাবি, অন্যান্য মাসে যাতায়াত বাবদ তাঁর যে পরিমাণ খরচ হয়, জুলাই মাসে বর্ষার সময় তাঁর চেয়ে অনেক বেশি খরচ করে ফেলেছেন তিনি। বছরের অন্য মাসে তিনি যাতায়াতের জন্য যা খরচ করেন, তা জুলাই মাসের প্রথম ১৫ দিনেই শেষ করে ফেলেছেন। এমনকি, গাড়ি বুক করার অনলাইন অ্যাপ খুলেও বিষয়টি দেখান তিনি।
আগের দিন সারা রাত বৃষ্টি হওয়ার ফলে রাস্তায় জল জমে গিয়েছিল। তার ফলে গাড়ির ভাড়াও এক লাফে বেড়ে গিয়েছে বলে ঊর্ধ্বতনের দাবি। অফিস থেকে তাঁর বাড়ি পৌঁছোতে সাধারণত যা ভাড়া লাগে, তার দ্বিগুণের চেয়েও ২০ টাকা বেশি ভাড়া দেখাচ্ছিল তাঁকে। শেষমেশ তরুণের কথায় যুক্তি রয়েছে বলে স্বীকার করে নেন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মী।