জীবনে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হলে যাতে বিপদে পড়তে না হয় তার জন্যই বিমার সুরক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়। জীবনের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যেই বিমা করিয়ে রাখেন লোকজন। দুর্ঘটনা বা আঘাত পেলে যাতে আর্থিক সমস্যা দেখা না দেয় সে কারণে সকলেই অল্পবিস্তর বিমা করিয়ে রাখেন। সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে দেখা গিয়েছে বিমার টাকা আত্মসাৎ করতে নিজের জীবন বিপন্ন করেছেন এক ব্যক্তি। ১০ ঘণ্টা ধরে শুকনো বরফের বালতিতে পা ডুবিয়ে পাঁচটি বিমা সংস্থাকে প্রতারণা করার চেষ্টা করেছিলেন ঝাং নামের এক তরুণ।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে’র প্রতিবেদন অনুসারে ১০ ঘণ্টা ধরে শুকনো বরফে পা রাখার কারণে সেই ঝাং নামে এক ব্যক্তির দু’টি পা-ই কেটে ফেলতে হয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে তিনি ৫টি ভিন্ন সংস্থার থেকে বেশ কয়েকটি বিমা কিনেছিলেন। এর মধ্যে স্বাস্থ্য, জীবন, দুর্ঘটনা এবং ভ্রমণ বিমা-সহ আট ধরনের বিমা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০২৩ সালে ঝাং তাঁর সহপাঠী লিয়াওর সঙ্গে একটি বিমা সংস্থার কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য ষড়যন্ত্র করেন। ২৬ জানুয়ারি তাঁরা দু’জন শুকনো বরফ কিনে তাইপেইয়ের ঝংশান জেলায় লিয়াওর বাড়িতে চলে যান। সেখানে ঝাং তাঁর খালি পা শুকনো বরফ ভর্তি একটি বালতিতে রেখে দেন। তাঁর বন্ধু তাঁকে একটি চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। ঝাং রাত ২টো থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁর পা শুকনো বরফে রেখেছিলেন। এই সময় প্রায় ১০ ঘণ্টা শুকনো বরফে পা রাখার কারণে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে। দু’দিন পর ঝাংকে তাঁর বন্ধু হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য।
আরও পড়ুন:
চিকিৎসকেরা তাঁর পায়ের অবস্থা দেখে সেগুলি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। দু’জন বিমা সংস্থার কাছে মিথ্যা দাবি করেন যে ঝাং গভীর রাতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তুষারপাতে আটকে পড়ে পা দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। বিমার পলিসি থেকে ১২ কোটি ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন ঝাং। একটি সংস্থা দাবি মেনে নিয়ে ২ কোটি টাকা দিলেও বাকি চারটি সংস্থা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে। তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণা এবং প্রতারণায় সহায়তা করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। চলতি বছরের (২০২৫) ২০ জুন, তাইওয়ান হাই কোর্ট ঝাংকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়। মূল পরিকল্পনাকারী হিসাবে ঝাঙের বন্ধুকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।