টাকার জন্য বন্যপ্রাণী চোরাশিকার ও পাচারের কথা হামেশাই খবরের শিরোনামে উঠে আসে। সারা পৃথিবী জুড়েই বন্যপ্রাণ পাচারের চক্রের জাল ছড়িয়ে আছে। এ বার এমন একটি প্রাণী পাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যা শুনে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। এই পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বয়স মাত্র ১৯। সম্প্রতি কেনিয়ার এক আদালতে অভিযোগ উঠেছে জ্যান্ত পিঁপড়ে পাচারের। ইউরোপ ও এশিয়ায় বিদেশি প্রাণী কেনাবেচার যে বাজার রয়েছে সেখানে কেনিয়া থেকে হাজার হাজার পিঁপড়ে এনে পাচারের চেষ্টা করা হয়েছিল।
লরনয় ডেভিড এবং সেপ্পে লোডেউইজকেক্স, দু’জনেরই বয়স ১৯ বছর, ৫ এপ্রিল কেনিয়ার নাকুরু কাউন্টিতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের কাছে টেস্টটিউব এবং সিরিঞ্জে লুকিয়ে রাখা ৫ হাজার রানি পিঁপড়ে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘মেসর সেফালোটস’ প্রজাতির পিঁপড়ে। এগুলি ‘জায়ান্ট আফ্রিকান হারভেস্টার পিঁপড়ে’ নামেও পরিচিত। পিঁপড়েগুলি যাতে বেঁচে থাকে তাই টেস্টটিউব এবং সিরিঞ্জে তুলোর মধ্যে করে আনা হচ্ছিল। এই পাচার অভিযানটি সুপরিকল্পিত বলে মনে করছে কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস। তদন্তে জানা গিয়েছে যে, টেস্টটিউবগুলি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছিল যাতে পিঁপড়েরা দুই মাস পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। একই সঙ্গে যাতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়াতে পারে। আদালতের নথিতে বলা হয়েছে যে ২ হাজার ২৪৪টি বস্তায় বন্দি প্রায় ৫ হাজার রানি পিঁপড়ে আটক করা হয়েছে। এর বাজারমূল্য প্রায় ১০ লক্ষ কেনিয়ান শিলিং বা ভারতীয় মুদ্রায় ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।
আদালতে অভিযুক্তেরা অবশ্য জানিয়েছেন তাঁরা পাচার করার জন্য এগুলি নিয়ে যাচ্ছিলেন না। নিছক মজা করার জন্য পিঁপড়ে সংগ্রহ করেছিলেন। এই দুই তরুণ ছাড়াও কেনিয়ার ও ভিয়েতনামের বাসিন্দা দু’জনকে নাইরোবির আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তাঁরাও পিঁপড়ে পাচারে অভিযুক্ত বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে পিঁপড়ের অবৈধ রফতানি কেবল জীববৈচিত্রের উপরই প্রভাব ফেলছে এমন নয়, স্থানীয় সম্প্রদায় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিকে সম্ভাব্য পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করে চলেছে।