পরনে ফ্লুরোসেন্ট-সবুজ জার্সি, কালো প্যান্ট। হাতে ধরা অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় বন্দুক। আর সেই অস্ত্র হাতেই মাঠে ফুটবল খেলছেন একদল তরুণ! এমনই একটি ঘটনার ভিডিয়ো সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে। ভাইরাল হয়েছে ভিডিয়োটি। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল হাতে মাঠে ফুটবল খেলতে নেমেছেন একদল তরুণ। তাদের সকলের গায়েই রয়েছে ফ্লুরোসেন্ট-সবুজ জার্সি। জার্সির সামনে লেখা ‘সানাখাং’। আগ্নেয়াস্ত্র হাতেই মাঠের মধ্যে ঘোরাফেরা করছেন তাঁরা। কারও হাতে একে-৪৭, আবার কারও হাতে আমেরিকার তৈরি এম-সিরিজ়ের অ্যাসল্ট রাইফেল। বন্দুকগুলির ব্যারেলে একটি করে লাল ফিতে বাঁধা রয়েছে। আর সেই বন্দুকগুলি নিয়েই ফুটবল খেলছেন তাঁরা। বন্দুক হাতে পোজ়ও দিচ্ছেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নামপি রোমিও হ্যানসোং নামে এক নেটপ্রভাবী ফুটবল ম্যাচের ‘ওয়ার্মআপ’-এর ওই ভিডিয়ো প্রথম ইনস্টাগ্রাম পোস্ট করেন। মণিপুরের কাংপোকপি জেলার বাসিন্দা হ্যানসোং। কিন্তু পরে তিনি ওই ভিডিয়ো ডিলিট করে দেন। পরে হ্যানসোং আবার ইনস্টাগ্রামে ফুটবল ম্যাচের একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেখানে ওই তরুণ ফুটবলারদের বন্দুক ছাড়া খেলতে দেখা যায়। হ্যানসোং তাঁর ইউটিউব চ্যানেলেও প্রায় ছয় মিনিটের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন।
তবে যে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সেটি পোস্ট করা হয়েছে ‘মেইতেই হেরিটেজ সোসাইটি’ নামে এক্স হ্যান্ডল থেকে। সেই পোস্টে লেখা, ‘‘মণিপুরের একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ফুটবলারদের এ ভাবে অত্যাধুনিক অস্ত্রের উন্মুক্ত প্রদর্শন খুবই উদ্বেগজনক। না কি এটি কুকি জঙ্গিদের ফুটবল টুর্নামেন্ট? আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনার তদন্তের জন্য অনুরোধ করছি।’’
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভাইরাল ভিডিয়োর একটিতে দেখা গিয়েছে যে, ওই ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল কাংপোকপি জেলার একটি গ্রামে। রাজধানী ইম্ফল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে সেই গ্রাম। ভিডিয়ো দেখে মনে করা হচ্ছে যে, গত ২০ জানুয়ারি ফুটবল ম্যাচটির আয়োজন করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
ভাইরাল ভিডিয়োটিকে ঘিরে ইতিমধ্যেই হইচই পড়েছে। ভিডিয়ো দেখে কড়া প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন নেটাগরিকদের একাংশ। ফুটবল খেলার মাঠে বন্দুকের কী কাজ? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে।