Advertisement
E-Paper

বঁটি দিয়ে কেটে দে, তাপসের সুরে অরূপ-বাণী

এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়! তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের আপত্তিকর মন্তব্যে জেরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য-দেশের রাজনীতি। তারই মধ্যে বিরোধীদের (বিজেপি) ‘কেটে ফেলার’ হুঙ্কার দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী। তাপস দিয়েছিলেন বিরোধীদের গুলি করে মারার শাসানি, অরূপের মুখে এল বিরোধীদের ‘বলি’ দেওয়ার হুমকি। এবং এ সবই হয়েছে পুলিশের উপস্থিতিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩৫
বাঁকুড়ার মন্যাডি গ্রামে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পরিবারের সঙ্গে জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

বাঁকুড়ার মন্যাডি গ্রামে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পরিবারের সঙ্গে জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়!

তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের আপত্তিকর মন্তব্যে জেরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য-দেশের রাজনীতি। তারই মধ্যে বিরোধীদের (বিজেপি) ‘কেটে ফেলার’ হুঙ্কার দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী। তাপস দিয়েছিলেন বিরোধীদের গুলি করে মারার শাসানি, অরূপের মুখে এল বিরোধীদের ‘বলি’ দেওয়ার হুমকি। এবং এ সবই হয়েছে পুলিশের উপস্থিতিতে।

সোমবার বাঁকুড়া সদর থানার মন্যাডি গ্রামে গিয়ে ওই কথা বলেন অরূপবাবু। মন্যাডি গ্রামে শনিবার বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে দু’পক্ষের ১২ জন জখম হন। এ দিন অরূপবাবু গ্রামে ঢুকতেই তৃণমূল সমর্থক পরিবারের মহিলারা তাঁর কাছে নানা অভিযোগ জানান। বিজেপি-র কিছু লোক ঘরে ঢুকে মেয়েদের অত্যাচার করছে বলে ওই মহিলারা অভিযোগ করেন।

অত্যাচার চালানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে উত্তেজিত হয়ে প্রথমে বিজেপি-কে ‘যোগ্য জবাব’ দিতে না পারার জন্য উপস্থিত জনতাকে ছাপার অযোগ্য ভাষায় গালি দেন অরূপবাবু। এর পরে এ রকম ঘটনা ঘটলে কী করতে হবে, সে ‘নিদান’ও দেন হাতের মুদ্রা-সহ। কর্মীদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “শোন, তোর ঘরে যদি কোনও ব্যাটা ঢোকে, কেটে দিবি! আমি বুঝে নেব।” একটু থেমে ফের বলেন, “তোর ঘরে যদি বাইরের লোক ঢোকে বলিদান করে দিবি, আমি বুঝে নেব, যা!” ফিরে যাওয়ার সময় ফের অরূপবাবু বলেন, “শোন, বঁটি দিয়ে কেটে দিবি!” এ রকম মন্তব্য করলেন কেন সভাধিপতি?

বাঁকুড়া জেলার নানা অংশের মতো মন্যাডিতেও বিজেপি ধীরে ধীরে সংগঠন বাড়াচ্ছে। গ্রামের বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের একটা অংশ বিজেপি-তে যোগ দিয়েছে। আর তার জেরে ওই গ্রামে বিজেপি এখন শাসক দলের তুলনায় কিছুটা বেশি শক্তিশালী। তার উপরে সংঘর্ষের পরেই রবিবার দলীয় নেতা শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে রাজ্য বিজেপি-র একটি দল ওই গ্রামে যায়। ফলে, মন্যাডি গ্রামে যাওয়ার জন্য চাপ ছিল তৃণমূলের নেতাদের উপরে। সে জন্যই এ দিন ওই গ্রামে যান অরূপ চক্রবর্তী। জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা বলছেন, “দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতেই অরূপবাবু ওই ধরনের মন্তব্য করেছেন বলে মনে হয়। কিন্তু, ও রকম শাসানি দিয়ে দলকে অস্বস্তিতেও ফেলেছেন। বিশেষ করে তিনি নিজে যখন প্রশাসনের অঙ্গ।”

অরূপ চক্রবর্তী দাবি করেছেন, “প্রত্যেকেরই আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। ওই গ্রামে বিজেপি কর্মীরা বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণের চেষ্টা করছেন। এক জন আইনজীবী হিসেবে আত্মরক্ষার জন্যই এই কথা বলেছি, অন্যায় কিছু বলিনি।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও বলেন, “কোথায়, কে, কী বলছেন, কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে বলছেন, তা আগে দেখি।” আজ, বুধবার কলকাতায় গিয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার কথা অরূপবাবুর। এই বৈঠক আগে থেকেই স্থির ছিল। তবে, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দলনেত্রীর কাছে তিনি ধমক খান কি না, তা জানতে উৎসুক জেলার রাজনৈতিক মহল।

এই অবস্থায় বাঁকুড়ার বিজেপি নেতৃত্ব জেলা সভাধিপতির অপসারণ দাবি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম কিংবা তাপস পালের মতোই অরূপবাবুর ক্ষেত্রেও পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, ঘটনার পর বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএসের জবাবও দেননি।

tapas pal hate speech tmc arup chakrabarty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy