Advertisement
E-Paper

এক বছর পরে গ্রিড চত্বরে পুলিশ, তৃণমূল

দিন কয়েক আগে মাছিভাঙা গ্রামের তপোবন মাঠে সভা করেছিলেন পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীরা। রবিবার ওই গ্রামেই গ্রিড থেকে দু’শো মিটার দূরে পাল্টা সভা করে শাসকদল।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৪
জমায়েত: চলছে সভা। তার মাঝেই পাওয়ার গ্রিডের সামনে ভিড় তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকদের। রবিবার ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা

জমায়েত: চলছে সভা। তার মাঝেই পাওয়ার গ্রিডের সামনে ভিড় তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকদের। রবিবার ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা

এক বছর পরে, রবিবার পায়ে পা মিলিয়ে ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড চত্বরে ঘুরলেন পুলিশ এবং শাসকদলের নেতাকর্মীরা।

দিন কয়েক আগে মাছিভাঙা গ্রামের তপোবন মাঠে সভা করেছিলেন পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীরা। রবিবার ওই গ্রামেই গ্রিড থেকে দু’শো মিটার দূরে পাল্টা সভা করে শাসকদল। তার আগে গ্রিড চত্বরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মী এবং পুলিশকে। সভায় অবিলম্বে প্রকল্পের কাজ শুরু করার পক্ষে সওয়াল করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা, তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম, কাইজার আহমেদরা।

গত বছর ১৭ জানুয়ারি পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের জেরে ভাঙড়ে আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ। সে দিন গ্রিডের কাছে পুলিশ ক্যাম্প ভাঙচুর করে লুঠপাটও চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। তার পর থেকে ওই এলাকায় আর পুলিশ বা শাসকদলের নেতাদের কারও পা পড়েনি। এ দিনের সভার জন্য গোটা ভাঙড় নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলেছিল পুলিশ। তবে, কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি। শুধু খামারআইট এবং মাছিভাঙা গ্রামের কয়েকটি রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। তাতে অবশ্য গ্রামবাসীদের সভায় আসতে অসুবিধা হয়নি।

দিন কয়েক আগে আন্দোলনকারীদের সভায় ‘ভাঙড় সংহতি মঞ্চে’র পক্ষে এসেছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, সমাজকর্মী ভারতী মুৎসুদ্দিরা। রবিবারের সভায় নাম না-করে সুজনবাবুকে বেঁধেন রেজ্জাক। তিনি বলেন, ‘‘সাদা চুলের এক নেতাকে বলছি, তাঁর বাড়ির পাশের সোনারপুর, সুভাষগ্রাম, মল্লিকপুর এলাকার পাওয়ার গ্রিড বন্ধ করে তার পরে এখানে রাজনীতি করতে আসুন।’’ মাছিভাঙার শিক্ষিত মানুষদের কাছে মন্ত্রীর আবেদন, ‘‘উন্নয়ন, বিদ্যুদয়ন হোক। এটা বিবেচনা করুন। আলোচনায় আসুন। দরকারে আমি সাইকেল নিয়ে চলে আসব।’’ একই সঙ্গে বিক্ষোভকারী নকশাল নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘ওরা অতি লাল পার্টি। লাল পার্টি কী ভাবে মগজ ধোলাই করে, আমার জানা আছে। এক সময়ে আমি লাল পার্টিতে ছিলাম।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘তোমরা দানা দিলে, আমরা পাল্টা দানা দেব।’’

মন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির সমালোচনা করেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের পক্ষে মির্জা হাসান বলেন, ‘‘একজন মন্ত্রী এমন কথা কী করে বলেন!’’ অবশ্য একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা আলোচনায় বসতে রাজি। কিন্তু তা যেন বিজ্ঞানভিত্তিক হয়।

এ দিন শাসকদলের সভা শুরু হয় বিকেল ৪টে নাগাদ। কর্মী-সমর্থকেরা যাতে যথাযথ সময়ে সভাস্থলে আসতে পারেন, সে কারণে শাসকদলের পক্ষ থেকে ভাঙড়ের দু’টি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানো হয়। বাস-লরি করে সমর্থকেরা এসে গ্রিডের দরজার সামনেই নামেন। সভা চলাকালীন বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহের নেতৃত্বে বাহিনী গ্রিডের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল।

প্রথমে মঞ্চে স্থানীয় বেশ কিছু নেতা উঠে পড়ায় বিশৃঙ্খলা হয়। এক সময়ে আরাবুল মঞ্চ থেকে নেমে যান। তবে, শেষ পর্যন্ত একসঙ্গেই মঞ্চে ছিলেন রেজ্জাক, আরাবুল, কাইজার, নান্নু হোসেনরা। এ দিনের সভায় তেমন ভিড় হবে না বলে আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ভারতী মুৎসুদ্দিরা। এ দিন ভিড় দেখে তাঁদের উদ্দেশে কাইজার বলেন, ‘‘এসে দেখে যান, কত লোক হয়েছে। আপনাদের অনুরোধ, বাইরে থেকে এসে এখানে কোন্দল বাড়াবেন না।’’

দিনের শেষে পুলিশ সুপার জানান, কোনও তরফেই যাতে কোনও অশান্তি না হয়, তা পুলিশ দেখেছে। আগের রাত থেকেই সাদা পোশাকে পুলিশ এই এলাকায় নজরদারি চালিয়েছে।

Power Grid Project Bhangar Police TMC Arabul Islam Abdur Razzak Molla
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy