রেশন দুর্নীতিতে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হতেই সুটিয়ার প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস খুনের ঘটনাতেও তাঁর হাত ছিল বলে ফের দাবি করেছে নিহতের পরিবার। ওই খুনের মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। বরুণের দিদি প্রমীলা রায় বিশ্বাস আদালতে পুনর্তদন্তের আবেদন জানাতে চান বলে জানিয়েছেন। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার সুটিয়ায় বরুণের বাড়িতে গিয়ে ওই পরিবারের লোকজনকে আইনি সাহায্যের আশ্বাস দিলেন স্থানীয় বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা।
প্রমীলার অভিযোগ, ‘‘বরুণ খুনের ঘটনায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জড়িত। তিনিই খুনের ঘটনায় মদত দিয়েছিলেন।’’ এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর এবং ওই দলের নেতা তথা কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে সুটিয়ায় আসেন। তাঁরা বরুণের বাড়িতে যান। সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন।
তরুণজ্যোতি বলেন, ‘‘এত বছর পরেও বরুণ খুনের বিচার সম্পূর্ণ হল না। আমরা চাই খুনিদের সাজা হোক। কেবল সামনে থেকে যারা খুন করেছিল তারাই নয়, যারা পিছন থেকে খুন করিয়েছিল, তাদেরও সাজা চাই।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘এই মামলায় আইনি যা সাহায্য করার দরকার, আমরা তা করতে প্রস্তুত। বরুণের পরিবার যদি পুনর্তদন্তের দাবি জানাতে চায়, তাতেও সাহায্য করব।’’ বিধায়ক বলেন, ‘‘বরুণ বিশ্বাসের আত্মা শান্তি তখনই পাবে, যখন বরুণ খুনের মাস্টারমাইন্ডরা সাজা পাবে। আমরা চাই সঠিক ভাবে তদন্ত হোক।’’ প্রমীলা জানান, তাঁরা পুনর্তদন্তের আবেদন জানাতে চান। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বরুণের পরিবার এবং বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কালিমালিপ্ত করতে এ সব বলছেন। দোষীরা ঠিকই শাস্তি পাবে।’’
২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবরডাঙা স্টেশনের সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন বরুণ। মামলাটি চলছে বনগাঁ আদালতে। আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী অসীম দে বলেন, ‘‘এত দিন স্থায়ী বিচারক না থাকায় শুনানি ধীরে চলছিল। এখন বিচারক চলে এসেছেন। পুজোর ছুটির পরে আদালত খুললে মামলাটির শুনানি ত্বরান্বিত করতে পদক্ষেপ করা হবে।’’ এ দিন জ্যোতিপ্রিয়কে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর দাবিতে বনগাঁ শহরে মিছিল করে সিপিএম।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)