E-Paper

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাস্তায় কলকাতা ও হাওড়ায় মৃত্যু দুই যুবকের

কলকাতায় এক যুবক মারা গেলেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। হাওড়ায় অন্য জনের মৃত্যু হল গর্তে হোঁচট খেয়ে জমা জলে পড়ে গিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:০৭

—প্রতীকী চিত্র।

বৃষ্টির জমা জলে দু’টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল পাশাপাশি দুই শহরে। কলকাতায় এক যুবক মারা গেলেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। হাওড়ায় অন্য জনের মৃত্যু হল গর্তে হোঁচট খেয়ে জমা জলে পড়ে গিয়ে।

গৌতম চট্টোপাধ্যায়।

গৌতম চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

শুক্রবার বিকেলে ভবানীপুরের জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান সৌরভপ্রসাদ গুপ্ত (২৫)। তাঁর বাড়ি বিহারে হলেও থাকতেন জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডে। সেখানে তাঁদের একটি ভুজিয়ার দোকান রয়েছে। বাবার সঙ্গে সৌরভও ওই দোকান চালাতেন। দোকানের পাশেই সৌরভদের বাড়ি। এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ সৌরভ বাড়ি থেকে হেঁটে দোকানে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি অসীম বসু বলেন, ‘‘রাস্তায় জল জমে ছিল। সৌরভ সেই জমা জল ভেঙেই হাঁটছিলেন। ওই এলাকায় পুরসভার কোনও বাতিস্তম্ভ নেই। লাগোয়া একটি বাড়ির রেলিং থেকে বিদ্যুতের তার বেরিয়ে ছিল। সেটি থেকেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জলে পড়ে যান সৌরভ। স্থানীয় যুবকেরা এসে বাঁশ দিয়ে তাঁকে সরিয়ে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান তিনি।’’

মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সী বলেন, ‘‘দুর্যোগের জন্য আমরা বাতিস্তম্ভগুলি এ বার ভাল করে পরীক্ষা করেছি। যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পুরসভার কোনও বাতিস্তম্ভ নেই। একটি বাড়ির মিটার বক্স থেকে অবৈধ ভাবে সংযোগ টেনে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। পুলিশ ও সিইএসসি বিষয়টি দেখছে।’’ পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

সিইএসসি-র তরফে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল লাগোয়া একটি বাড়ি থেকে অবৈধ ভাবে বিদ্যুতের তার টেনে আলো জ্বালানোর চেষ্টা হয়েছিল। সেই বাড়ির রেলিংয়ে হাত লেগে ওই যুবক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হবে। মিটার বক্সটি সিল করা হয়েছে।

অন্য দিকে, হাওড়ার ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়ায় জমা জলের নীচে থাকা গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন এক যুবক। অভিযোগ, ঘণ্টাখানেক তিনি জলে পড়ে থাকলেও কেউ উদ্ধার করতে আসেননি। শেষে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। মৃতের নাম গৌতম চট্টোপাধ্যায় (৩৮)। তিনি হাওড়া পুরসভার সাফাই বিভাগের অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। বাড়ি ঘটনাস্থলের কাছেই তাঁতিপাড়া লেনে।

ওই এলাকায় খড়কাটা গলির সামনের রাস্তায় হাঁটু সমান জল জমে ছিল। রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। ঘোলা জলের নীচে থাকা গর্তটি যুবক দেখতে পাননি। হোঁচট খেয়ে পড়ে যান তিনি। সংজ্ঞা হারানোয় আর উঠতে পারেননি।

এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ কর বললেন, ‘‘ওই রাস্তায় অনেক জল জমে ছিল। জমা জলের মধ্যে উনি প্রায় এক ঘণ্টা পড়ে ছিলেন। আমরা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিই।’’ মৃতের কাকা তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তাঁতিপাড়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। ওই জমা জলে পড়ে গিয়েই আমার ভাইপো মারা গিয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার নয়। দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Deaths Kolkata Howrah Water Logged Kolkata Water logged Cyclone Dana

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy