Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

ফের জ্বরে প্রাণ গেল ৩ জনের

মৃতার স্বামী আনার আলি বলেন, ‘‘ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে এখন আমি একা কী করব, বুঝতে পারছি না। অর্থাভাবে হাসপাতালে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারেনি।’’

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

বন্ধ হচ্ছে না মৃত্যু-মিছিল। ফের জ্বরে দেগঙ্গা ও বাদুড়িয়ায় তিন জনের মৃত্যু হল।

দেগঙ্গার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আছেমা বিবির (৫৫) জ্বর হয় দিন তিনেক আগে। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে রক্ত পরীক্ষাও করানো হয় তাঁর। মঙ্গলবার সেই রিপোর্টে ‘এনএস-১ পজিটিভ’ আসে বলে পরিবারের দাবি। ওই সন্ধ্যাতেই প্রৌঢ়ার অবস্থার অবনতি হয়। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তাঁকে। পথেই মারা যান তিনি।

এই ব্লকেরই উত্তর মাটিকুমড়া মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা, রিনা বিবি (২৬) নামে আর এক মহিলাও মঙ্গলবার রাতে জ্বরে মারা যান। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন রিনা। এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখানোর পরে চিকিসার জন্য আমুলিয়াতে বাপেরবাড়ি যান তিনি। সেখানেই মৃত্যু হয়।

মৃতার স্বামী আনার আলি বলেন, ‘‘ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে এখন আমি একা কী করব, বুঝতে পারছি না। অর্থাভাবে হাসপাতালে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারেনি।’’

বুধবার সকালে বারাসত জেলা হাসপাতালে মারা যান বাদুড়িয়ার রাজবাড়িয়া গ্রামের তাহেরুন পরভিন (১৯)। তিনি বেড়াচাঁপার চন্দ্রকেতুগড় মহম্মদ শহিদুল্লাহ কলেজে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বাদুড়িয়ার কংগ্রেস বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলু তাঁর মামা।

ভাগ্নির মৃত্যুর খবর পেয়েই এ দিন প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠক ছেড়ে বিধায়ক বাদুড়িয়ায় ফিরে আসেন। তিনি জানান, দিনকয়েক আগে হাবরার গুমায় মামাবাড়ি গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত হন তাহেরুন। ডেঙ্গির লক্ষণ ছিল। মঙ্গলবার তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। যদিও হাসপাতালে মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হয়েছে ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’।

ক্ষুব্ধ বিধায়কের প্রশ্ন, এ ভাবে আর কত দিন ডেঙ্গিকে চাপা দেওয়া হবে তা বোধগম্য হচ্ছে না। আর কত মৃত্যু হলে তবে রাজ্য সরকার ডেঙ্গির কথা স্বীকার করবে? বিধায়কের দাবি, ‘‘বাদুড়িয়াতে এ পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সকলেরই উপসর্গ ডেঙ্গির মতো হলেও মাত্র একজনের মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি লেখা হয়েছে।’’

গোটা বসিরহাট মহকুমা জুড়েই জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। অনেকেই ডেঙ্গি আক্রান্ত বলে দাবি করছেন গ্রামবাসীরা। অথচ যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রতিরোধে নামা উচিত ছিল তা এখনও পর্যন্ত হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বসিরহাটের তিনটি পুরসভার পক্ষে নামমাত্র মশা মারার তেল স্প্রে এবং চুন-ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে রোগীদের ভিড় উপছে পড়লেও প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক কম।

তবে বসিরহাট স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ‘‘জ্বরের প্রকোপ কিছুটা কমেছে। জ্বরে আক্রান্তদের বর্তমানে বসিরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে। রক্তের জরুরি পরীক্ষাও হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Malaria Water stagnation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE