E-Paper

স্ত্রীকে খুনের দায়ে আইনজীবী স্বামীর যাবজ্জীবন কারাবাস

ঘটনার পরে পালিয়ে যায় অভিযুক্তেরা। পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৪:৫৩
রথীন্দ্রনাথ সেন।

রথীন্দ্রনাথ সেন। নিজস্ব চিত্র ।

পণের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের দায়ে এক আইনজীবী-সহ তার পরিবারের চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। শুক্রবার বনগাঁ মহকুমা আদালতের বিচারক এডিজে-১ কল্লোলকুমার দাস ওই সাজা শুনিয়েছেন। ওই আদালতেই এক সময়ে ওকালতি করত সাজাপ্রাপ্ত রথীন্দ্রনাথ সেন।

মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী সন্দীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একই পরিবারের চার জনকে বিচারক যাবজ্জীবন (আমৃত্যু) কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। ১০ হাজার জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে, আরও তিন মাসের জেল।’’

বনগাঁ ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দাস বলেন, ‘‘আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বার কাউন্সিলের কাছে আবেদন করেছি, রথীন্দ্রনাথের লাইসেন্স বাতিল করার। সে যাতে আর কখনও আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে না পারে।’’

পুলিশ জানায়, খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২২ সালের ৮ এপ্রিল, বনগাঁ শহরের শক্তিগড় এলাকায়। রথীন্দ্রনাথ, তার বাবা রবীন্দ্রনাথ সেন, মা সুপ্তা সেন, ভাই রজত সেনরা রথীন্দ্রনাথের স্ত্রী প্রিয়া ওরফে ইতুকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। রথীন্দ্রনাথদের গ্রেফতারের দাবিতে বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। ঘটনার পরে পালিয়ে যায় অভিযুক্তেরা। পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

বনগাঁ আদালতের আইনজীবী সমীরকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইতুকে মারধর করত। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন তারা ইতুর দেড় বছরের সন্তানের সামনেই তাঁকে মারধর করে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল। বাধা দিতে গেলে হাত ভেঙে দেয় ওই তরুণীর। পরে দেহ ভ্যানে তুলে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়।’’ বিশেষ সরকারি আইনজীবী জানান, ঘটনার পর দিন বনগাঁ থানায় সাজাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন, হত্যা, ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করা হয়েছিল ইতুর বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে। ওই তরুণীর বাপের বাড়ি মছলন্দপুরে। ঘটনার দিন তাঁর মা বার বার ফোন করলেও ইতু ধরেননি। পরে খবর পেয়ে সকলে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে মেয়েকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ দিন বিচারকের রায় শুনে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইতুর মা মমতা বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে আমি খুশি, বিচারকের কাছে কৃতজ্ঞ। মেয়েটার আত্মা শান্তি পেল। আর যেন কোনও মায়ের কোল এ ভাবে খালি না হয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangaon

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy