E-Paper

তিন মাসের ‘লুকোচুরি’ শেষ, নয়ডায় ধৃত স্ত্রীকে খুনে অভিযুক্ত

টানা তিন মাস ধরে চেষ্টা চালানোর পরে শেষমেশ গত মঙ্গলবার এমনই নাটকীয় ভাবে ঘোলা থানার পুলিশ ধরে ফেলল সেই ব্যক্তিকে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, পানিহাটিতে স্ত্রীকে খুন করার পরে ছেলেকে নিয়ে ভিন্ রাজ্যে পালিয়ে বেড়ানোর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:২০

—প্রতীকী চিত্র।

নয়ডার এক মহিলার বাড়িতে রয়েছে তিন মাস ধরে পালিয়ে বেড়ানো খুনের আসামির সন্তান। ওই শহরে পৌঁছনোর পরে এমন খবর পেয়ে সটান সেই বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তাঁদেরই অন্য একটি দল তখন নজর রাখছিল বাড়ির বাইরে। ওই বাড়িতে ঢোকার আগে এলাকার লোকজনকে ছবি দেখিয়ে পলাতক ব্যক্তির খোঁজ করেছিল পুলিশ। সেই সূত্রেই পুলিশের আসার খবর পৌঁছে যায় সেই অভিযুক্তের কাছে। সে তখন বাড়ির অদূরে একটি পার্কে গিয়ে দূর থেকে পুলিশের গতিবিধির উপরে নজর রাখতে শুরু করে। যদিও পিছন দিক দিয়ে পার্কে ঢুকে অভিযুক্তকে ধরে ফেলে পুলিশ।

টানা তিন মাস ধরে চেষ্টা চালানোর পরে শেষমেশ গত মঙ্গলবার এমনই নাটকীয় ভাবে ঘোলা থানার পুলিশ ধরে ফেলল সেই ব্যক্তিকে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, পানিহাটিতে স্ত্রীকে খুন করার পরে ছেলেকে নিয়ে ভিন্ রাজ্যে পালিয়ে বেড়ানোর। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সুকান্ত নাথ। দিল্লির কাছে নয়ডা থেকে পাকড়াও করা হয় তাকে। সুকান্তের সাত বছরের ছেলেকেও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে সিডব্লিউসি-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ট্রানজ়িট রিমান্ডে সুকান্তকে এ রাজ্যে নিয়ে আসা হয়।

পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরায় খুনের অভিযোগ কবুল করেছে সুকান্ত। পুলিশি জেরায় সে দাবি করেছে, তার স্ত্রী অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন, যার তথ্যপ্রমাণ তার কাছে ছিল। স্ত্রীকে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিল সে। কিন্তু স্ত্রী সে কথা না শোনায় তাঁকে শ্বাসরোধ করে, দু’হাতের শিরা কেটে খুন করে সুকান্ত। এই সমস্ত দাবি যাচাই করে দেখছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রের খবর, পানিহাটি পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের আজাদ হিন্দ নগর এলাকার একটি বাড়ি থেকে গত ৫ জুলাই রাতে দু’হাতের শিরা কাটা অবস্থায় সুকান্তের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা নাথ সরকারের (২৭) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই মৃতার স্বামী ও ছেলের খোঁজ মিলছিল না। খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। তারা জানতে পারে, সুকান্ত ছেলেকে নিয়ে প্রথমে ইলাহাবাদে যায়। সেখান থেকে পঞ্জাব ও পরে নয়ডায় পৌঁছয়। পুলিশ খবর পায়, সুকান্ত নয়ডায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছে। সেখানকার একটি হোটেলে কাজও জোগাড় করেছিল সে। ছেলেকে এক মহিলার (যিনি বাচ্চাদের দেখাশোনা করেন) কাছে রেখে কাজে যেত সুকান্ত। বাড়ি ফেরার সময়ে নিয়ে আসত ছেলেকে। সেই মহিলার বাড়িতেই হানা দিয়েছিল পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৫ জুলাই প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে বহু বার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে রাতে তাঁর পরিবারের এক সদস্য আজাদ হিন্দ নগরের ওই বাড়িতে যান। তখনই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় প্রিয়াঙ্কাকে। সুকান্ত সে সময়ে একটি সংস্থার গাড়ি চালাত। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ন’বছর আগে সুকান্তের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার সম্পর্ক তৈরি হয় এবং পরে বিয়ে হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই স্ত্রীকে সন্দেহ করত সুকান্ত। এমনকি, সে স্ত্রীকে মারধরও করত বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, শ্বাসরুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি দু’হাতের কাটা শিরা থেকে প্রভূত রক্তক্ষরণের জেরেই মৃত্যু হয়েছিল প্রিয়াঙ্কার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panihati arrest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy