Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বেতনের টাকা না দিলেই চলত মারধর

মহিলা কনস্টেবলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সকালে গাইঘাটা থেকে সুমন ঘোষ নামে ওই যুবককে ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সুমন মহিলা কনস্টেবল সোমাদেবীর দেবর হয়।

সোমা ঘোষ।

সোমা ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইগাটা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০১:৫০
Share: Save:

মহিলা কনস্টেবলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সকালে গাইঘাটা থেকে সুমন ঘোষ নামে ওই যুবককে ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সুমন মহিলা কনস্টেবল সোমাদেবীর দেবর হয়। তাঁর স্বামী পার্থ, শ্বশুর শান্তিপদ ও শাশুড়ি পূর্ণিমা ঘোষের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

সোমাদেবীর বাপের বাড়ির লোকেরা পুলিশকে জানিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই বেতনের টাকা জোর করে মেয়ের কাছ থেকে কেড়ে নিত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। টাকা না দিলেই চলত মারধর। বাপের বাড়ি থেকেও টাকা আনতে চাপ দেওয়া হত। বার কয়েক বাপের বাড়ি থেকে টাকাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সোমাদেবীর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের চাহিদা দিনের পর দিন বাড়ছিল। আর টাকা দিতে না পারলেই তাঁর কপালে জুটত বেধড়ক মার।

মঙ্গলবার গাইঘাটায় থানা থেকে উদ্ধার হয়েছিল সোমা ঘোষ (২৭) নামে এক মহিলা কনস্টেবলের দেহ। বাড়ি স্থানীয় রামপুর এলাকায়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার জানান, ওই কনস্টেবল মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।

সোমাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো তাঁর উপরে। পুলিশের অনুমান, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই সোমাদেবী আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছু দিন আগে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সোমাকে মারধর করেছিল। ভোটের সময়ে তাঁকে উত্তরবঙ্গে ডিউটি করতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোমাকে ফিরিয়ে আনা হয়। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অবশ্য রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ হয়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, বছরখানেক ধরে গাইঘাটা থানায় কর্মরত ছিলেন সোমা। তাঁর শ্বশুরবাড়ি স্থানীয় ফুলসরা গ্রামে। বছর চারেক আগে বিয়ে হয়েছিল ওই গ্রামের বাসিন্দা পার্থ ঘোষের সঙ্গে। পার্থবাবুও পুলিশে কর্মরত। বর্তমানে ঝাড়গ্রাম জিআরপিতে আছেন। তাঁদের একটি ছোট ছেলে আছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ সোমাদেবী থানায় ডিউটি আসেন। সহকর্মীদের সঙ্গে গল্পগুজবও করেন। পরে থানায় মহিলাদের বিশ্রামকক্ষে যান। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সোমার এক সহকর্মী গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। সন্দেহ হওয়ায় তিনি জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নার ফাঁসে ঝুলছে সোমার দেহ। দ্রুত দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হলেও বাঁচানো যায়নি সোমাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

unusual death Constable
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE