Advertisement
E-Paper

জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা, দেহ আটকে অবরোধ

এত দিন ছিল দুর্ঘটনা ঘটলেই হাম্প বসানোর দাবি। এ বার দুর্ঘটনার জেরে গ্রামবাসীরাই প্রশ্ন তুললেন, রাস্তায় এত হাম্প কেন!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৯ ০০:১৪
ভোল-বদল: কেটে ফেলা হচ্ছে হাম্প। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ভোল-বদল: কেটে ফেলা হচ্ছে হাম্প। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

এত দিন ছিল দুর্ঘটনা ঘটলেই হাম্প বসানোর দাবি। এ বার দুর্ঘটনার জেরে গ্রামবাসীরাই প্রশ্ন তুললেন, রাস্তায় এত হাম্প কেন!

বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় বাইক চালক পুলক দত্তের (৫২)। বাড়ি গাইঘাটার ঢাকুরিয়ায়। চাঁদপাড়া বাজারে ব্যাটারির দোকান আছে তাঁর। এ দিন দুপুরে দোকান বন্ধ করে বাইক নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। যশোর রোডে বকচরায় একটি হাম্পের সামনে বাইকের গতি কমান তিনি। সে সময়ে পিছন থেকে একটি ট্রাক ধাক্কা মারে তাঁকে। ছিটকে পড়েন পুলক। মাথায় হেলমেট থাকলেও প্রাণ বাঁচেনি।

এরপরেই উত্তেজিত জনতা গাছের গুঁড়ি ফেলে, দেহ আগলে যশোর রোড অবরোধ শুরু করেন। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে অবরোধ তুলতে ব্যর্থ হয়। পুলিশকে ঘিরেও লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিজেপির লোকজনও ঘটনাস্থলে হাজির হয়। অবরোধকারীদের দাবি, হাম্প থাকার জন্যই দুর্ঘটনায় পুলকের মৃত্যু হয়েছে।

গাইঘাটা থানা এলাকায় যশোর রোডে বেশ কিছু হাম্প রয়েছে। এক সঙ্গে পর পর তিন-চারটি করেও হাম্প দেওয়া। বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাম্প থাকার ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনিতেই যশোর রোড এই এলাকায় বেশ সংকীর্ণ। দু’টি বড় ট্রাক পাশাপাশি যাতায়াত করতে পারে না। হাম্প বসানোর ফলে গাড়ির গতিও কমে গিয়েছে। যান চালকেরা জানালেন, এমনিতে যানজটের কারণে বনগাঁ বা গাইঘাটা থেকে সড়ক পথে বারাসত ও কলকাতায় পৌঁছতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। হাম্প বসানোর ফলে গাড়ির গতি আরও কমে গিয়েছে। পদে পদে হাম্প থাকায় গাড়ি চালানোটাই কঠিন হয়ে উঠেছে। রাতের দিকে আরও অসুবিধা হয়। বিশেষত, দু’চাকার গাড়ির চালক-আরোহীদের জন্য এমন হাম্প আরও বিপজ্জনক। অনেকেই জানালেন, একের পর এক হাম্পের ঝাঁকুনিতে শরীর অস্থির করে। অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীর অবস্থা কাহিল হয়।

এ দিন দীর্ঘক্ষণ অবরোধের পরে বিকেল ৪টে নাগাদ পুলিশ সড়ক থেকে দেহ সরিয়ে নিয়ে যায়। তারপরেও অবরোধ চলতে থাকে। বহু গাড়ি আটকে পড়ে। অনেকে যানবাহন থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন। বিকেল ৫টা নাগাদ পুলিশ এসে মেশিন দিয়ে হাম্প কাটা শুরু করলে অবরোধ ওঠে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে বাসিন্দাদের দাবি মেনেই গাইঘাটা পুলিশের তরফে পথ দুর্ঘটনা কমাতে সড়কে হাম্প দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের দাবি, হাম্প বসানোর পরে গাইঘাটা থানা এলাকায় যশোর রোডে দুর্ঘটনা কমেও গিয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কে এ ভাবে হাম্প বসানো যায় না। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের (ডিভিশন ৫) নির্বাহী বাস্তুকার অজয়শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘ওই এলাকার মানুষ অনেক দিন ধরেই হাম্প তুলে দেওয়ার দাবি করে আসছেন। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের বার কয়েক জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের বক্তব্য, হাম্প দেওয়ার ফলে দুর্ঘটনা কমেছে। ফের একবার পুলিশকে হাম্প তুলে দিতে বলা হবে।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, কিছু দিন আগে সড়ক কর্তৃপক্ষের লোকজন রাস্তার হাম্প কাটতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, পুলিশ যন্ত্রপাতি ও কর্মীদের আটক করে থানায় নিয়ে এসেছিল।

বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার বলেন, ‘‘হাম্প তুললেই সমস্যার সমাধান হবে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক কোনও পদ্ধতি মেনে পথ দুর্ঘটনা কমাতে পদক্ষেপ করা হবে।’’

Accident Gaighata Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy