Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Adenovirus

অ্যাডিনোভাইরাস: বারাসত জেলা হাসপাতালে বাড়ানো হল শিশুদের শয্যা

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দেগঙ্গা, আমডাঙা ও দত্তপুকুর এলাকা থেকে জ্বর, সর্দি-কাশিতে নিয়ে রোগী আসছেন বেশি।

বারাসত জেলা হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর। নিজস্ব চিত্র

বারাসত জেলা হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বারাসত, হাবড়া শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩১
Share: Save:

অ্যাডিনোভাইরাসের মোকাবিলা করতে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুদের জন্য খোলা হল বিশেষ ইউনিট। সেখানে দেখা গেল, ভিড় হয়েছে ভালই।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় অ্যাডিনোভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ভুগছে ৯৩ জন শিশু। বুধবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৪ জন। ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। বড়দের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে উপসর্গ।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দেগঙ্গা, আমডাঙা ও দত্তপুকুর এলাকা থেকে জ্বর, সর্দি-কাশিতে নিয়ে রোগী আসছেন বেশি।

বুধবার বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, শতাধিক শিশুকে এনেছেন বাবা-মায়েরা। দত্তপুকুর থেকে এসেছেন সোমা বারুই। বললেন, ‘‘দশ দিন ধরে জ্বর-সর্দিতে ভুগছে সন্তান। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।’’ দেগঙ্গার বাসিন্দা নাসিমা বেগমের তিন বছরের মেয়ে পনেরো দিন হয়ে গেল, ভুগছে। তিনি বলেন, এলাকায় প্রচুর বাচ্চা অসুস্থ। অনেকেরই জ্বর।

হাসপাতালে যে নতুন কাউন্টার খোলা হয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের দেখা হবে। বাড়ানো হয়েছে শয্যার সংখ্যা। সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘নতুন নির্দেশিকা মেনে এআরআই (জ্বর-সর্দি-কাশির মতো উপসর্গযুক্ত রোগী) ক্লিনিক শুরু হয়েছে। লাইনও আলাদা করা হয়েছে। সর্বক্ষণ এক জন শিশু চিকিৎসক রাখা হয়েছে। জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের বিষয়টি আলাদা ভাবে নথিভুক্ত করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ৬৭ জন শিশু ভর্তি আছে। অ্যাডিনোভাইরাস ধরা পড়েছে ২৩ জনের। ৬ জনের অক্সিজেন চলছে। মঙ্গলবার থেকে কোনও শিশুকে তাঁরা ‘রেফার’ করেননি বলেও জানান সুপার।

স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫ শয্যার একটি আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অ্যাডিনোভাইরাস আক্রান্ত শিশুদের জন্য। সেখানে ভেন্টিলেশন ছাড়াও সি-প্যাপ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। চিকিৎসক ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

সুপার বলেন, ‘‘আমরা অভিভাবকদের বলছি, অযথা আতঙ্কিত হবেন না। চিকিৎসকেরা যে ভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন, সেই অনুযায়ী বাচ্চাদের দেখাশোনা করুন।’’

অ্যাডিনোভাইরাসের মোকাবিলায় বুধবার জরুরি বৈঠক হয়েছে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। উপস্থিত ছিলেন সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস, পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা এবং পুলিশ কর্তারা।

এ দিন হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগে দেখা গেল, লম্বা লাইন। হাসপাতালে শয্যার থেকে শিশু ভর্তির সংখ্যা বেশি। পুরসভার পক্ষ থেকে ২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার তুলে দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে। অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন হাসপাতাল সুপার। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে কোনও শিশু এখনও পর্যন্ত মারা যায়নি। এই সময়ে জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে রোগীরা এমনিতেই হাসপাতালে আসেন। এ বার সামান্য জ্বর হলেই মানুষ আসছেন।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উপরে আমরা নজর রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adenovirus Barasat District Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE