Advertisement
০৬ মে ২০২৪
কেন অধরা চার অভিযুক্ত,

বিক্ষোভ গাইঘাটা থানায়

এক মাস আগে এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগর এলাকার ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

থানার সামনে চলছে বিক্ষোভ। ইনসেটে তনুশ্রী হালদার।

থানার সামনে চলছে বিক্ষোভ। ইনসেটে তনুশ্রী হালদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০২:২২
Share: Save:

এক মাস আগে এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগর এলাকার ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই মৃত্যুকে আসলে ‘খুন’ বলে অভিযোগ করে নিহতের পরিবারের দাবি, আরও চার জন এই ঘটনায় যুক্ত। তাদের গ্রেফতারি এবং মামলার সঠিক তদন্তের দাবিতে রবিবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ও ওই বধূর পরিবারের লোকজন গাইঘাটা থানায় বিক্ষোভ দেখান। ছিলেন সেভ ডেমোক্রাসি, আক্রান্ত আমরা ও এপিডিআরের সদস্যেরা।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ জুন তনুশ্রী হালদার (২৩) নামে ঠাকুরনগরের এক বধূর মৃত্যু হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেই মৃত্যু ঘিরেই তৈরি হয় রহস্য। তনুশ্রীদেবীর মা তন্দ্রাদেবী গাইঘাটা থানায় অলোক মণ্ডল ওরফে মাইকেল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। দিন কয়েক পরে তনুশ্রীদেবীর পরিবারের সদস্যেরা পুলিশের কাছে দাবি করেন, এই খুনের ঘটনায় মাইকেল ছাড়াও আরও চার জন স্থানীয় বাসিন্দা জড়িত রয়েছে। ওই চার জনের বিরুদ্ধে গাইঘাটা থানা ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর দফতর, জেলা পুলিশ সুপার, রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। মৃতের মা তন্দ্রাদেবীর অভিযোগ, ‘‘ওই চার অভিযুক্ত প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হওয়ায় পুলিশ তাদের ধরছে না।’’ রবিবার তিনি থানায় ফের ওই চার জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর পাঁচেক আগে বাড়ির কাছেই তনুশ্রীদেবীর বিয়ে হয়েছিল। তার একটি তিন বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে। তনুশ্রীদেবীর পূর্বপরিচিত ছিল ধৃত মাইকেল। গত ৩১ মে তাঁকে বার বার ফোন করে শ্বশুরবাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় মাইকেল। তার পর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। তনুশ্রীদেবীর পরিবারের অভিযোগ, মেয়ের বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে খোঁজাখুজি শুরু হয়। রাত ১১টা নাগাদ তাঁরা খবর পান, তনুশ্রীদেবী স্থানীয় চাঁদপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি। সেখানে গিয়ে দেখা যায় তাঁর মাথা দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে, পা ভাঙা। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

পরিবারের দাবি, তনুশ্রীদেবীকে নির্যাতন করে মৃতপ্রায় করে ঠাকুরনগরে রেল লাইনে ফেলে রাখা হয়েছিল। ওই রাতেই তনুশ্রীদেবীর এক সম্পর্কিত ভাইকে নিয়ে মাইকেল রেললাইন থেকে তনুশ্রীদেবীকে তুলে চাঁদপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে পালিয়ে যায়।

সেভ ডেমোক্রাসি সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী পরে অভিযোগ করেন, ‘‘পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হলেও বাকি অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সব দোষীরই শাস্তির জন্য যত দূর যেতে হয় যাব। পরিবাবের সদস্যেরা চাইলে সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে লড়ব।’’পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাকি চার অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনায় তাদের যুক্ত থাকবার প্রমাণ মেলেনি। তদন্তে গতি আনতে ইতিমধ্যেই তদন্তকারী অফিসারকে বদল করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট দ্রুত পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় অন্য কারও যুক্ত থাকার প্রমাণ পেলে তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু অনুমানের ভিত্তিতে কাউকে ধরা হবে না বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police station Agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE