Advertisement
E-Paper

হ্যাম রেডিয়োর মাধ্যমে বাবাকে পেলেন বমবম  

বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধ প্রভু কুমার। বিহারের সহরসা জেলার নাউহাট্টায় তাঁর বাড়ির লোকেরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর করেও তাঁর কোনও সন্ধান পাননি।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৪
বাড়ির পথে বৃদ্ধ। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির পথে বৃদ্ধ। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধ প্রভু কুমার। বিহারের সহরসা জেলার নাউহাট্টায় তাঁর বাড়ির লোকেরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর করেও তাঁর কোনও সন্ধান পাননি। শেষ পর্যন্ত প্রভুকে বাড়ি ফেরাল হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব। গত কয়েকদিন ধরে তাঁর ঠিকানা ছিল কুলপি হাসপাতাল। মঙ্গলবার তাঁর বাড়ির লোকেরা এসে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে দিন কয়েক আগে শিয়ালদহ- কাকদ্বীপ শাখার কুলপি রেলস্টেশনের প্লাটফর্মের উপরে পড়ে ছিলেন অসুস্থ প্রভু। যাত্রীরা রেল পুলিশকে বিষয়টি জানান। রেলপুলিশ ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে কুলপি হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়া দীর্ঘদিন খাবার না মেলায় তাঁর শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছিল। দিন কয়েক চিকিৎসার পরে একটু সুস্থ হন। কিন্তু বাড়ির ঠিকানা জানাতে পারেননি হিন্দিভাষী প্রভু। কাগজ কলম দিতে নিজের নামটুকু কেবল লিখতে পেরেছিলেন।

শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানান ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবকে। প্রভুর ছবি এবং তাঁর নাম লেখা কাগজটিও পাঠানো হয় রেডিয়ো ক্লাবের কাছে। ওই রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, ‘‘খুব কঠিন কাজ ছিল। কারণ ওই বৃদ্ধের কোনও ঠিকানা ছিল না। তবে তাঁর মুখিয়া পদবি দেখে ধারণা হয়েছিল, তিনি বিহারের বাসিন্দা।’’

তিনি জানান, সেই অনুযায়ী বিহারের হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের পাঠানো হয়। তাঁরা নাউহাট্টা থানা থেকে খবর পান প্রভু মুখিয়ার নামে নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। সেখান থেকেই তাঁর ঠিকানা মেলে। বাড়ির লোকেদের প্রভুর ছবি দেখানো হয়। তাঁরা চিনতে পারেন। তার পরেই শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ কুলপি হাসপাতালে আসেন প্রভু মুখিয়ার ভাই চন্দ্রেশ্বর মুখিয়া, ছেলে বমবম কুমার মুখিয়া এবং বৌমা পানু দেবী। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি ছিলেন প্রভু। পরিবারের সদস্যদের দেখে তিনি প্রায় লাফ দিয়ে ওঠেন। জড়িয়ে ধরেন ছেলেকে।

চন্দ্রেশ্বর বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন দাদা। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। মাস দুয়েক আগে সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। আগেও এ রকম হয়েছে। তবে ফিরেও এসেছেন।’’ পানুদেবী বলেন, ‘‘যাক, শেষ পর্যন্ত যে ওনাকে ফিরে পেলাম, এটাই অনেক।’’ বমবম কুমার ধন্যবাদ জানান হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবকে।

কুলপি গ্রামীণ হাসপাতালের ব্লক মেডিক্যাল অফিসার আবু সালে মহম্মদ মেহফুজ উল করিম বলেন, ‘‘আপাতত সুস্থ হলেও ওই বৃদ্ধের দীর্ঘ চিকিৎসার প্রয়োজন। ওঁর বাড়ির লোকেদের তা জানিয়েছি।’’

Ham radio Old man হ্যাম রেডিয়ো
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy