বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা বাবু মাস্টারের। নিজস্ব চিত্র
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের দাপুটে তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার। পরবর্তী কালে হামলাও হয় তাঁর উপর। হাসপাতালে ভর্তি থাকা আহত বাবুকে সেই সময় সেখানে দেখতে গিয়েছিলেন অধুনা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি-তে ‘তিক্ত অভিজ্ঞতা’র সম্মুখীন হয়ে সেই বাবুই এ বার দল ছাড়লেন।
দল ছাড়ার কথা বুধবার জানিয়েছেন বাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিজেপি ছেড়ে দিয়েছি। এই দলে যোগ দেওয়ার কিছু দিন বাদে আমি বুঝে গিয়েছিলাম, জায়গাটা আমার জন্য উপযুক্ত হবে না। রাজনৈতিক বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা থাকায় আমি বেরিয়ে আসতে পারিনি। কিন্তু এই দীর্ঘ কয়েক মাসের যে তিক্ত অভিজ্ঞতা তার নিরিখে আমার মনে হয়েছে, এই জায়গাটা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের পক্ষে উপযুক্ত নয়।’’ পাশাপাশি তাঁর উপলব্ধি, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বিভাজনের রাজনীতি করে সফল হওয়া সম্ভব নয়। এখানে তৃণমূলের বিপক্ষে অন্য কোনও দল হতে পারে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতিমূর্তি একটা দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় নেত্রী।’’
বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা করে বাবু বলছেন, ‘‘উপলব্ধি আগেই হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি, পরিবেশের কারণে বেরিয়ে আসতে পারিনি। এখন মনে হয়েছে, আর যাই হোক বিজেপি দলটা জীবদ্দশায় করব না।’’ ফের কি তৃণমূলে যাবেন ইতিহাসের শিক্ষক বাবু? তাঁর কথায়, ‘‘এটা আমি বলতে পারি না। তবে আমি রাজনীতির মানুষ, রাজনীতিতেই থাকব। বিজেপি আর করব না। আজ থেকে ওদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক শেষ। একটু সুস্থ ভাবে, স্বস্তিতে থাকতে চাই।’’
প্রথম জীবনে সিপিএম করতেন হিঙ্গলগঞ্জের সেন্ট্রাল ভবানীপুর মডেল হাইস্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক বাবু। সেই সময় তাঁর দাপটে বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খেত। রাজ্যে পালাবদলের পর তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। এ হেন বাবু রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি-তে। বাবুর ইতিহাস বলছে, যখন যে দলে গিয়েছেন তখন সেই দলের হয়ে নিজের ‘কেরামতি’ দেখিয়েছেন। তবে, ভোটের আগে বিজেপি-তে যোগ দিলেও কামাল গাজি সেই অর্থে ‘কামাল’ করতে পারেননি পদ্মশিবিরের হয়ে।
এ হেন বাবুর দলত্যাগ নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভোটের আগে কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে দলে এসেছিলেন। তা পূরণ না হওয়ায় দল ছেড়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy