স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে তাঁকে পুড়িয়ে মারার অপরাধে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বারাসত আদালত।
আদালত সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর রাতে দত্তপুকুর থানা এলাকার বড়বড়িয়ার বাসিন্দা চঞ্চল দাস তার স্ত্রী স্বপ্না দাসের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। মহিলার আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাঁকে উদ্ধার করে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও তত ক্ষণে স্বপ্নার শরীরের ৯৫ শতাংশ ঝলসে গিয়েছে। পরের বছর ২ জানুয়ারি ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর আগে স্বপ্না পুলিশকে জানান, স্বামী চঞ্চলই তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
দত্তপুকুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে চঞ্চলকে গ্রেফতার করে। তদন্তে উঠে আসে, বিয়ের পর থেকেই স্বপ্নার উপরে নির্যাতন চালাচ্ছিল চঞ্চল। পুলিশ ১৪ জন সাক্ষীকে বারাসত আদালতে হাজির করিয়ে তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ করায়। বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক দ্বিতীয় কোর্টের বিচারক সংযুক্তা সেনগুপ্ত চঞ্চলকে দোষী সাব্যস্ত করেন। শুক্রবার তিনি ওই অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনান।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার পরের দিনই দত্তপুকুর থানায় স্বপ্নার বাবা বিধান মিস্ত্রি অভিযোগ দায়ের করেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ, ৩০৪বি এবং ৩০২ ধারায় আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। স্বপ্না যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতেই পুলিশকে জানান স্বামীর অত্যাচার এবং কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার কথা। বারাসত জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অপরাধী চঞ্চল দাসকে বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। সেই টাকা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)