গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল এক তরুণের। পাশাপাশি, অন্যান্য রাস্তাতেও বড়-ছোট দুর্ঘটনা নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গে ব্যস্ত রাস্তাগুলিতে লেগেই থাকছে যানজট। এই সমস্ত বিষয় পর্যালোচনা করে ট্র্যাফিক পরিকাঠামো পরিবর্তনের পরিকল্পনা করল ব্যারাকপুর পুলিশ। তাতে সাব-ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে পূর্ণাঙ্গ ট্র্যাফিক গার্ডে পরিণত করা, সেখানে আরও বেশি পুলিশকর্মী নিয়োগ করার চিন্তাভাবনা হয়েছে বলে খবর।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় গত বছর পথ দুর্ঘটনায় ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ৩৫০ জন গুরুতর জখম হয়েছিলেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন পুলিশকর্তারা। সূত্রের খবর, বিটি রোড, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশাপাশি কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, ঘোষপাড়া রোডের উপরে বিশেষ নজর দিতে চাইছেন ব্যারাকপুরের নতুন নগরপাল অজয় ঠাকুর। দুর্ঘটনার হার কমাতে কী পদক্ষেপ করা যায়, তা নিয়ে ট্র্যাফিক বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডানলপ, সোদপুর, নাগেরবাজার, ব্যারাকপুর, কাঁপা, নিমতা, শ্যামনগর আতপুর— এই সাতটি জায়গার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ট্র্যাফিক গার্ড রয়েছে তিনটি। সেগুলি ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকের দায়িত্বে রয়েছে। বাকি চারটি সাব-ট্র্যাফিক গার্ডের দায়িত্বে এখন আছেন সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসারেরা। ওই চারটি সাব-ট্র্যাফিক গার্ডকে পূর্ণাঙ্গ গার্ডে পরিবর্তিত করে ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকের হাতে সেগুলির দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে খবর।
জানা যাচ্ছে, সাতটি পূর্ণাঙ্গ ট্র্যাফিক গার্ড হলে তাতে আরও অফিসার, কর্মী নিয়োগ করা হবে। একই ভাবে, মহিলা পুলিশকর্মীও বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছে। সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের সিগন্যালিং ব্যবস্থা আরও সক্রিয় করা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, আরও বেশি ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে জানাচ্ছেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কর্তারা।
পাশাপাশি, বেহাল রাস্তাও দুর্ঘটনার একটি কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা। সেগুলি সংস্কারে পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। অন্য দিকে, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে পানশালাগুলির সামনেও কড়া নজরদারি করা হবে। ব্যারাকপুরের উপ-নগরপাল (সদর ও ট্র্যাফিক) অতুল বিশ্বনাথন বলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে নতুন কিছু পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মানুষকেও সচেতন হতে হবে। তারও প্রচার চলছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)