বেপরোয়া: গতি বিপদ ডেকে আনবে না তো? ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
দৃশ্য ১: বাইকে হেলেদুলে নানা কসরত দেখাচ্ছে দুই যুবক। প্রচণ্ড গতিতে ছুটছে গাড়ি। কারও মাথায় হেলমেট নেই। পথচারীরাও সে দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠছেন। কিন্তু বেপরোয়া যুবকদের তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই।
দৃশ্য ২: পর পর দু’টি স্কুটি। একটিতে তিনজন, অন্যটিতে দু’জন যুবক বসে। যথারীতি হেলমেটের বালাই নেই। বনগাঁর দিক থেকে গোপালনগরের দিকে বনগাঁ-চাকদহ সড়ক ধরে পাল্লা দিয়ে বেপরোয়া ভাবে রেস করছে। স্কুটির গতি যত বাড়ছে, যুবকদের মুখের হাসি ততই চওড়া হচ্ছে। ছোট চাকার ওই গাড়ি দেখে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় রাস্তার লোকজনের।
দৃশ্য ৩: একটি খালি ট্রাক এয়ার হর্ন বাজাতে বাজাতে তীব্র গতিতে ছুটছে। একটি বাইকে তিন যুবক পাল্লা দিয়ে ছুটছে। ট্রাককে ওভারটেক করার সঙ্গে সঙ্গে তিন যুবকের মুখে জয়ের হাসি। পথচারীরাও ওই দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে যান। এক প্রবীণ ব্যক্তি বললেন, ‘‘ওদের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে আগে পদক্ষেপ করা উচিত। তাঁরা সচেতন না হলে ছেলেরাও কোনও দিন সচেতন হবে না।’’
দুর্ঘটনা কমাতে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় বলেছেন, ‘‘দুরন্ত গতির বেপরোয়া মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হবে।’’ এরপর থেকে পুলিশের নজরদারি আরও বেড়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হচ্ছে না। রাতের কলকাতা শহরেও বেপরোয়া বাইক রেসের জন্য কামালগাজি সেতুতে ক’দিন আগেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বনগাঁ শহর ও তার আশেপাশের এলাকাতেও পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে, বেপরোয়া বাইক রেস বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা নানা মহলে।
বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘পুলিশের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করতে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। হেলমেট পরার কথা পই পই করে বলা হচ্ছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এত কিছুর পরেও কিছু বাইক চালক নিজেদের ভালটা বুঝতে পারছেন না। আমরা আরও কড়া পদক্ষেপ করব। সকলকে বোঝাতে আরও কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই সড়কে সম্প্রতি পথ দুর্ঘটনায় ১২ জনের প্রাণ গিয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক থেকে ইমারতি মালপত্র বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। ইমারতি ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। বেআইনি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। হেলমেটহীন বাইকও ধরে নির্দিষ্ট মামলা দেওয়া হয়। এত কিছুর পরেও বাইক চালকেরা এখনও সচেতন হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy