—ফাইল চিত্র।
গাড়ি দেওয়া হয় বছরে তিন মাস। অথচ, বর্ষাটুকু বাদ দিয়ে বছরের অনেকটা সময়ে টানা নজরদারির কথা তাঁদের। অভিযানও চালানোর কথা। কিন্তু গাড়ি ছাড়া সে কাজ কার্যত অসম্ভব বলে দাবি আধিকারিকদের।
সমস্যাটা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের। বেআইনি বালি-মাটি খাদানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার বারাসতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে বিধানসভার ভূমি সংস্কার বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি। সেই বৈঠকেই গাড়ি নিয়ে সমস্যার কথা উঠে আসে। স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যেরা জানিয়েছেন, এই বিষয়টি তাঁরা সরকারকে জানাবেন। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনকে তাঁরা বলেন, যাতে ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিকদের (বিএলআরও) অন্তত ছ’মাসের জন্য গাড়ি দেওয়া হয়, তা দেখতে। তা না হলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লাগাতার পদক্ষেপ করা যে সত্যি মুশকিল, মানছে স্ট্যান্ডিং কমিটিও।
গত কয়েক বছর ধরে দলীয় এবং প্রশাসনিক সভায় বার বার বালি এবং মাটি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি তাঁর নির্দেশের পরে গঙ্গা থেকে বালি তোলা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এমনকী, সরকারি ভাবে নিলাম ডেকে খাদান ইজারাও আপাতত বন্ধ। কিন্তু তারপরেও বালি-মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা যায়নি। উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় মাটি লুঠ বন্ধ হয়নি। প্রশাসন, বিশেষ করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর যাতে মাটি-বালি পাচার নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করে, সে জন্যই এ দিন বৈঠক করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যেরা। ওই কমিটির চেয়ারম্যান, পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি জানান, বালি ও মাটি পাচারে যাতে কড়া পদক্ষেপ করা হয়, এবং ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মীদের সুবিধা- অসুবিধার কথা জানতেই এই বৈঠক।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিকেরা (বিএলআরও) জানান, অনেক সময়ে পাচারের খবর পেলেও তাঁরা ঘটনাস্থলে যেতে পারেন না। আবার যে সব এলাকা থেকে নিয়মিত বালি ও মাটি পাচার হয়, সেই সব জায়গায় অভিযান চালালে ভাল হয়। কিন্তু তাঁরা পৌঁছতে পারেন না।
কিন্তু কেন?
স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যের প্রশ্নের জবাবে ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা জানান, মূলত বিএলআরও-রা শীতের সময়ে মাত্র তিন মাসের জন্য গাড়ি পান। ফলে বছরের অন্যান্য সময়ে তাঁরা নজরদারি চালালেও অভিযানে যেতে পারেন না। এমনকী, মাটি পাচারের কোনও অভিযোগ পেলেও সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারেন না। বড় ঘটনা ঘটলেও গাড়ি জোগাড় করে পৌঁছতে অনেক সময় লেগে যায়।
বৈঠকের পরে অর্ধেন্দু বলেন, ‘‘গাড়ি নিয়ে একটা সমস্যার কথা বৈঠকে উঠেছে। যাতে অন্তত ছ’মাস বিএলআরও-দের গাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়, তা জেলা প্রশাসনকে দেখতে বলেছি। অসুবিধার কথা সরকারকেও জানানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy