তিন দিনের প্রেম। তাতেই এমন হাবুডুবু অবস্থা, প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছিল ষোলো বছরের মেয়েটি।
খুঁজেপেতে তাদের ফিরিয়ে আনার পরে দু’বাড়ির লোকজন বসে সিদ্ধান্ত নেন, পাত্র রোজগেরে। এই অবস্থায় চার হাত এক করে দেওয়াই ভাল।
কিন্তু বিয়ের খবরটা ওঠে পুলিশের কানে। শেষমেশ আটকানো গিয়েছে বিয়ে। মেয়ের পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানিয়েছেন, নাবালিকার বিয়ে অপরাধ, সে কথা জানতেন না তাঁরা। তা ছাড়া, মেয়ে যেহেতু বাড়ি থেকে পালিয়েছিল, তাই সামাজিক সম্মান বাঁচাতেই তড়িঘড়ি বিয়ের সিদ্ধান্ত।
কী ভাবে মেয়েটির আলাপ ওই যুবকের সঙ্গে?
পুলিশ জানতে পেরেছে, মায়ের সঙ্গে মেয়ে দিন কয়েক আগে বাসন্তীর বাড়ি থেকে হাবরায় দিদিমার কাছে এসেছিল। সেখানেই পরিচয় হয় বছর তেইশের স্থানীয় এক যুবকের। তিন-চার দিনের মেলামেশায় প্রেম গাঢ় হয়। আর তারপরেই ঘটে যায় একের পর এক ঘটনা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ছেলের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে সে খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। বাড়িতে হাজির হন হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধায়। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বিয়ে আটকানোর পরে মেয়েটিকে থানায় আনা হয়। পরে তুলে দেওয়া হয় চাইল্ড লাইনের হাতে।
আইসি মেয়েটির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ছেলে কী করে। উত্তরমে আমতা আমতা করেছে মেয়েটি। মেয়ের মা জানান, ছেলে মুম্বইয়ে কাজ করে, এটুকু জানতেন তাঁরা। ভেবেছিলেন, সাধ করে বিয়ে যখন করছে, নিশ্চয়ই খেতে-পরতে দেবে। কিন্তু এ ভাবে অচেনা-অজানা ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পরে মেয়েকে পাচার করে দেওয়া হত না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? এ কথা শুনে মাথা নিচু করে থেকেছেন পরিবার-পরিজনেরা। টনক নড়ে তাঁদের। মেয়ের বাড়ির লোক জানিয়ে গিয়েছেন, ছেলের সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেবেন। মেয়ের আঠারো বছর বয়স হলে যদি ছেলেটি তখনও বিয়েতে রাজি থাকে, তা হলে এই পাত্রের হাতেই তুলে দেবেন মেয়েকে।
মেয়েটি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। মা-বাবা স্কুলে পাঠাতে চাইলেও পড়ায় আর মন নেই তার। তবে বিয়ের ভূতটা নেমেছে মাথা থেকে।
এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘বিয়ের নাম করে মেয়ে পাচারের ঘটনা আকছার ঘটে। এ ভাবে অজ্ঞাতকুলশীল ছেলের হাতে পড়ে মেয়ে কোথায় চলে যেতে পারে, তার কোনও ঠিক আছে? নাবালিকার বিয়ে দেওয়া যেমন অপরাধ। তেমনই পাত্রপক্ষের সম্পর্কে খোঁজ-খবর না নিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত আরও বড় ভুল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy