Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সুপর্ণা নস্করের মৃত্যু

মিলল না বাবা-মায়ের দেখা, বৃন্দাকে ঘটনাস্থল দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা

মোটর বাইকের ধাক্কায় জীবনতলায় মৃত কিশোরী সুপর্ণা নস্করের বাড়িতে গিয়ে তার মৃত্যুর ‘সুবিচার’ চাইলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। রবিবার তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী মিনতি ঘোষ, রেখা গোস্বামী, রমলা চক্রবর্তীরা। সুপর্ণার বাবা-মা বাড়িতে না থাকলেও বৃন্দার সঙ্গে কথা বলেন তাঁর কয়েক জন আত্মীয়-প্রতিবেশী।

নেত্রীকে ঘটনাস্থল ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ।

নেত্রীকে ঘটনাস্থল ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০০:৫৮
Share: Save:

মোটর বাইকের ধাক্কায় জীবনতলায় মৃত কিশোরী সুপর্ণা নস্করের বাড়িতে গিয়ে তার মৃত্যুর ‘সুবিচার’ চাইলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট।

রবিবার তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী মিনতি ঘোষ, রেখা গোস্বামী, রমলা চক্রবর্তীরা। সুপর্ণার বাবা-মা বাড়িতে না থাকলেও বৃন্দার সঙ্গে কথা বলেন তাঁর কয়েক জন আত্মীয়-প্রতিবেশী। রবিবার মায়ের সঙ্গে জল আনতে বেরিয়ে মোটর বাইকের ধাক্কায় প্রাণ যায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুপর্ণা নস্করের। পড়শি এক কিশোরকে এই ঘটনায় গ্রেফতারও করে পুলিশ। যে রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটেছিল, বৃন্দাকে নিয়ে সেই এলাকা ঘুরিয়ে দেখান প্রতিবেশী-আত্মীয়েরা। বৃন্দা বলেন, ‘‘এলাকার মানুষ জন আমাদের ঘটনাস্থল ঘুরিয়ে দেখিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়।’’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঘটনার পরে রেজ্জাক মোল্লা, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, সুজন চক্রবর্তী এবং ভারতী মুৎসুদ্দিদের নিয়ে যে দলটি গিয়েছিল পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে, তাঁদেরকেও ঘটনাস্থল ঘুরে দেখিয়ে দুর্ঘটনার দাবির বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মাধ্যমিকের ফলের নিরিখে এ বার নিজের স্কুলে সেরা হয়েছে সুপর্ণা। কিন্তু সেই ফল দেখে যেতে পারল না মেয়েটি। বৃন্দা পরে বলেন, ‘‘ওর এই রেজাল্টে সকলে কত খুশি হতে পারত। অথচ ওর বাবা-মায়ের এখন কী অবস্থা! ওঁদের সঙ্গে দেখা করে পাশে দাঁড়াতে এসেছিলাম। আমরা দেখব, পরিবারটিকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়।’’ এই উদ্যোগের পিছনে কোনও রাজনীতি উদ্দেশ্য নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বৃন্দা বলেন, ‘‘মেয়েটির মৃত্যুর তদন্ত ঠিক পথে এগোক, এই দাবি করেছেন স্থানীয় মানুষ। দোষীদের উপযুক্ত বিচার চান তাঁরা।’’

মোটরবাইকের ধাক্কায় জীবনতলায় মৃত কিশোরী সুপর্ণা নস্করের বাড়ি গিয়ে তার মৃত্যুর
‘বিচার’ চাইলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। বললেন, ‘‘এলাকার মানুষ
আমাদের ঘটনাস্থল ঘুরিয়ে দেখিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়।’’

কিন্তু এ দিন সুপর্ণার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। তা নিয়ে কিছুটা রহস্য দানা বেঁধেছে। মেয়েটির সম্পর্কে এক ঠাকুমা শ্যামলী নস্করের বক্তব্য, ‘‘প্রায় দিনই কেউ না কেউ বাড়িতে আসছেন। নানা প্রশ্ন করছেন। পুরনো স্মৃতি উসকে উঠছে বাবা-মায়ের। ওঁরা কষ্ট পাচ্ছেন। সে সব কারণেই এক আত্মীয় এসে ওঁদের নিজেদের কাছে নিয়ে গিয়েছেন।’’

কিন্তু এর পিছনে কি কোনও মহলের চাপ আছে? সে কথা অবশ্য মানতে চাননি সুপর্ণার এক কাকা সুশান্ত নস্কর। বৃন্দারা যে এ দিন আসছেন, তা তাঁদের আগে জানানো হয়নি বলে দাবি তাঁর। বৃন্দা নিজেও বলেন, ‘‘আমরা যে ওখানে যাব, মেয়েটির বাবা-মা তা জানতেন না। তবে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছে।’’ বৃন্দাদের যুক্তি, আগে থেকে খবর দিয়ে গেলে কোনও গোলমাল না হয়, সে জন্যই জানানো হয়নি। ফলে সবর্ভারতীয় নেত্রী এসে কেন মেয়েটির বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা পেলেন না, কোনও চাপের মুখে তাঁদের সরে যেতে হল কিনা, সে প্রশ্ন রয়েই গেল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘ওঁরা কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছেন বলে শুনেছি।’’

এ রাজ্যে অপরাধের ঘটনা বেড়ে চলেছে বলে দাবি করে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বৃন্দা। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রতিক মন্তব্য টেনে বৃন্দার বক্তব্য, ‘‘অপরাধের লাইসেন্স দিচ্ছেন উনি।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE