Advertisement
E-Paper

পিকনিকে প্রাণ ফিরে পায় গঙ্গাপাড়ের ‘ব্রিটিশ হাউস’

শীত এলে প্রাণ ফেরে গঙ্গাপাড়ের উঁচু পাঁচিল ঘেরা ব্রিটিশ আমলের অট্টালিকাগুলিতে। ভিতরের ক্রিকেট মাঠ এবং টেনিস কোর্ট খেলাধুলোয় সরগরম হয়। গঙ্গার ঘাটে মহিলারা ভিড় জমান। সুস্বাদু রান্নার গন্ধে ভরে ওঠে চারপাশ। পিকনিক বলে কথা!

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:১৮

শীত এলে প্রাণ ফেরে গঙ্গাপাড়ের উঁচু পাঁচিল ঘেরা ব্রিটিশ আমলের অট্টালিকাগুলিতে।

ভিতরের ক্রিকেট মাঠ এবং টেনিস কোর্ট খেলাধুলোয় সরগরম হয়। গঙ্গার ঘাটে মহিলারা ভিড় জমান। সুস্বাদু রান্নার গন্ধে ভরে ওঠে চারপাশ। পিকনিক বলে কথা!

বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের চটকলগুলি পিকনিকের আদর্শ জায়গা। বেশির ভাগ চটকলই অর্থাভাবে ধুঁকছে। অনেকগুলি আবার বন্ধ। শ্রমিকদের অন্নসংস্থানের দিশা নেই। বিশাল বিশাল জায়গা জুড়ে গাছগাছালিতে ভরা অট্টালিকাগুলি বছরভর যেন প্রাণহীন হয়ে থাকে! প্রায় প্রতিটি চটকলেরই গঙ্গার ধারে একটি করে বাগানবাড়ি রয়েছে। তাতে ফায়ার-প্লেস, নাচঘর, পিয়ানো— সবই রয়েছে। বাথরুমগুলিও তাক লেগে যাওয়ার মতো। সবই সেই আমলের। পুরনো জৌলুস ফিকে হয়েছে। কিন্তু আভিজাত্য এখনও অটুট। এমনিতে এ সব জায়গায় সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। তবে পিকনিকের মরসুমে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা দিলেই কয়েক ঘণ্টার জন্য বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ মেলে ওই সব ‘ব্রিটিশ হাউস’-এ। লোকের মুখে মুখে চটকলগুলির এমনই নাম।

চটশিল্পে মন্দার ছবিটা বেশ কয়েক দশক ধরেই। সম্প্রতি নোট সঙ্কটের পর এই ছবি আরও স্পষ্ট হয়েছে। এই অবস্থায় ওই সব অট্টালিকা টিকিয়ে রাখা কঠিন। তাই বেশ কিছু চটকল বিয়েবাড়ি, অন্নপ্রাশন বা অনুষ্ঠানেও ভাড়া দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে, শীতের মরসুমে চটকল কর্তৃপক্ষের অন্যতম ভরসা পিকনিক।

শনি, রবি বা অন্য ছুটির দিনে পিকনিকের দৌলতেই বাড়িগুলি যেন রঙিন হয়ে ওঠে। উপরি আয়ের কথা মাথায় রেখে তাই পিকনিকের দলবলকে ফেরাতে চান না কোনও কর্তৃপক্ষই। যদিও একাধিক চটকল কর্তৃপক্ষের দাবি, পিকনিক বা কোনও অনুষ্ঠানের জন্য জায়গা ভাড়া দিয়ে যে টাকা আয় হয় তা নিতান্তই কম। কারখানা চত্বরের জঙ্গল সাফাই বা ভবন সংস্কারের টুকিটাকিতে তা খরচ হয়ে যায়।

খড়দহের লুমটেক্স চটকলে কিছুদিন আগেও শ্যুটিং করেছেন অমিতাভ বচ্চন, বিদ্যা বালন, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিরা। টিটাগড়ের কেনিসন, কেলভিন বা ভিক্টোরিয়া চটকলে প্রতিটি ছুটির দিনেই চলছে পিকনিক। এই চটকলগুলিতে বেশিরভাগ পিকনিকের সুপারিশ আসে স্থানীয় পুরসভাগুলির চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে। টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘কারখানার এক প্রান্তে গেস্ট হাউসে পিকনিক হয়। এত বড় জায়গা যে দু’টি বা তিনটি বড় দল একসঙ্গে পিকনিক করতে পারে। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ শুধু জায়গাটুকুই দেন। বাকি সব বাইরে থেকে ব্যবস্থা করতে হয়।’’ জগদ্দলের বন্ধ আলেকজান্ডার চটকলের কেয়ারটেকার বিজয় সিংহ বলেন, ‘‘পুরনো বাড়ি। সব ভেঙে যাচ্ছে। পিকনিক বা অন্য অনুষ্ঠান থেকে সামান্য যা আয় হয়, তা দিয়েই ব্রিটিশ আমলের অট্টালিকা বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়।’’

আর পিকনিকে আসা লোকজন কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও ব্রিটিশ আমলের অট্টালিকায় ঢুকে অন্য রকম অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফেরেন।

Barrackpore British House Picnic Spot Tourists
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy