Advertisement
E-Paper

Jagaddhatri Puja: বাড়তি আলোয় আরও উজ্জ্বল জগদ্ধাত্রীর শহর, শিল্পীরাও

আলোর বাহারে কোথাও দেখা গিয়েছে পাখপাখালির আনাগোনা, মাছের ভেসে বেড়ানো। কোথাও জোকার, কোথাও আবার উৎসবের ঘট-কলাগাছ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৩
 চন্দননগর স্টেশন রোডে আলোর গেট।

চন্দননগর স্টেশন রোডে আলোর গেট। ছবি: তাপস ঘোষ

লক্ষ্য—আলোকশিল্পীদের আঁধার থেকে আলোয় ফেরানো। সে জন্য জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগরে পথ-আলোকসজ্জার উপরে জোর দিয়েছিল বারোয়ারিগুলি। বরাত পেয়ে আলোকশিল্পীরাও উজাড় করে দিয়েছেন নিজেদের। তাঁদের মুন্সিয়ানায় গত কয়েক দিন গঙ্গাপাড়ের প্রাচীন জনপদ আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠেছিল ‘আলোর শহর’।

আলোর বাহারে কোথাও দেখা গিয়েছে পাখপাখালির আনাগোনা, মাছের ভেসে বেড়ানো। কোথাও জোকার, কোথাও আবার উৎসবের ঘট-কলাগাছ। কোথাও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। রাজপথ থেকে অলিগলি— সব পথেই মিলেছে আলোর ঠিকানা!

এ বারেই প্রথম পথ-আলোকসজ্জার বিষয় এবং নান্দনিকতার নিরিখে পুরস্কার দিয়েছে কেন্দ্রীয় পুজো কমিটি। বিচারে প্রথম হয়েছে ফটকগোড়া সর্বজনীন। যুগ্ম দ্বিতীয় তালপুকুর শিশু উদ্যান এবং মধ্যাঞ্চ‌ল। বাগবাজার তালপুকুরধার এবং দশভূজাতলা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। সংশ্লিষ্ট পুজোর লোকজন এবং আলোকশিল্পীরা এই পুরস্কারে রীতিমতো উজ্জীবিত।

চন্দননগর স্টেশনে নেমে পূর্ব দিকে কিছুটা গেলেই দর্শনার্থীদের স্বাগত জানিয়েছে ফটকগোড়ার পেল্লাই আলোর গেট। তাতে সমুদ্র-জগৎ তুলে ধরেছেন শিল্পী নিত্যানন্দ দাস। তাতে খেলেছে মাছ, রয়েছে ডুবুরি। এ ছাড়াও আলোর সাজে তুলে আনা হয়েছে বইয়ের পাতা। দেখা গিয়েছে ‘এ ফর অ্যাপেল, অ্যান্ট’, ‘বি ফর বল, ব্যাট’, ‘সি ফর ক্যাট, ক্যাপ’…।

পুজো কমিটির সহ-সভাপতি রতন পাল বলেন, ‘‘বিসর্জ‌নের শোভাযাত্রার আলোর দিকে আমাদের নজর থাকে। পথ আলোকসজ্জা ততটা গুরুত্ব পায় না। এ বার বিসর্জন নেই। করোনার জন্য আলোকশিল্পীদের কঠিন সময় যাচ্ছে। তাই, ওঁদের পাশে দাঁড়াতেই পথ-আলোয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মানুষ আকৃষ্ট হয়েছেন। আমরা খুশি।’’ শহরের সুভাষপল্লি উত্তরপাড়ার বাসিন্দা নিত্যানন্দ বলেন, ‘‘সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এখানকার শিল্পীরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আলো লাগান। সকলে একটা জায়গায় কাজ দেখানোর এটাই সুযোগ। ফলে, চন্দননগর আমাদের কাছে বিশ্বকাপের শামিল। করোনা-পর্বে খুব খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে। পুজোকর্তাদের এমন উদ্যোগে একটু সুরাহা হবে।’’

আলোর বাহারে দশভূজাতলার মণ্ডপে দেখা গিয়েছে, করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন ডাক্তার-নার্স, ঝাড়ুদার ঝাঁট দিচ্ছেন, সাংবাদিক সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। পুলিশ-দমকলও রয়েছে। পুজো কমিটির কর্ণধার সুনন্দ ভৌমিক বলেন, ‘‘করোনা-যোদ্ধাদের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেছি। কঠিন সময়ে ওঁদের উজ্জ্বল ভূমিকার জন্যই এই থিম।’’ এখানে আলোকশিল্পী উর্দিবাজারের মহম্মদ রুস্তম এবং মহম্মদ মুস্তাফা। রুস্তমের কথায়, ‘‘দু’বছর ধরে তেমন কাজ হয়নি। পুরস্কার পেয়ে ভাল লাগছে। আশা করব, খারাপ সময় কাটবে।’’ তিনি জানান, দশভূজাতলা ছাড়াও তাঁরা উর্দিবাজার, বাগবাজার চৌমাথা, নাড়ুয়া সরকারপাড়ায় আলো লাগিয়েছেন।

তালপুকুর শিশু উদ্যানে দেখা গিয়েছে— ‘সেভ ওয়ার্ল্ড’। পুজো কমিটির সভাপতি জয়ন্তকুমার মিত্র বলেন, ‘‘সবুজায়ন ছাড়া পৃথিবীকে সুস্থ রাখা যাবে না। এই বার্তা দিতেই আমাদের ভাবনা।’’ শিল্পী পিন্টু মুখোপাধ্যায়ের কারিকুরিতে এখানে আলোর সঙ্গে শব্দের প্রক্ষেপণে সিংহের গর্জন, হাতির ডাক শোনা গিয়েছে।

করোনা-পর্বে বরাত না থাকায় অনেক আলোকশিল্পীর ব্যবসা ছোট হয়েছে। বহু কারিগর রোজগারের অন্য পথ ধরেছেন। শিল্পীদের একাংশও আলোর সঙ্গে অন্য ব্যবসা ধরেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ সাউ বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতি থেকে আলোকশিল্পীদের ঘুরে দাঁড়ানোর দিশা দেখাতেই পথ-আলোকসজ্জায় জোর দেওয়া এবং পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।’’ শিল্পীদের একাংশ বলছেন, এই সিদ্ধান্ত তাঁদের কাছে আশার আলো। তাই তাঁরা আলোর জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন জগদ্ধাত্রীর শহরে।

Jagaddhatri Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy