মাটি কোপানো থেকে শুরু করে চারা লাগানো— সবই করেছে নিজের উদ্যোগে। তৈরি করেছে জৈব সার। সেই সার দিয়ে মাটির উর্বরতা এনে স্বীকৃতি পেল সাগরের ফুলবাড়ি শীতলা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া দীপ্তি প্রামাণিক।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে এ বছর ছোটদের জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এই কিশোরী। এই কাজে তার দুই সহপাঠিনী সপ্তপর্ণা মণ্ডল এবং অর্পিতা পণ্ডিতও তাকে সাহায্য করেছে।
উচ্চফলনশীল দেশি ধানের উপরে নিজেদের হাতে তৈরি করা জৈব সার এবং পোকা তাড়ানোর ওষুধ প্রয়োগ করেছিল সাগরের মুড়িগঙ্গা পঞ্চায়েতের কষতলার বাসিন্দা দীপ্তি। তাতে ফলন ভাল বলে হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। চাষি পরিবারের মেয়ের এই প্রকল্প নির্বাচিত হয়েছে প্রতিযোগিতার জন্য। ডিসেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রে বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চে তার এই গবেষণা আলোচনা করবে দীপ্তি।
মেয়েটির কথায়, ‘‘এই সার যাতে মানুষ অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন, সে জন্যই এই প্রচেষ্টা।’’
চাষিদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছেছে দীপ্তিদের কাজের কথা। ওই সংস্থার কর্তা তথা প্রাণিবিদ অমলেশ মিশ্র বলেন, ‘‘জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে নির্বাচিত হওয়ার আগে ওই ছাত্রীর প্রকল্প সম্পর্কে জানানো হয়েছিল ভারতের কৃষি বিজ্ঞানী এমএস স্বামীনাথনের কাছে। তিনি কাজের প্রশংসা করেছেন।’’
প্রায় পাঁচ দশক ধরে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে মাটির উর্বরতা প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে মাটির উর্বরতা ফেরানো সম্ভব বলে মনে করছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। রাজ্যের কৃষি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহ অধিকর্তা তথা কৃষি বিজ্ঞানী অনুপম পাল বলেন, ‘‘এ ভাবে নিজের মতো সার তৈরি করে জমিতে প্রয়োগ করতে পারলে আর নির্দিষ্ট সময়ে কিছু দেশীয় বীজের ফসল ফলালে তিন বছরেই উর্বরতা ফিরে পাবে জমি। তবে এ সবের আরও ব্যাপক ভাবে প্রচার দরকার কৃষকদের মধ্যে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy