Advertisement
E-Paper

বাজির শব্দে কান ঝালাপালা কমল কালীপুজোর রাতে 

প্রবীণ বাসিন্দা তথা পরিবেশ কর্মী অজয় মজুমদার রবিবার রাত ১২টা নাগাদ শুয়ে পড়েন। বললেন, ‘‘ঘুমতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত শব্দবাজির আওয়াজ এ বার কার্যত কানে আসেনি। ’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪২
আনন্দ-আয়োজন: বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

আনন্দ-আয়োজন: বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

শব্দের তাণ্ডব থেকে রেহাই মিলল কালীপুজোর রাতে। অন্যান্য বছর শব্দের দাপটে কান পাতা দায় হত। ধোঁয়া, বারুদের গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে থাকত। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি অন্য রকম। বনগাঁ শহরে এমন কালীপুজো শেষ কবে কেটেছে, মনে করতে পারছেন না কেউ।

প্রবীণ বাসিন্দা তথা পরিবেশ কর্মী অজয় মজুমদার রবিবার রাত ১২টা নাগাদ শুয়ে পড়েন। বললেন, ‘‘ঘুমতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত শব্দবাজির আওয়াজ এ বার কার্যত কানে আসেনি। অন্য বছরে গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজির তাণ্ডব চলেছে। মানুষ কিছুটা হলেও সচেতন হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।’’ কালীপুজোর রাতে উচ্চস্বরে মাইক বাজতেও শোনেননি বলে জানালেন অনেকেই।

স্থানীয় খ্রিস্টানপাড়ার বাসিন্দা শুভেন্দু মণ্ডল অন্য বছরে কালীপুজোর রাতে খুব প্রয়োজন ছাড়া বের হতেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সত্যিই এ বার কালীপুজোর রাত তেমন শব্দবাজি ফাটেনি। পুজোর নিমন্ত্রণ ছিল। রাতে সেখানে গিয়েছিলাম।’’

কী ভাবে বদলাল পরিস্থিতি?

পুলিশ-প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দুর্গাপুজোর পর থেকে বনগাঁ থানার তরফে শব্দবাজির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চলেছে। প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শব্দবাজির মজুত এ বার কারবারিরা তেমন করতে পারেননি। পুলিশি অভিযানের পাশাপাশি, মানুষও কিছুটা সচেতন হয়েছেন। অনেক অভিভাবক এ বার ছেলেমেয়েদের শব্দবাজি ফাটাতে দেননি। তার পরিবর্তে আলোর বাজি ফাটাতে দেখা গিয়েছে অনেককে।

রবিবার রাতে থানার আইসি মানস চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশ গোটা এলাকায় টহল দিয়েছেন। বাইকে করেও পুলিশ টহল চলেছে। মানস বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে অভিযান চালিয়ে এক কুইন্টাল শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মানুষের সচেতন হয়েছেন বলে শব্দবাজি কম ফেটেছে।’’

লক্ষ্মীপুজোর রাতের মতো শব্দবাজির তাণ্ডব কালীপুজোর রাতে ছিল না হাবড়া শহরে। শব্দবাজি ফেটেছে কম।

অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার শব্দবাজির তাণ্ডব কমেছে ভাঙড়েও। প্রশাসন তৎপর ছিল। ভাঙড়ের পাগলাহাট, জাগুলগাছি, বোদরা, বড়ালিঘাট, কাশীপুর থানার নাংলা, কাশীপুর, মঙ্গলপুর, ছেলেগোয়ালিয়া, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার বেঁওতা, বামনঘাটা, তাড়দহ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় শব্দবাজির জেরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠতেন মানুষ। এ বার পরিস্থিতি বদলেছে বলে জানালেন বহু মানুষ। তবে কিছু এলাকায় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে খুবই সামান্য শব্দবাজির আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মত।

কী ভাবে কমল তাণ্ডব?

প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা এ বার প্রথম থেকেই সচেতন ছিলাম। বিভিন্ন পুজো কমিটিকে সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল শব্দবাজি ব্যবহার না করার জন্য। তা ছাড়া, এলাকার বাজি বিক্রেতাদের সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল, শব্দবাজি বিক্রি না করার জন্য। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর শব্দবাজি আটক করা হয়েছিল।’’

ভাঙড়ের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘অন্য বারের তুলনায় এ বার শব্দবাজির তাণ্ডব ছিল অনেকটাই কম। প্রশাসন খুবই তৎপর ছিল। তবে কিছু কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজির আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে।’’

ভাঙড়ের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সাদা পোশাকের পুলিশ ছিল রাস্তায়। কোথাও শব্দবাজি ফেটেছে বলে মানুষ অভিযোগ জানাননি।’’

অন্য দিকে, পর পর দু’দিন ধরে অভিযান চালিয়ে ১৮৮ কিলোগ্রাম শব্দবাজি আটক করে নিষ্ক্রিয় করেছে কুলপি থানার পুলিশ। বেলপুকুর, করঞ্জলি ও নিশ্চিন্তপুর গ্রাম থেকে বাজি আটক করা হয়।

শব্দবাজি কম ফেটেছে বসিরহাট মহকুমাতেও। তবে কালীপুজোর রাতে ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী-সহ নানা জায়গায় শব্দবাজি ফেটেছে। সোমবার সন্ধ্যাতেও প্রচুর শব্দবাজি ফাটে এলাকায়।

Fire Cracker Kali Puja 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy