Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Illegal Constructions

ভাঙড়ে জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণের নালিশ

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এর আগে ওই বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিয়েছিলেন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলাম। তার পরে বেশ কয়েক মাস জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণের কাজ বন্ধ ছিল।

An image of Bhangar

—প্রতীকী চিত্র।

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:২৫
Share: Save:

বাসন্তী হাইওয়ের পাশে জলাভূমি (ওয়েটল্যান্ড) ভরাট করে বিশাল আকারে বেআইনি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ভাঙড় ১ ব্লকের কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানার বানতলার একটি অ্যাকাডেমির অদূরে জলাভূমি ভরাট করে বিরাট এলাকা জুড়ে বেআইনি ভাবে পাঁচিল দিয়ে ঘেরার কাজ চলছে।

স্থানীয় মানুষের আরও অভিযোগ, এর আগে ওই বেআইনি নির্মাণ (পাঁচিল) ভেঙে দিয়েছিলেন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলাম। তার পরে বেশ কয়েক মাস জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণের কাজ বন্ধ ছিল। হঠাৎ করে রাতারাতি কিছু জমি মাফিয়া, প্রোমোটার, দালাল ফের বেআইনি ভাবে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু করেছে সেখানে।

বিরোধীদের অভিযোগ, ভাঙড় ১ ও ২ ব্লকের তাড়দহ, বামনঘাটা, বেঁওতা ১ ও ২ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাভূমি, পুকুর অবাধে ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ কাজ চলছে। শাসকদলের একাংশ, পুলিশ ও সরকারি দফতরের যোগসাজশে এই কাজ চলছে বলে অভিযোগ।

ভাঙড় ২ বিডিও পার্থ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমাকে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ভূমি সংস্কার দফতরকে বলছি, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য। সেই মতো আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জিত সর্দার, মালতি সর্দারেরা বলেন, ‘‘ভাঙড়ের ওই সমস্ত এলাকায় অধিকাংশ জমি জলাভূমির মধ্যে পড়ে। শাসকদল ও প্রশাসনের একাংশ যোগসাজশ করে
বেআইনি ভাবে জলভূমি ভরাট করে নির্মাণ করছে। কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ এলে তখন কিছু দিনের জন্য কাজ বন্ধ থাকে। পরে ফের শুরু হয়ে যায়।’’ এ বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে সকলে সব কিছু দেখছে। আসলে সকলে মিলে টাকা খাচ্ছে বলে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তৃণমূল ও তৃণমূলের পুলিশ সব জানে।’’ আইএসএফের ভাঙড় ২ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে বলে আসছি, শাসকদলের মদতে ভাঙড়ের ওই সমস্ত এলাকায় জলাভূমি, পুকুর রাতারাতি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। আমরা পুলিশ-প্রশাসনকে বিভিন্ন সময়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না।’’

এ বিষয়ে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুলের বক্তব্য, ‘‘এর আগে আমাদের লোকজন ওই বেআইনি পাঁচিল ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন কাজ বন্ধ থাকার পরে ফের শুরু হয়েছে। পুলিশ যদি কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে আমি একা কী করতে পারি! পুলিশ-প্রশাসনকে লিখিত ভাবে বার বার বিষয়টি জানিয়েছি। বেআইনি কাজ অবিলম্বে বন্ধ না হলে আমরা ব্লক প্রশাসন, ভূমি সংস্কার দফতরকে সঙ্গে নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’’

এ বিষয়ে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে আমি কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার ওসি-কে বলেছি, অবিলম্বে ওই বেআইনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। যদি কাজ বন্ধ না হয়, তা হলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর ধর্না মঞ্চে গিয়ে পুরো বিষয়টি জানাব।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের অবশ্য কটাক্ষ, বখরা নিয়ে সমঝোতা না হওয়াতেই দলের এক পক্ষ এমন হুঙ্কার ছাড়ছে।

কলকাতা পুলিশের পূর্ব ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যখনই কোনও অভিযোগ আসে, তখনই আমরা বেআইনি কাজ বন্ধ করে দিই। কাউকে ছাড় দেওয়া হয় না।
এ ধরনের অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Constructions Bhangar Wetlands
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE