Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কন্যা সন্তান, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ

শনিবার রাতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন বাদুড়িয়ার পোলতা গ্রামের ওই তরুণী। পুলিশ জানিয়েছে, মাধু মণ্ডল (২৬) নামে ওই তরুণীর বাবা অশোক সরকার আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মাধু মণ্ডল

মাধু মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০২:২৪
Share: Save:

বিয়ের পর সব ঠিকঠাকই চলছিল। অভিযোগ, কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই তরুণীর উপর চলত মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার।

অভিযোগ, এরই জেরে শনিবার রাতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন বাদুড়িয়ার পোলতা গ্রামের ওই তরুণী। পুলিশ জানিয়েছে, মাধু মণ্ডল (২৬) নামে ওই তরুণীর বাবা অশোক সরকার আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর ভিত্তিতে মৃতের শ্বশুর শঙ্কর মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বামী মুক্তি মণ্ডলের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আট বছর আগে বাদুড়িয়ার নয়াবস্তিয়া গ্রামের মাধুর সঙ্গে বিয়ে হয় পোলতার বাসিন্দা মুক্তির। মুরগি কাটার কাজ করে মুক্তি। তাঁদের দুই মেয়ে। সাত বছরের বর্ষা এবং দেড় বছরের মেঘলা। মৃতার কাকা বাসুদেব সরকারের দাবি, বিয়ের পর মাধুর সংসারে তেমন কোনও অশান্তি ছিল না। তবে মেয়ে জন্মানোর পর সংসারে অশান্তি শুরু হয়। সব দায় মাধুর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও করত তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী। বাসুদেববাবুর অভিযোগ, মদ খেয়ে বাড়িতে ফিরে মাধুকে মারধরও করত জামাই।

পুলিশ জানায়, গণ্ডগোলের জেরে বছর তিনেক আগে মাধু বড় মেয়ে বর্ষাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান। অশোকবাবুর কথায়, ‘‘আমার কাছে কয়েক মাস ছিল মাধু। সে সময়ে একদিন মেয়ের শ্বশুর এসে এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলে মাধুকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ছোট মেয়ে মেঘলা জন্মানোর পর ফের অশান্তি শুরু হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, এরপর থেকে মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রাও বেড়েছিল।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশকে মাধুর শ্বশুর শঙ্কর জানায়, জেদি স্বভাবের ছিল বৌমা। সামান্য কারণে উত্তেজিত হয়ে পড়ত। এ দিন রাতে সে ঘরের মধ্যে গলায় দড়ি দেয়। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মৃতের পরিবারের দাবি, মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে—এ কথা কেন তাঁদের জানানো হল না। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সব শুনে ভোর রাতে মাধুর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছয় তাঁর বাড়ির লোকজন। কিন্তু তখন ঘরে কেউ ছিল না বলে দাবি মাধুর বাপের বাড়ির লোকেদের। ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে সব পালিয়েছে। অশোকবাবুর অনুমান, মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। খুন না আত্মহত্যা ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বলা সম্ভব নয়। ওই রিপোর্টে হত্যার কথা বলা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা যোগ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE