কচি ডাবের জল খাওয়ার প্রতি আগ্রহ সকলেরই। কিন্তু ফলন কমে যাওয়ায় ডাবের দাম এখন প্রায় আকাশ ছোঁয়া। ফলে ডাবের জল খাওয়া কার্যত বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে।
চিকিৎসকদের অভিমত, কচি ডাবের জল শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পেট ঠান্ডা করার পাশাপাশি হজম শক্তিও বাড়ায়। ডাবের জলে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ছাড়াও নানা পুষ্টিগুণ। তাই ডাবের প্রতি আসক্ত অনেকেই। দুই ২৪ পরগনাতেই একসময় নারকেল গাছ ছিল প্রচুর পরিমাণে। গ্রামীণ এলাকায় নতুন নতুন রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি তৈরি হওয়ায় ছোট-বড় অনেক গাছ কাটা পড়ছে। নারকেল গাছের সংখ্যাও কমছে। পুজোর সময়ে নারকেলের চাহিদার কারণে অনেকে কচি ডাব পাড়েন না। আবহাওয়ার পরিবর্তনে, পোকা লাগছে। ডাবের খোলার উপরে দাগ হয়ে ফেটে যাচ্ছে। জলও কমছে ডাবে।
কুলপির বাসিন্দা পবন হালদার বলেন, ‘‘আমার পুকুর পাড়ে প্রায় ২০-২৫টি নারকেল গাছ রয়েছে। দশ থেকে কুড়ি বছর বয়সি ওই গাছে ফলন একেবারে কমে গিয়েছে। আগে এক একটা কাঁদিতে ৫০-৬০টা করে ডাব হত। এখন ১৫-২০টার বেশি ডাব হচ্ছে না। আকারেও ছোট হওয়ায় জলও অনেক কম। সব গাছেই ডাবের গায়ে দাগ থাকছে। এর ফলে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী ডাব মিলছে না।’’
ওই এলাকার ডাবের পাইকারি বিক্রেতাদের কথায়, গাছ মালিকদের কাছে থেকে ২০-২২ টাকায় ডাব কেনা হয়। পাইকারি বাজারে দাম ওঠে ৩০-৩২ টাকা প্রতি ডাব। বিভিন্ন বাজারে তা যায়। খুচরো বিক্রেতারা নিয়ে যাওয়ার ও লাভের খরচ ধরে বিক্রি করেন। বিপুল সরকার নামে এক ডাব ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ডাবের ফলন আগের তুলনায় অনেক কমেছে। পাশাপাশি, পুজোর মরসুমে ছোট ডাবের চাহিদা বাড়ে ঘটে বসানোর জন্য। লক্ষ্মী, সরস্বতী পুজোয় ওই ছোট ডাবের দাম ৪০-৪৫ টাকা হয়ে যায়।’’
কুলপির বাসিন্দা মলয় দাস বলেন, ‘‘ক’দিন আগেও ডাবের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে ছিল। এখন একটা ভাল ডাব ৬০-৭০ টাকায় কিনতে হয়।’’ কুলপি ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা অমিতেশ রায় বলেন, ‘‘ইদানীং নারকেল গাছের পরিচর্যা কম করে লোকজন। ভাল ডাব পেতে বছরে এক-দু’বার গাছ ঝাড়িয়ে নিতে হয়। গাছের গোড়া থেকে দু’তিন হাত দূরে ৫-৬ ইঞ্চি গর্ত করে গোবর সারের সঙ্গে জৈব সার মিশিয়ে ব্যবহার করা দরকার। কীটনাশক ব্যবহার করলে পোকা লাগা থেকেও রেহাই পাওয়া যায়।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)