E-Paper

ইট-বালিতে রাস্তা দখল, মৃত্যু চলছেই

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ছ’মাসে দুর্ঘটনায় অন্তত দশ-বারো জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত মিনাখাঁর বাসিন্দারা।

নির্মল বসু 

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৫ ০৯:০২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রাস্তার বড় অংশ দখল করে রাখা থাকছে ইমারতি সামগ্রী। তার জেরেই রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। যাচ্ছে প্রাণও। বাসন্তী হাইওয়ে এবং ধামাখালি রোডের এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ বসিরহাট মহকুমার মিনাখাঁ, ন্যাজাট, সন্দেশখালির বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে বাসন্তী হাইওয়ে এবং ধামাখালি রোড-সহ ন্যাজাট, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ থানা এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশে অবৈধ ভাবে ইট, বালি, পাথরের মতো বিভিন্ন ধরনের ইমারতি দ্রব্য মজুত করে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীদের অনেকে। এর ফলে বাসন্তী হাইওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। দ্রুতগামী গাড়ির ধাক্কায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। গাড়ির যাত্রী এবং পথচারীদের মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। স্থানীয় মানুষদের ক্ষোভ, পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় সব কিছু হলেও হেলদোল নেই কারও। গত মঙ্গলবারই মিনাখাঁর নেপাল মোড়ের কাছে বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় নাসিরউদ্দিন মোল্লা এবং জুলফিকার মোল্লা নামে দুই বাসিন্দার।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ছ’মাসে দুর্ঘটনায় অন্তত দশ-বারো জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত মিনাখাঁর বাসিন্দারা। কাজি আব্দুল রহমান, রেশমা খাতুন, পলাশ দফাদার বললেন, ‘‘রাস্তার পাশে ফেলে রাখা ইট, পাথর ও বালির ফেলে রাখার কারণেই প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চিন্তা হয়।’’ কাকলি নস্কর, সোমা মণ্ডলদের ক্ষোভ, ‘‘সব দেখেও প্রশাসন কিছু করছে না।’’ ট্রাক চালক ভূপিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘ওই রাস্তার দু’পাশ জুড়ে ইট, বালি,পাথর পড়ে থাকায় অন্য গাড়িকে পাশ দিতে গিয়ে চাকা পিছলে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে।’’

এলাকাবাসীর অনেকের দাবি, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের মদতেই ব্যবসায়ীরা রাস্তার পাশ দখল করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা পরিতোষ বাছাড়, মন্টু হালদার, অহাব গাজিদের ক্ষোভ, ‘‘সমস্যার কথা বহু বার ব্যবসায়ী এবং পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি।’’ তাঁরা জানান, কলকাতা-বাসন্তী হাইওয়ে এবং ধামাখালি রোড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। সুন্দরবন যেতেও রাস্তাটি ব্যাবহার করতে হয় পর্যটকদের। তাই সেটি থেকে অবৈধ ইমারতি দ্রব্য দ্রুত সরানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।

মিনাখাঁর বিধায়ক উষারানি মণ্ডলও সমস্যার কথা মেনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাসন্তী রোডের পাশে লোকালয়, হাটবাজার, থানা, ব্লক, পঞ্চায়েত ও হাসপাতাল সহ বিভিন্ন দফতর রয়েছে। সে কারণে রাস্তার উপর ইমারতি দ্রব্য না রেখে ফাঁকা রাখার প্রয়োজন। ওই রাস্তায় স্পিড ব্রেকার, গার্ডরেল থাকাও জরুরি। পুলিশকে বলব এ বিষয়ে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।’’

বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, ‘‘রাস্তার দু’পাশ দখলমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে বলা হবে। তা সত্ত্বেও ইমারতি দ্রব্য না সরানো হলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Road Accident

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy