Advertisement
E-Paper

ঘোষণা নেই রেলস্টেশনে, সতর্কতা নেই যাত্রীদেরও

শুধু একটি লোকাল ট্রেনের ঘটনা নয়, শিয়ালদহ মেন লাইনের প্রায় সব ট্রেনেই এখন এমন ভাবেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস-আতঙ্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৮:০৪
এ ভাবেই ঠাসাঠাসি করে ট্রেনে যাতায়াত করছেন নিত্যযাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই ঠাসাঠাসি করে ট্রেনে যাতায়াত করছেন নিত্যযাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

আর পাঁচজন যাত্রীর মতো তিনিও বসে ছিলেন নিজের আসনে। মাঝবয়সি ব্যক্তিটি বারকয়েক কাশতেই মুহূর্তে বদলে গেল কামরার দৃশ্য। পলকে ফাঁকা হয়ে গেল চারপাশ। ওই আসনে তার পাশে বসে থাকা দু’জন উঠে গেলেন। বাকিদের এক জন ব্যাগ থেকে মাস্ক বের করে পরে নিলেন। অন্য দুই যুবক পকেট থেকে রুমাল বের করে তা দিয়েই ঢেকে ফেললেন নাক-মুখ। দুপুর ১টা৪০-এর নৈহাটি লোকালের ঘটনা।

শুধু একটি লোকাল ট্রেনের ঘটনা নয়, শিয়ালদহ মেন লাইনের প্রায় সব ট্রেনেই এখন এমন ভাবেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস-আতঙ্ক। কোনও কোনও যাত্রী মাস্ক ব্যবহার করছেন। কিন্তু বেশিরভাগ যাত্রীই তা ব্যবহার করছেন না।

ট্রেনের যাত্রীরা কী ধরনের সাবধানতা মেনে চলবেন, বা কী করা উচিত, তা নিয়ে স্টেশনগুলিতে কোনও প্রচার নেই। স্টেশনের পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে ট্রেনের আসা-যাওয়ার ঘোষণা যেমন হয়, তেমনই হচ্ছে। তার বাইরে করোনা নিয়ে যাত্রীদের জন্য কোনও ঘোষণা নেই। তবে সোমবার থেকে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কমেছে বলেই দাবি নিত্য যাত্রীদের। যদিও এ দিন সকালের দিকে শিয়ালদহগামী সব ট্রেনেই ঠাসাঠাসি ভিড় চোখে পড়েছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, অনেক সময় আক্রান্তেরা নিজেরাও বুঝতে পারেন না। বিশেষ করে প্রথম দিকে। তার ফলে কেউ মামুলি সর্দি-কাশিতে ভুগলেও ট্রেনে যাতায়াতের সময় তারা যেন বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেন। সর্দি-কাশি এবং সঙ্গে জ্বর থাকলে ট্রেন বা অন্য কোনও গণপরিবহন ব্যবহার না করাই ভাল। নেহাতই করতে হলে তাঁরা যেন অবশ্যই এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করেন।

একই সঙ্গে যাঁরা ট্রেনে যাতায়াত করছেন, তাঁরা কর্মস্থলে পৌঁছেই যেন ভাল করে হাত ধুয়ে কাজে বসেন। ট্রেন বা অন্যান্য গণপরিবহনে বাড়ি ফিরে স্নান করতেই হবে। এমনকি বাইরের জামাকাপড়ও ধুয়ে ফেলতে হবে। এই সতর্কবার্তা সম্পর্কে যাত্রীরা নানা রকম প্রশ্ন তুলছেন।

কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা সুপ্রীতি হালদার বেলঘরিয়ার একটি অফিসে চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘‘কে আক্রান্ত কী করে বুঝব। আর তিনি যদি সচেতন না হন, তা হলে তো বাকি যাত্রীদের বিপদ। সে ক্ষেত্রে সব যাত্রীদেরই মুখোস ব্যবহারের নির্দেশ জারি করা উচিত।’’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মতো অন্যান্য সরকারি অফিস বন্ধ করার বিষয়ে সওয়াল করেছেন তিনি।

এ দিন নৈহাটি লোকালে কলকাতার শরৎ বসু রোডে চিকিৎসকের কাছে আসছিলেন শ্যামনগরের বাসিন্দা, বৃদ্ধ রামকমল শর্মা। তিনি মাস্ক পরেছিলেন। কিন্তু, সে মাস্ক নেহাতই মামুলি। তিনি বলেন, ‘‘অফিস-কাছারি বন্ধ হলে ট্রেনে যাত্রী কমবে। তা হলে নেহাতই প্রয়োজন ছাড়া কেউ ট্রেনে চড়বে না।’’

এ দিন সব ট্রেনেই দেখা গেল অধিকাংশ যাত্রীই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। আর যাঁরা করছেন তাদের বেশিরভাগেরই সাধারণ মাস্ক। কেউ কেউ অবশ্য এন ৯৫ মাস্ক পরছেন। শিয়ালদহ মেন লাইনে সারা দিনে কয়েক লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। সরকার জমায়েত বন্ধ করেছে। কিন্তু লোকাল ট্রেন এবং শিয়ালদহ-সহ অন্যান্য স্টেশনে প্রচুর যাত্রীর জমায়েত হচ্ছে। তার সুরাহা কীভাবে হবে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা।

Coronavirus Indian Railway Awareness
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy