Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Corona

দু’হাজার টাকায় মিলছে নেগেটিভ কোভিড রিপোর্ট

এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন পেট্রাপোল বন্দরে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মানুষজন। বন্দর এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

  সীমান্ত মৈত্র
পেট্রাপোল শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২১ ০৭:১৩
Share: Save:

করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট চাই? দু’হাজার খরচ করলেই মিলছে ভুয়ো রিপোর্ট। যা দেখিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে পৌঁছে যেতে সমস্যা হচ্ছে না।

ভুয়ো কোভিড রিপোর্ট তৈরির একটি চক্র সম্প্রতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে ভারত-বাংলাদেশের পেট্রাপোল- বেনাপোল সীমান্তে। সম্প্রতি পেট্রাপোল অভিবাসন দফতরের কর্তারা ওই চক্রের সন্ধান পেয়েছেন। কয়েকটি ‘নেগেটিভ’ লেখা ভুয়ো রিপোর্টও তাঁরা বাজেয়াপ্ত করেছেন। অভিবাসন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চক্রটি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের নাম লেখা ভুয়ো রিপোর্ট তৈরি করে। ফটোশপে তৈরি করা সেই রিপোর্ট দেখে এক নজরে নকল বলে বোঝা অসম্ভব।

এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন পেট্রাপোল বন্দরে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মানুষজন। বন্দর এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকছে। কেবল বন্দর এলাকায় নয়, দু’দেশের মানুষের মাধ্যমেও দেশের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়।

পেট্রাপোল অভিবাসন দফতরের মুখ্য অভিবাসন অফিসার তরুণকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভুয়ো করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরি চক্রের খোঁজ মিলেছে। কয়েকটি ভুয়ো রিপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তে জানতে পেরেছি, একটি ভুয়ো রিপোর্ট কিনতে ২ হাজার খরচ হয়। পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। পেট্রাপোলে আরও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’

বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে শুরু করেছে। সোমবার থেকে দেশব্যাপী সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে সে দেশের সরকার। এ দেশেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এই পরিস্থিতিতে ভুয়ো করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরাও।

কেন ভুয়ো করোনা রিপোর্টের প্রয়োজন হচ্ছে?

অভিবাসন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দেশ থেকে বাংলাদেশে বা বাংলাদেশ থেকে এ দেশে যাতায়াত করতে হলে এখন যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে থাকাটা বাধ্যতামূলক। যাত্রীদের পাসপোর্ট-ভিসার সঙ্গেই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট রাখতে হচ্ছে। সরকারি আধিকারিকেরা সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে যাতায়াতের অনুমতি দিচ্ছেন। রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে যাতায়াত করা যাবে না মনে করেই লোকজন চড়া দামে ভুয়ো রিপোর্ট তৈরি করছে।

অভিবাসন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা যাত্রীদের কাছে করোনার আরটিপিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ কিনা দেখছেন। কিউআর কোড দেখছেন। মূলত কিউআর কোড দেখেই নকল রিপোর্ট সনাক্ত করা গিয়েছে।

অভিবাসন দফতরের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দেশ থেকে যাঁরা বাংলাদেশে যাচ্ছেন, তাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ভুয়ো কিনা তা খতিয়ে দেখা যদিও বা সম্ভব, বাংলাদেশ থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা বাস্তবে অসম্ভব। কারণ, বাংলাদেশের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার মতো পরিকাঠামো নেই। আর তা সময়সাপেক্ষ বিষয়। সেই সুযোগটাই নিচ্ছে চক্রের সদস্যেরা। পেট্রাপোলের পাশাপাশি বেনাপোলেও ওই চক্র সক্রিয় বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও এ বিষয়ে অভিবাসন দফতর কথা বলেছে। যাত্রীদের কেউ যদি পজ়িটিভ রিপোর্ট নিয়ে সীমান্তে পৌঁছে যান, তা হলে দু’দেশের প্রতিনিধিরা তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে হাসপাতালে পাঠানোর করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona coronavirus COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE