Advertisement
০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
Diamond Harbour

Covid19: ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলায়  করোনা পজ়িটিভের সংখ্যা কমছে

ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ক’দিন আগে পর্যন্ত শ’দেড়েক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছিলেন।

ভ্রাম্যমাণ: কাকদ্বীপে চলছে করোনা পরীক্ষা। ছবি: সমরেশ মণ্ডল

ভ্রাম্যমাণ: কাকদ্বীপে চলছে করোনা পরীক্ষা। ছবি: সমরেশ মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার  শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৯
Share: Save:

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলায় করোনা সংক্রমণের হার কমছে বলে জানাল স্বাস্থ্য দফতর। দিন কয়েক আগে পর্যন্ত পজ়িটিভের সংখ্যা ১২০০ জন থেকে নেমে ৮৩৬ হয়েছে। এর মধ্যেই আবার শুরু হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের টিকাকরণ ও বুস্টার ডোজ়।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবার দুই মহকুমা এলাকায় বর্তমানে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লক্ষ। এদের মধ্যে বর্তমানে পজ়িটিভের সংখ্যা ৮৩৬ জন। অধিকাংশের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চলছে। আগে প্রতিদিন করোনা পরীক্ষায় ৬০-৬৫ জন পজ়িটিভ হচ্ছিলেন। এখন সখ্যাটা কমে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমা কোভিড হাসপাতালে কিছু সংখ্যক ভর্তি রয়েছে।

ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ক’দিন আগে পর্যন্ত শ’দেড়েক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। বাকিদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা চলছে।

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ দুই মহকুমা এলাকায় ৪৩৫ জনের থাকার মতো ব্যবস্থা রয়েছে সেফ হোমে। যাঁদের বাড়িতে আলাদা থাকার ব্যবস্থা নেই, তাঁদের সেফ হোমে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন।

দুই মহকুমা এলাকায় ১০ জানুয়ারি ১৫-১৮ বছরের কিশোর-কিশোরীদের টিকাকরণের পাশাপাশি বুস্টার ডোজ় দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। বুস্টার ডোজ় নেওয়ার নিয়ম, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার ৯ মাস পরে তা নেওয়া যাবে। বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, ভোটের কাজে যাওয়া শিক্ষক, পুলিশকর্মীদের বুস্টার ডোজ় দেওয়া হচ্ছে। ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ষাট বছরের বেশিরাও বুস্টার ডোজ় পাবেন।

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলা সূত্রের খবর, টিকাকরণের জন্য ৯২২টি সেন্টার রয়েছে। সেখানে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতিদিন ২৫০ সেন্টারে ৩৫-৪০ হাজার করে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। ১৮ নীচে কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার। এদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ প্রথম ডোজ়ের ভ্যাকসিন পেয়েছে।

প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারি এবং সচেতনতা নিয়ে লাগাতার প্রচারের ফলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইতিমধ্যে ভিড় এড়াতে বিভিন্ন হাট-বাজার সপ্তাহে ১-২ দিন করে বন্ধ রাখা হচ্ছে। মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছেন। মাস্ক ব্যবহার বেড়েছে।

তবে কাকদ্বীপ এলাকায় কিছু পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। মানুষকে সচেতন করতে নিয়ম করে শহর জুড়ে পুলিশি টহলদারি চলছে। গ্রামীণ এলাকার মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও সচেতনতার অভাব এখনও দেখা যাচ্ছে।

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার এক আধিকারিক জানান, সংক্রমণের হার কিছুটা নিম্নগামী। নিয়মিত পরীক্ষায় কম সংখ্যক পজ়িটিভ ধরা পড়ছে।

অন্য দিকে, গঙ্গাসাগর মেলা শেষের পরে কাকদ্বীপ এলাকায় সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখতে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে ‘টেস্টিং অন হুইল’ পরিষেবা চালু হল।

কাকদ্বীপ ও নামখানা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ করোনা পরীক্ষার এই গাড়ি পৌঁছে যাবে। বুধবার কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েত এবং রামকৃষ্ণ পঞ্চায়েতে এই পরিষেবা চালু হয়েছে। একই ভাবে নামখানা ব্লকে শিবপুর মৌজা এবং দ্বারিকনগর মৌজায় টেস্টিং অন হুইল চালু হয়েছে।

এদিন কাকদ্বীপ ও নামখানা ব্লক মিলিয়ে ৫০০-র বেশি মানুষ কোভিড পরীক্ষা করান। কাকদ্বীপের বিডিও দীপ্তেন্দু সরকার বলেন, ‘‘আমরা প্রতিদিন ২০০-র বেশি কোভিড পরীক্ষা করাচ্ছি। আপাতত দু’টি পঞ্চায়েতে এই কাজ চলছে। আগামী দিনে আরও টেস্টিং ভ্যান বাড়ানো হবে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, সুন্দরবন পুলিশ জেলায় এখনও পর্যন্ত ছ’জন পুলিশ আধিকারিক কোভিড আক্রান্ত। কাকদ্বীপ মহকুমার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত।

এখনও অনেকের মুখে মাস্ক নেই, দূরত্ববিধি মানা হচ্ছে না কোথাও কোথাও। এদিন কাকদ্বীপ বাজারে মানুষজন ও দোকানদারদের সচেতন করতে রাস্তায় নামেন কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাকদ্বীপ থানার আইসি শিবু ঘোষ। প্রসেনজিৎ জানান আগের থেকে মানুষ অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। আগামী দিনে একশো শতাংশ মানুষ যাতে মাস্ক পরেন, সে জন্য লাগাতার অভিযান চালানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE