পরিবেশের জন্য: গোসাবার রাঙাবেলিয়ায় প্লাস্টিক সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র।
প্লাস্টিক বন্ধে এখনই কঠোর হতে চাইছে না প্রশাসন। ইয়াস পরবর্তী সময়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় দুর্গতদের ত্রাণ দিতে আসছে বহু সংস্থা। ত্রাণের সঙ্গেই বাদাবনে ঢুকছে প্রচুর প্লাস্টিক। যা বাদাবনের বাস্তুতন্ত্রে বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন পরিবেবশবিদরা। প্লাস্টিক বন্ধে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। তবে প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, প্লাস্টিক নিষিদ্ধ হলে দুর্গতদের ত্রাণ পেতে সমস্যা হতে পারে। তাই আপাতত প্লাস্টিক নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকায় জমে থাকা প্লাস্টিক কী ভাবে সংগ্রহ করে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা যায়, সেই পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে।
ইয়াসে নদী বাঁধ ভেঙে জলে ভাসে দুই ২৪ পরগনার উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা। গৃহহীন হয়ে পড়েন অনেকেই। ঝড়ের পর থেকে দুর্গতদের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন ব্লকগুলিতে আসছেন বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। সাধারণ মানুষের হাতে শুকনো খাবার, চাল, ডাল তুলে দিচ্ছেন তাঁরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়ে এই খাবার দেওয়া হচ্ছে। প্লাস্টিকের বোতলে জলও বিলি করা হচ্ছে। সরকারের তরফেও ঝড়ের পর প্রচুর প্লাস্টিকের জলের পাউচ দেওয়া হয়েছিল। সেগুলিও ছড়িয়ে রয়েছে নানা এলাকায়। ত্রাণের সঙ্গে সুন্দরবনে ঢুকে পড়া এই বিপুল প্লাস্টিক নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। গোসাবা ব্লক প্রশাসনের তরফে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের প্লাস্টিক সংগ্রহের কাজে লাগানো হয়েছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার থেকে গোসাবার ন’টি দ্বীপের চোদ্দটি পঞ্চায়েত এলাকাতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। নদীর চরে ঘুরে ঘুরে প্লাস্টিকের বোতল, ক্যারিব্যাগ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হচ্ছে। যাঁরা ত্রাণ দিতে আসছেন, তাঁদের সতর্ক করতে গদখালি খেয়াঘাটে মাইকিংও শুরু হয়েছে। প্লাস্টিকের পরিবর্তে চট বা কাপড়ের ব্যাগে ত্রাণ সামগ্রী আনতে অনুরোধ করা হচ্ছে। গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, “যাঁরা ত্রাণ নিয়ে আসছেন, তাঁদের প্লাস্টিক বর্জনের বার্তা দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই সে কথা শুনছেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই শুনছেন না। ব্লক প্রশাসনের তরফে আমরাই নদীর পাড় ও আশপাশের এলাকা থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছি।”
উত্তর ২৪ পরগনার উপকূল এলাকার ব্লকগুলিতে অবশ্য জমা প্লাস্টিক সংগ্রহে প্রশাসনের কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। প্লাস্টিক নিয়ে প্রচারটুকুও নেই অনেক জায়গাতেই। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের ইয়াস-বিধ্বস্ত মামুদপুর, কুমিরমারি, রূপমারি এলাকায় এখনও প্রতিদিন বহু সংস্থা আসছে ত্রাণ দিতে। রোজই জমছে প্লাস্টিক। হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শ্বাশতপ্রকাশ লাহিড়ী বলেন, “আমরা ভাবছি এবার সচেতনতামূলক প্রচার করা হবে। যদি তাতে একটু হলেও কেউ সচেতন হন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy