ছবি: সংগৃহীত।
লকডাউনের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল দুই ভাইয়ের। গুরুতর জখম আরও এক জন। শুক্রবার রাতে, উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার ঘটনা। শনিবার ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্ব। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় পুলিশি পিকেট বসেছে।
এ দিন বারাসত জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনায় বিধাননগর কমিশনারেটের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে তাঁর সার্ভিস পিস্তলটি। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই এই ঘটনা।’’
স্থানীয় এবং পুলিশ ও সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আমডাঙা থানার তেঁতুলিয়ার ঠাকুরতলায় বসে চার যুবক গল্প করছিলেন। সেখানে সন্তোষ পাত্র নামে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী মোটরবাইকে এসে তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়়তে থাকেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অরূপ মণ্ডল (৩০) ও সুমন্ত মণ্ডল (২৮) নামে দুই ভাইয়ের। পায়ে গুলি লাগে অরূপ মণ্ডল নামে আরও এক যুবকের। এর পরে চম্পট দেন সন্তোষ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আহতকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যায়।
শনিবার ব্যারাকপুর লোকসভার সাংসদ অর্জুন সিংহ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ তাঁকে প্রথমে মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ বিজেপি-র। পরে অবশ্য তিনি মৃত দুই ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং ৫ লক্ষ টাকা করে সাহায্যের ঘোষণা করেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে অর্জুন বলেন, ‘‘তৃণমূল চক্রান্ত করে আমাদের দুই কর্মীকে পুলিশের পিস্তল থেকে গুলি চালিয়ে খুন করেছে।’’ ওই অভিযোগ উড়়িয়ে আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান বলেন, ‘‘হাস্যকর অভিযোগ। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। ব্যক্তিগত বিবাদের জেরেই এই ঘটনা।’’
এ দিন ঘটনাস্থলে দেখা যায়, দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা পাড়া। কান্নায় ভেঙে পড়়েছেন দুই ভাইয়ের স্ত্রীয়েরা। বাবা সুব্রত মণ্ডল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘আমাদের দেখার জন্য আর কেউ রইল না। দোষীর শাস্তি চাই।’’
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরে বিধাননগর কমিশনারেটে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন সন্তোষ। জেরায় তিনি জানান, সুমন্ত তাঁর স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন বলেই রাগে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। তবে বাকিদের গুলি করার উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy